কোভিডে স্কুল বন্ধে, বাড়ির দুয়ারে পাঠশালা খুলেছিলেন রথীন ভৌমিক। এদিন শিক্ষক দিবসে সেই শিক্ষককে ফুল মিষ্টি চকোলেট দিয়ে শ্রদ্ধা জানাল তাঁর খুদে ছাত্র-ছাত্রীরা।
কোভিডে স্কুল বন্ধে, ' দুয়ারে পাঠশালা' খুলেছিলেন রথীন ভৌমিক। তা ভূলে যায়নি কেউ। তবে এটা কোনও রাজ্য সরকারের প্রকল্প নয়। এই ' দুয়ারে পাঠশালা'-র সৃষ্টি কর্তা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এদিন শিক্ষক দিবসে সেই শিক্ষক রথীন ভৌমিককে ফুল মিষ্টি চকোলেট দিয়ে শ্রদ্ধা জানাল তাঁর খুদে ছাত্র-ছাত্রীরা।
আরও পড়ুন, By Poll: 'মেয়ে ঘরে ফিরে এসেছে', শিক্ষক দিবসে ভবানীপুর ইস্য়ুতে বিরোধীদের তোপ ফিরহাদের
উল্লেখ্য, ভরা কোভিডে তখন ফের বন্ধ বাংলার সব স্কুল। বাইরে বেরোনো তো দূরের কথা, মানুষ টিভিতেই সারাদিন মুখ গুজে পড়ে আছে। কে জানত এমনও সময় আসবে। ফিবছর মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের গাইডলাইন নেওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা টিভির সামনে বসতো। আর মোবাইলে ক্লাস, সেতো দূর হস্ত। দেশে সবে ঢুকেছে প্রাইভেট দু-চারটে অনলাইন এডুকেশন সিস্টেম। কেউ ভাবতে পারেনি, একদিন সেই মোবাইলের মুখোমুখি বসে কোভিডের দ্বিতীয় বর্ষে পা দিতে হবে। সারা বাংলার শিক্ষার্থীরা যখন বাধ্য় হয়ে মোবাইলে ক্লাস করছে, তখনই দেবদূতের মত হয়ে বাড়ির দুয়ারে পাঠশালা নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হুগলি জেলার পুরশুড়া ব্লকের চিলাডাঙ্গী উত্তরপাড়া প্রাইমারি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রথীন ভৌমিক শিক্ষক।
রথীন ভৌমিকের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বেশিরভাগ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবার থেকে উঠে এসেছে। অনেকেই আছে যারা বংশের মধ্যে প্রথম স্কুলে যাচ্ছে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা খুশি হলেও ভবিষ্যতে কী হবে, এই নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি। তাই রথীনবাবু সিদ্ধান্ত নেন, স্কুল বন্ধ তো কী আছে, বাড়িতে গিয়ে পড়ানোই তো যায়। গত তিন চার মাস ধরে তিনি এলাকার ৯ টি পাড়ায় গিয়ে ৯ টি জায়গা ঠিক করেন। কোথাও বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা গুদাম ঘর আবার কোথাও কারোর বাড়ির উঠোন। এবার প্রতিদিন সকালে বিকেলে, সন্ধ্যায় ঘন্টা দুয়েক করে ক্লাস নিতে থাকেন তিনি। প্রথম প্রথম অভিভাবক দের আপত্তি থাকলেও 'দুয়ারে পাঠশালা'-র প্রয়োজনীয়তাটা বুঝতে পারেন সকলে। তাঁরাও তাঁদের ছেলেমেয়ে দের পাঠাতে শুরু করেন। এইভাবেই শুরু হয়ে যায় রথীন স্যারের দুয়ারে পাঠশালা।
আরও পড়ুন, Post Poll Violence: ধৃতদের জামিন মেলার আগেই চার্জশিট পেশ, মাস্টার স্ট্রোক CBI-র
শিক্ষক দিবসে রথীন ভৌমিক বলেন, 'বাড়িতে বসে কাজ না করেই বেতন নিতে আমার খুব অস্বস্তি। তাই ঠিক করি কিছু একটা করতে হবে। তাছাড়া শিক্ষক হিসেবে সমাজের কাছে আমাদের কিছু দায়বদ্ধতা আছে। এই লকডাউনে ছাত্রছাত্রী দের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিই পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে পড়াবো ঠিক স্কুলের মতোই। এমন শিক্ষক কে শিক্ষক দিবসে সন্মান জানানোর জন্য আপ্লুত গ্রামবাসীরাও।'
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে
আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস