কোন বাজি ‘সবুজ’, আইনত সিদ্ধ বাজির সাথে সাথে খোলা বাজারে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে আইনত ‘নিষিদ্ধ’ বাজিও। ক্রেতা, বিক্রেতা, অনেকে জানতেই পারছেন না আসল ক্ষতি।
কালীপুজো এবং দীপাবলিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাজি ফাটানোর অনুমতি দিয়েছে আদালত, তাও প্রধান শর্ত হল, সেই বাজি হতে হবে গ্রিন ক্র্যাকার বা সবুজ বাজি। এবার, বাজি বিক্রির এতদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রেতা বিক্রেতারা সবুজ বাজি চিনবেন কীভাবে? শহরের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, অধিকাংশ বিক্রেতারাই সবুজ বাজি চেনেন না। অর্থাৎ, তাঁদের মারফৎ যে ক্রেতাদের কাছে বাজি পৌঁছচ্ছে, তাঁদেরই রয়েছে সঠিক চেনাজানার অভাব।
সমীক্ষা বলছে, শহরের অন্তত ৪৪ শতাংশ মানুষ সমস্তরকম বাজি ফাটানোর পক্ষে রয়েছেন। তবে, আশার কথা হল, বাজি কিনতে আসা ক্রেতাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মানুষ সবুজ বাজি কেনার প্রতি আগ্রহী রয়েছেন। কিন্তু, বিক্রেতাদের অজ্ঞানতা এবং অনুমোদিত বাজির প্যাকেটের অস্বচ্ছতা কি পারবে পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে?
ভারতের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ঘোষণা করেছে যে, কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (নিরি)-র লোগো এবং কিউ আর কোড দেওয়া প্যাকেটের বাজিই সবুজ বাজি এবং সেগুলোই আইনত সিদ্ধ, অর্থাৎ পরিবেশ বান্ধব। কিন্তু, শহরের বাজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে যে, নিরি-র লোগো সম্পর্কে ক্রেতা বা বিক্রেতারা অনেকেই খুব কম জানেন অথবা একেবারে জানেনই না। অনেক বাজির প্যাকেটের কিউ আর কোড স্ক্যান করে কোনও তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে না, অনেক সময় বিভিন্ন আজগুবি তথ্যও বেরিয়ে আসছে বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা। অধিকাংশ ক্রেতাকেই দেখা গেছে ভিড় বাজারে বাজির প্যাকেট স্ক্যান না করেই কিনতে।
বাজি বিক্রেতাদের বক্তব্য, এতগুলি মাল তাঁদের পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনতে হয়, যে, সব বাজির প্যাকেট এক এক করে স্ক্যান করে দেখা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
নিরি-র লোগো ও কোডের অস্বচ্ছতা, মানুষের অসাবধানতার মধ্যেই বহুল পরিমাণ বাজির বিক্রিতে প্রমাদ গুনছেন পরিবেশ সচেতকরা। রাজ্য জুড়ে বাজি সম্পর্কে পুলিশি প্রচার সত্ত্বেও কেবলমাত্র প্রচার বা শাস্তি দিয়ে মানুষকে পরিবেশ সচেতন করা যাবে না বলেই মত তাঁদের। এবছর ‘সবুজ বাজি’ বিক্রির জন্য লোগো এবং কোডের নয়া নিয়ম চালু হলেও তা সমাজের একেবারে সাধারণ স্তরে কতটা পৌঁছচ্ছে, সে সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দিহান রয়েছেন চিকিৎসকরাও। যেহেতু, গত ২-৩ বছরে কোভিড মহামারীর কারণে বহু মানুষের শরীর-স্বাস্থ্য এখনও বেশ দুর্বল, সেই কারণে বাজি ‘গ্রিন ক্র্যাকার’ না হলে সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে মানুষই।
আরও পড়ুন-
রাতের অন্ধকারে ১৪৪ ধারায় খালি হয়ে গেল সল্টলেকের প্রতিবাদস্থল, টেনে হিঁচড়ে তুলে দেওয়া হল টেট উত্তীর্ণদের
২০৪ কোটির লেনদেন, নগদে উদ্ধার ৮ কোটি টাকা! দুঁদে পুলিশ অফিসারদের হন্যে করে অবশেষে গ্রেফতার হাওড়ার শৈলেশ
১০ লক্ষ চাকরি দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আগের ২কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কী হল? কটাক্ষ বিরোধীদের
টাকার দাম কমে লাফ দিয়ে বেড়ে গেল ডলারের দর, ভারতে আরও বাড়বে জিনিসপত্রের দাম?