বন্যাত্রাণ কেলেঙ্কারিতে মিলল না রেহাই, তৃণমূল নেতাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তারা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের জামিন নাকচের নির্দেশকে খারিজ তো করেই নি। বরং অভিযুক্ত তিন জনকেই দু সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে।

Parna Sengupta | Published : Mar 11, 2022 6:26 AM IST

স্বস্তি মিলল না সুপ্রিম কোর্টেও (Supreme Court)। কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata Highcourt) জামিন নাকচ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মালদহের (Maldah) বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ ও এক তৃণমূল নেতা (TMC Leader)। দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ বন্যাত্রানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল প্রশাসন। তদন্তে বন্যাত্রানের ৭৬ লক্ষ টাকা কার্য়ত লুঠ হওয়ার বিষয়টি সামনে আসতেই তাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিডিও। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গের মতো জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। অভিযোগ হতেই প্রধান সোনামনি সাহা ও বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। 

কিন্তু তারপর কয়েকমাস গড়ালেও পুলিশ তাদের হদিশ পায়নি। প্রধানের বাড়িতে আদালতের নির্দেশ ঝুলিয়ে তাদের আত্মসমর্পণ করার কথা বলা হয়েছিল। এমনকি আদালতের নির্দেশে প্রধানের বাড়ি থেকে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তও করা হয়েছিল। তাতেও ফল মেলেনি। ধরা দেননি অভিযুক্তরা। পুলিশের চোখ এড়িয়ে চেষ্টা করে গিয়েছেন জামিন নেওয়ার। কিন্তু প্রথমে নিম্ন আদালত ও পরে কলকাতা হাই কোর্টেও তাদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তারা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের জামিন নাকচের নির্দেশকে খারিজ তো করেই নি। বরং অভিযুক্ত তিন জনকেই দু সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে। আর সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের কথা জানাজানি হতেই ফের দুর্নীতির ওই ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে হইচই পড়ে গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে। যা নিয়ে কটাক্ষের সুর আরও চড়িয়েছেন বিরোধীরা।

Latest Videos

প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মহকুমা জুড়ে ভয়াবহ বন্যায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৩৩০০ টাকা ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। বরুইয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হন ৭৩৯৪ জন। কিন্তু তালিকায় নাম থাকলেও তারা টাকা পাননি বলে দুর্গতদের অনেকেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পারে, তালিকায় দুর্গতদের নাম থাকলেও তাদের নামের পাশে অন্য একাউন্ট দিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। এদিকে প্রশাসন পদক্ষেপ করছে না বলে আদালতে মামলা করেন পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তারপরেই প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হয়। 

ওই ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস ও কয়েকজনের বিরুদ্ধেও প্রশাসনের তরফে পরে এফআইআর করা হয়। তারা আপাতত জামিন পেয়েছেন। কিন্তু প্রধান সোনামনি সাহা, কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন ও তৃণমূল নেতা আফসার আলির জামিন মেলেনি। কলকাতা হাই কোর্টে জামিন খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন রোশনারা। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তাদের আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে। আত্মসমর্পণ করার পর তারা জামিনের জন্য আবেদন করলে জামিন মিলবে কি না সেটা আদালতের উপর নির্ভর করছে বলে আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে।

বরুই পঞ্চায়েতের বিরোধী কংগ্রেস দলনেতা তথা মূল অভিযোগকারী আব্দুল মান্নান বলেন, দুর্গতদের টাকা লুঠ করার সময় ওদের হুঁশ ছিল না। এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আশা করি আদালত সুবিচার করবে। আদালতের উপরে আমাদের ভরসা রয়েছে। এ নিয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ ওই নেতাদের কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়া বলেন, তৃণমূলের অপর নামই হল দুর্নীতি। আগামী দিনে মানুষ তৃণমূলকে যথাযোগ্য জবাব দেবে। হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, দল দুর্নীতিকে সমর্থন করে না। কেউ দুর্নীতি করলে আইন আইনের পথেই চলবে।

Share this article
click me!

Latest Videos

সিবিআই এতদিন ধরে কী করছে? সঞ্জয় রায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর প্রশ্ন কিঞ্জল নন্দের | Kinjal Nanda
Sukanta Majumdar live: কালনায় সদস্যতা অভিযানে সুকান্ত, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
'এতদিন আমি মুখ খুলিনি, ফাঁসাচ্ছে, ডিপার্টমেন্ট বলেছে চুপ থাকতে' চিৎকার সঞ্জয়ের | Sanjay Roy RG Kar
RG Kar Hearing Live : আর জি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানি, দেখুন সরাসরি
'কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয়না তেমনই মমতার পুলিশকে পরিবর্তন করা যায় না' বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর