কোনও ভাষাই অচ্ছুত নয়। কিন্তু হাজারো ভাষার ভিড়ে যেন মাতৃভাষা হারিয়ে না যায়! বিশ্বভারতীতে বাংলা ভাষাকে প্রধান্য দিয়ে চলবে পঠনপাঠন। তেমনটাই তো চেয়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু সেই বিশ্বভারতীর উপাসনায় যে একদিন 'গুরুদেবের গান'ই যে হিন্দিতে গাওয়া হবে, তা কে জানত! বিতর্ক তুঙ্গে শান্তিনিকেতনে।
আরও পড়ুন: শিবরাত্রির পুজো দিতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, তারকেশ্বরে মৃত্যু ৩ যুবকের
যাঁরা পড়াশোনা করেন এবং যাঁরা পড়ান, সকলকেই সপ্তাহে একদিন অংশ নিতে হয় উপাসনায়। বিশ্বভারতীতে সাপ্তাহিক উপাসনা হয় বুধবার। আর এই উপসনাকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক ঝড় উঠেছে শান্তিনিকেতনে। কারণ, বাংলায় নয়, হিন্দিতে রবীন্দ্রনাথের গান গেয়েছেন এক অধ্যাপিকা! আশ্রমিকরা প্রশ্ন তুলেছে, মূল গান দুটি রবীন্দ্রনাথেরই লেখা। কিন্তু তিনি তো আর গানগুলি অন্য ভাষায় অনুবাদ করে যাননি! তাহলে কেন ভাষা বদলে দেওয়া হল? রীতিমাফিক এই সপ্তাহের বুধবারও উপাসনার আসর বসেছিল বিশ্বভারতীতে। আচার্যের দায়িত্বে ছিলেন হিন্দি বিভাগের অধ্যাপিক মঞ্জু রানি সিং। জানা গিয়েছে, বাংলাতে তিনি ততটা সড়গড় নন। তাই হিন্দিতে নিজের বক্তব্য পেশ করেন ওই অধ্যাপিকা। শুধু তাই নয়, বক্তব্য পেশ করার পর হিন্দিতে দুটি রবীন্দ্রসঙ্গীতও পরিবেশন করেন তিনি। আর তাতেই শোরগোল পড়েছে কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে।
আরও পড়ুন: টাকি-র মাউন্ট জিয়ন স্কুলে ভাষা দিবস পালন, গান গেয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা
কী বলছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী? বিষয়টি নিয়ে যেভাবে জলঘোলা হচ্ছে, তাতে রীতিমতো ক্ষুদ্ধ তিনি। উপাচার্যের বক্তব্য,'উপাসনায় হিন্দিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া নিয়ে গেল গেল বর উঠেছে। কিন্তু কেউ বলছে না, ১৯১৫ সালে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। তখন হিন্দিতেই পাঠ করেছিলেন তিনি।' উপাচার্যের বক্তব্যে কোনও ভুল নেই। ১৯১৫ সালে ৬ মার্চ রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করতে গান্ধীজী এসেছিলেন শান্তিনিকেতনে। ইতিহাস তার সাক্ষী। কিন্তু তখন কি বিশ্বভারতীর উপসনায় হিন্দিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া হয়েছিল? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।