রাজ্যে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের আগমন ঘটলে দেখা গিয়েছে, সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলের এলাকাগুলি। সেই তালিকায় রয়েছে সুন্দরবন। অন্যদিকে রয়েছে দামোদরের নিম্ন উপত্যকা।
বাংলার (West Bengal) আকাশে আর দুর্যোগের কোনও শেষ নেই। একের পর এক দুর্যোগ লেগেই রয়েছে। আর সেই দুর্যোগ বাংলায় শীত প্রবেশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে ডিসেম্বর (December) মাস শুরু হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত রাজ্যে জাঁকিয়ে শীত (Winter) পড়তে পারছে না। এরই মধ্যে আবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad)। সেই কারণে আগে ভাগেই বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। রাজ্যপুলিশের (West Bengal Police) তরফে উপকূলের জেলাগুলিতে বিশেষ নজরদারি দেওয়া হচ্ছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে সুন্দরবনে (Sundarban)। মাইকিং (Miking) চালানো হচ্ছে সব জায়গায়।
রাজ্যে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের আগমন ঘটলে দেখা গিয়েছে, সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলের এলাকাগুলি। সেই তালিকায় রয়েছে সুন্দরবন। অন্যদিকে রয়েছে দামোদরের নিম্ন উপত্যকা। আর ভারী বৃষ্টির জেরে ঘাটাল, দাসপুর-সহ একাধিক এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এদিকে আবার রাজ্যে এখন শীতের মরশুম। ফলে চাষের সময় চলছে। আর এই সময় বৃষ্টি হলে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই আগেভাগেই বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
সূত্রের খবর, সতর্কবার্তা পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৎস্য দফতরের তরফে কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ-সহ সাগর ও পাথরপ্রতিমার উপকূল এলাকায় মাইক করে সতর্কতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া আজই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে সব দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে আগাম বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত বৈঠক করা হবে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধের মধ্যে সুন্দরবনের উপকূল এলাকায় সিভিল ডিফেন্স ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ দল পৌঁছে যাবে। ইয়াসের পর সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ নদী ও সমুদ্রের বাঁধ ধাপে ধাপে মেরামত করা হলেও টানা বর্ষার মধ্যে একের পর এক কোটাল ও একের পর এক নিম্নচাপের জেরে প্রবল বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি ক্ষয় হয়েছে। আর এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওই এলাকাগুলির ফের ক্ষতি হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া নিচু এলাকাগুলির বাসিন্দাদের আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এলাকায় বেশ কয়েকটি সাইক্লোন সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এই মুহূর্তে নিম্নচাপটি আন্দামান সাগরে রয়েছে। সেটি খানিকটা শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। তারপর সেটি আন্দামান থেকে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যাবে। আর তারপর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। শুক্রবারের মধ্যে একটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময় অবশ্য এটি বঙ্গোপসাগরের মাঝে অবস্থান করবে। আর সেখান থেকে ধীরে ধীরে উপকূলের দিকে এগোতে থাকবে।
শুক্রবার থেকেই বেশ কয়েকটি জেলা, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়ায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সব থেকে বেশি বৃষ্টি হবে রবিবার। এরপর এই ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। কিন্তু সেখান থেকে এটি স্থলভাগে ঢুকে যাবে কিনা, তা সুস্পষ্ট নয়। আর এর প্রভাবেই কলকাতা-সহ ৭ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে কলকাতা পুরসভাও। আপাতত ৭৬ টি পাম্পিং স্টেশনকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) কন্ট্রোল রুমও খোলা থাকবে।