আরবি মাসের প্রথম মাস মহরম। গোটা দেশের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই মাস অত্যন্ত শোকের মাস। বৃহস্পতিবার মহরম মাসের প্রথম দিন, এখন থেকেই এলাকার প্রতিটি ইমাম বাড়াতে মজলিস শুরু হয়ে যায়।
মুর্শিদাবাদের বুকে মহরমকে ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে বহু আবেগ। প্রতিবছর সেখানে ধুমধাম করে মহরম পালন করা হয়। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এখন আর সেই জৌলুস দেখতে পাওয়া যায় না। খুবই সাধারণভাবে এবার এই দিনটি পালন করা হচ্ছে। তবে ধর্মীয় রীতি মেনে বৃহস্পতিবার থেকেই নবাব নগরী মুর্শিদাবাদে শুরু হয়েছে মহরমের মজলিস।
মূল অনুষ্ঠানের দিন মহরমের তাজিয়া করোনাবিধি মেনে কারবালা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছে। তার জন্য মন খারাপ অনেকেরই। কিন্তু, সবার স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তা মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই বলে জানিয়েছেন নবাব সৈয়দ বাক্কার মির্জা। তিনি বলেন, "ইতিমধ্যে প্রশাসনিকভাবে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মহরমের সব অনুষ্ঠান হবে, তাজিয়াও বের হবে, তবে ওই তাজিয়া ইমাম বাড়া থেকে বেরিয়ে দক্ষিণ দরজা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে। তারপর ফিরিয়ে আনতে হবে ইমাম বাড়াতে।" সেক্ষেত্রেও কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে বলে জানান নবাব সাহেব।
আরবি মাসের প্রথম মাস মহরম। গোটা দেশের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই মাস অত্যন্ত শোকের মাস। বৃহস্পতিবার মহরম মাসের প্রথম দিন, এখন থেকেই এলাকার প্রতিটি ইমাম বাড়াতে মজলিস শুরু হয়ে যায়। ওই মজলিসে শহিদ ইমাম হোসেনের জীবন দর্শন নিয়ে আলোচনা, কোরান পাঠ করা হয়। সন্ধ্যা নামলেই জ্বালানো হয় মোমবাতি। মহিলারা সোনার গয়না খুলে রেখে শোক আর অনুতাপের সঙ্গে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন- মোবাইলের এই ভুল অনবরত করছেন, অজান্তেই শরীরে দানা বাঁধছে প্রাণঘাতী রোগ
প্রায় ২ মাস তাঁরা খাবারের মধ্যে দিয়েও শোক পালন করে থাকেন। মূলত শাক-সবজি খেয়েই মহরম মাসের প্রথম দিন থেকে ২ মাস ৮ দিন তাঁরা শোক পালন করেন। এই সময় যেমন কোনও আনন্দ উৎসবে তাঁরা যোগ দেন না, তেমনই সব রং বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কালো পোশাক পরেন। মহরম মাসের ২০ তারিখে হাজারদুয়ারির সামনের ইমাম বাড়া থেকে মূল তাজিয়া বের হওয়ার রীতি চলে আসছে নবাব ফিরাদুন জার আমল অর্থাৎ ১৮৪৭ সাল থেকে। কিন্তু, করোনার কারণে এবছর তাজিয়া কারবালা পর্যন্ত যাবে না। বসবে না কোনও মেলাও।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা মনু শেখ, দেলাবর হোসেনরা বলেন, "করোনার কারণে অনুষ্ঠান ছোট করে পালন করা হচ্ছে। সেটা নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, ধর্মীয় রীতি মেনে তাজিয়া কারবালা পর্যন্ত যাবে না, এটা খুবই কষ্টের।"