'তোর মত ছেলে যেন প্রতি বাড়িতে জন্মায়', অসুস্থ মায়ের রিপোর্ট আনতে সাইকেলে ১৪০ কিমি পাড়ি

  • ১৪০ কিমি পাড়ি দিয়ে রিপোর্ট আনলেন ছেলে 
  •  প্রায় ১১ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়েছেন মিজানুর 
  • মায়ের জন্য দামোদর পার হয়েছিলেন বিদ্যাসাগর 
  • খবর জানতেই ওই যুবককে শুভেচ্ছা গ্রামবাসীর

অসুস্থ মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে নজির তৈরি করে লকডাউনে সাইকেল চালিয়েই ১৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রিপোর্ট আনলেন ছেলে। কথিত আছে অতীতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বর্ষার রাতে সুদীর্ঘ দামোদর নদী পার হয়েছিলেন। আর এবার লকডাউনের মধ্যে মায়ের চিকিৎসার জন্য সমাজে নজির তৈরি করে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ যাতায়াতের মাধ্যমে কেবলমাত্র সাইকেল চালিয়েই মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত জঙ্গীপুর মহকুমার অন্তর্গত  চাচণ্ড গ্রাম থেকে মালদহ মেডিকেল কলেজে পৌঁছে দুরারোগ্য রোগের রিপোর্ট নিয়ে আনলেন ছেলে। 

আরও পড়ুন, বিচারপতিদের মতবিরোধ, নারদ-মামলা গেল বৃহত্তর বেঞ্চে, আজই শুনানির সম্ভাবনা  

Latest Videos

 


শুক্রবার এ খবর চাউড় হতেই মিজানুর রহমান নামের ওই যুবককে শুভেচ্ছা জানাতে ও তাকে দেখতে তার গ্রামের বাড়িতে হাজির হয় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের কর্তারা পর্যন্ত। কেবলমাত্র কর্তব্য আর মায়ের প্রতি ভালোবাসায় এই দুঃসাধ্য কাজ কে বাস্তবে পরিণত করে দেখিয়েছে মুর্শিদাবাদের চাচণ্ডের বাসিন্দা ঐ যুবক মিজানুর রহমান। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা  ধরে সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে জান মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ মায়ের রিপোর্ট আনতে। রিপোর্ট নিয়ে ফের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা  ধরে সাইকেল চালিয়ে ফিরেও এসেছেন তিনি।রাজ্যে কার্যত লকডাউন চলতে থাকায় রাস্তায় যানবাহন নেই। ফলে এছাডা আর উপায় ছিল না মিজানুরের কাছে। পেশায় ঘুগনি বিক্রেতা ছাপোষা মিজানুর এই প্রায় অসম্ভব কাজটিই সম্ভব করে ফেলেছেন। আর তাঁর এই নজিরবিহীন কাণ্ডে প্রতিবেশীরা যেমন অবাক, তেমনি মিজানুরের প্রশংসায় পঞ্চমুখও। অনেকে আবার মিজানুরের পাশে থাকতে না পারায় দুঃখপ্রকাশও করেছেন।  

আরও পড়ুন, শুরু উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং, ঠিক কতটা শক্তি বাড়ালো যশ, জেনে নিন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের দূর্বাভাস  

 

 

জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে পিঠে চোট পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন মিজানুরের মা বয়স্কা ফাতেমা বিবি। স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শ মতো মালদহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করান। চিকিৎসক কিছু রিপোর্ট পরে দেওয়া হবে বলে ফাতেমা বিবিকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তারমধ্যেই কার্যত লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় মুশকিলে পড়েন তাঁরা। মিজানুর রহমান বলেন, লকডাউনে কোনও যানবাহন পাইনি, তাই ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগেই  সাইকেল নিয়েই বেরিয়ে পড়ি। রিপোর্ট সংগ্রহ করে ডাক্তারকে দেখিয়ে আবার সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরি। কার্যত মোট প্রায় ১১ ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার সাইকেল চালিয়েছেন মিজানুর। স্থানীয় বাসিন্দা কাসেম আলী, জিন্নাতুন নেসা বেগম একযোগে বলেন , আজকের দিনে এমন ছেলে সমাজের কাছে গর্ব ও আমাদের গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তোর মত ছেলেরা যেন প্রতি বাড়িতে জন্মায়"। পাশাপাশি মিজানুরের রত্নগর্ভা মা ফাতেমা বিবি বলেন,"ও মায়ের প্রতি যে কর্তব্য পালন করেছে তাতে কেবল আমি একা নই, এই গ্রামের সকল মায়েরাই গর্বিত"। যাকে নিয়ে এত কথা সেই মিজানুর বলেন," মায়ের জন্য এইটুকু করতে পারব না এটাতো আমার শুধু কর্তব্য নয় দায়িত্বও"।

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে মহা মিছিল শুভেন্দুর, দেখুন সরাসরি
'রোহিঙ্গারা মমতার ভোট ব্যাঙ্ক তাই তিনি বিএসএফকে জমি দিচ্ছে না' বিস্ফোরক মন্তব্য অগ্নিমিত্রার
Live: সাংবাদিক সম্মেলনে শমীক ভট্টাচার্য, কী বললেন তিনি, দেখুন সরাসরি
Narendra Modi Live: আদিবাসী গর্ব দিবস পালনে মোদী, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
বাজার থেকে ফেরার পথেই ঘটলো অঘটন! আতঙ্কের ছায়া শান্তিপুরে, দেখুন | Nadia News Today