সম্প্রতি পুরসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রকাশ্যে আসে বিবাদ। শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও দলের সভাপতি সুব্রত বক্সির স্বাক্ষরিত একটি প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়েছে।
পুরসভা নির্বাচন ২০২২ (Municipal elections 2022) এর প্রার্থী তালিকা (Cadidate List) নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) দলীয় কোন্দল যখন তুঙ্গে। এই অবস্থায় নুতন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সম্পর্কের ফাটল নিয়ে। কারণ সূত্রের খবর তৃণমূল কংগ্রেস, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাকের (I-PAC) সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করতে চলছে। যদিও আই-প্যাক এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। বলেছে, তাদের সংস্থা যেমন তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করছিল এখনও ঠিক সেইভাবেই কাজ করে যাবে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা এই বিষয়ে এখনও মুখ খুলতে রাজি নয়। তবে দলীয় সূত্রের খবর তৃণমূলও তলেতলে আই-প্যাকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করার আলোচনা শুরু করেছে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আচমকাই তৃণমূল কংগ্রেসের আসন সংখ্যা কমে গিয়েছিল। সেইস্থান দখল করেছিল বিজেপি। তারপরই তড়িঘড়ি দলের ক্ষত মেরামতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারস্থ হন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে। তাঁর সংস্থা আই-প্যাকের সঙ্গে চুক্তি করেন। তারপর সব বাধা কাটিয়ে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরাট সাফল্য পায় তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরই প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরে জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখার চেষ্টা শুরু করেছিল তৃণমূল। তাতেই রীতিতমত সফল ঘাসফুল। গোয়া, মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্য পাবে বলেও আশা করেছেন দলের নেতারা।
কিন্তু সম্প্রতি পুরসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রকাশ্যে আসে বিবাদ। শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও দলের সভাপতি সুব্রত বক্সির স্বাক্ষরিত একটি প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়েছে। তারপরই টিকিট না পাওয়া ক্ষুব্ধ দলীয় প্রার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিমানবন্দরে এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সি যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছেন সেইটাই চূড়ান্ত। তিনি আরও বলেন সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়। তবে দলে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে আই-প্যাক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন কোনও বিষয় তিনি মন্তব্য করলবেন না। অন্যদিকে অনেকটা একই সুরে কথা বলেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ও। তিনি বলেন এই বিষয়ে তিনি মন্তব্য করবেন না। তবে তিনি জানিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে আই-প্যাকের সম্পর্ক রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একটি তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে কারও নাম বা স্বাক্ষর নেই। সেই তালিকায় থাকা বহু নামই বাতিল হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের স্বাক্ষরিত প্রার্থী তালিকা থেকে। এই নিয়ে বিবাদ শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতার অভিযোগ, আই-প্যাকের কারণেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ আগে যে তালিকা আপলোড করা হয়েছিল সেখানে দলনেত্রীর অনুমোদন ছিল না।
অন্যদিকে আই-প্যাক সূত্রের, তৃণমূলের বিক্ষোভে তাদের কোনও হাত নেই। তাদের কাজ কাউন্সিলরদের কার্যক্ষমতা মূল্যায়ন করা। সেটা তারা করেছে আর প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে কারা মনোনয়ন পাবে সেটা একান্তই দলের বিষয়। পাশাপাশি স্বাক্ষরবিহীন প্রার্থী তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার যে অভিযোগ উঠেছে এই সংস্থার বিরুদ্ধে, তাও তারা অস্বীকার করেছে।
সবমিলিয়ে এখনও গোটা বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে বলেছেন, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের পুরনো সৈনিকদের ওপরই আস্থা রেখেছিলেন। তিনি আই-প্যাকের দেওয়া বেশ কিছু পরামর্শ গ্রহণ করেননি। তাঁর কথায় দলের নেতা ও দলনেত্রী আই-প্যাকের থেকে তৃণমূল ও বাংলার মাটিকে অনেকটাই ভালোভাবে বোঝেন। তাই কলকাতা পুরসভায় নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
খালি চিপসের প্যাটেক দিয়ে শাড়ি, তরুণীর উদ্ভট খেয়াল নজর কাড়ল নেটিজেনদের
'জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা নিন', লোকসভায় দাঁড়িয়ে ওয়াইসির কাছে আর্জি অমিত শাহর
কাশ্মীরকে প্যালেস্টাইনের সঙ্গে তুলনা রাশিয়ান তথ্যচিত্রে, প্রতিবেদন খারিজ করল রাশিয়ান দূতাবাস