কান্সার আক্রান্ত আন্দোলনকারী সোমাকে শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য। সোমার সাফল্য আন্দোলনকারীদের মনের জোর বাড়িয়ে দিল কয়েক গুন।
অবশেষে জয় হলো মানবিকতার। কলকাতা হাই কোর্টের অনুরোধে স্কুল সার্ভিস কমিশন ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসকে চাকরির সুপারিশপত্র দিয়েছে। নিজের এলাকাতেই চাকরি দেওয়া হয়েছে সোমাকে। নলহাটির মেয়ে সোমাকে নলহাটি মধুরা হাই স্কুলে বাংলার শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। সোনার আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “আমরা খুব খুশি। আমার মক্কেলকে চাকরি দেওয়ার জন্য আদালত ও রাজ্যের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। রাজ্যের কাছে অনুরোধ করছি স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়োগ করে এ রকম হাজারো সোমার মুখে হাসি ফোটাক।”
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেছিলেন সোমা। সেই পরীক্ষার মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে তাঁকে চাকরি দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় বলে অভিযোগ। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে কারচুপি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। প্রশ্ন করা হচ্ছে একের পর এক তাবড় তাবড় নেতাকে। কলকাতা হাইকোর্টে যখন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তখন কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় এসএসসি-তে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিত জানিয়ে ধরনায় বসছেন চাকরি প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন- মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের অন্তর্তদন্তে বিপাকে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন, সরছেন কি জেলাশাসক
আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস। এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি এবং যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করার অভিযোগ নিয়ে চাকরির দাবিতে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন তিনিও। সোমা ক্যান্সারে আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমে এই খবর জানতে পারেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপরে তিনিই স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ নিয়ে সোমা দাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে এজলাসে ডেকে পাঠান। সেখানে সোমা বলেন, সকল যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি দিক সরকার। তার একার জন্য আলাদা করে বিশেষ কোনো সুবিধার প্রয়োজন নেই। এসএসসি আন্দোলনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সোমা বলেন, "আন্দোলন ছাড়া আমি এই চাকরির সুপারিশ পত্র পেতাম না। কাজেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি থাকবো সবসময়।" এর পাশাপাশি চাকরি পেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভগবানের আসনে বসিয়েছেন সোমা। তার আশা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাজ্যসরকার, সকল বঞ্চিত প্রার্থীদের জন্য সুবিচারের বন্দোবস্ত করবেন। সোমার আইনজীবীর কথায়, "সোমা যোগ্যই ছিল, তাঁর মতনই অনেক যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য আরও আইনি লড়াই লড়তে আমি প্রস্তুত",
রক্তের ক্যান্সারে আক্রান্ত সোমার এসএসসির আন্দোলনের পাশাপাশি তাঁর চিকিৎসাও চলছে। তার চিকিৎসায় এখনও প্রয়োজন কয়েক লক্ষ টাকা। আদালত সোমাকে শিক্ষকতার বদলে অন্য চাকরি দিতে চাইলে তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন। কারণ 'চাকরি পাইয়ে দেওয়াতে নয়' হকের চাকরি পাওয়াতেই বিশ্বাসী তিনি।