'অজানা জ্বরে' আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও একজন। স্ক্রাব টাইফাসের আতঙ্ক এবার জলপাইগুড়িতে। তবে ডেথ সার্টিফিকেটে স্ক্রাব টাইফাসের উল্লেখ নেই বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার।
মৃতের নাম প্রদীপ দাম। বাড়ি, জলপাইগুড়ির খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্রহ্মতল পাড়া এলাকায়। গত ১৫ ডিসেম্বর পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে ডুয়ার্সের বেড়াতে গিয়েছিলেন প্রদীপ। পরিবারে লোকেদের দাবি, বাড়ি ফিরে তিনি খেয়াল করেন, বাঁ পায়ের হাঁটুর উপরের অংশটি ফুলে গিয়েছে, অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। উপসর্গ দেখা দেয় প্রদীপ ভাই দোলনের বাঁ পায়েও। পরিবারের লোকেরার আর দেরি করেনি। দু'জনকে ভর্তি করা হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরিবারের লোকের জানিয়েছেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না প্রদীপ ও দোলন। চিকিৎসকদের পরামর্শেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁদের। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি, বরং রোগীদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। এতটাই অবনতি হয় যে, প্রদীপ ও দোলনকে আইসিইউসিতে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসকেরা। কিন্তু হাসপাতালে আইসিইউসি কোনও শয্যা খালি ছিল না। অন্তত তেমনই দাবি পরিবারের লোকেদের। বাধ্য হয়েই দুইভাইকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোম ভর্তি করা হয়। কিন্ত শেষরক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে মারা যান প্রদীপ দাম। আর তাঁর ভাই দোলনের শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বর্ষের শেষ উইকএন্ড, মেঘ কাটিয়ে জাঁকিয়ে শীত রাজ্য়ে
কিন্তু কীভাবে মারা গেলেন প্রদীপ? ডেথ সার্টিফিকেটে মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর-এর কথাই উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা। যদিও পরিবারের লোকেদের দাবি, ডুয়ার্সে বেড়াতে গিয়ে স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হন প্রদীপ। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর ভাই দোলনের শরীরেরও। আতঙ্কিত জলপাইগুড়ির ব্রহ্মতল পাড়া এলাকার বাসিন্দারা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য়, ডেথ সার্টিফিকিটে মৃত্যুর যে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, সেটাকেই সঠিক বলে ধরে নিতে হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে মারা গিয়েছেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুরে আবার এই মারণরোগে প্রাণ হারিয়েছে ১৪ মাসের এক শিশু।