করোনার জেরে ঘরবন্দী, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পড়ুয়াদের খেলার সামগ্রী দিল স্কুল

নবগ্রাম বাজার থেকে মাত্র দু'কিমি দূরে সিঙ্গার হাইস্কুল অবস্থিত। কিন্তু, এলাকার বেশিরভাগ মানুষ আদিবাসী সমাজ ভুক্ত হওয়ায় আজও ওই এলাকা সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। 

Asianet News Bangla | Published : Oct 16, 2021 1:36 PM IST

করোনা পরিস্থিতিতে (Corona Situation) অনলাইনে (Online) বড়দের পাশাপাশি খুদে পড়ুয়াদের (Student) ক্লাস (Class) শুরু হয়েছে অনেকদিন আগেই। হোমওয়ার্ক (Home Work) পড়ুয়ারা ঠিক মত করছে কি না তা খতিয়ে দেখতে প্রতিমাসে ছেলে মেয়েদের বাড়িতে হাজির হন শিক্ষকরা (Teacher)। এই চেনা ছবি বদলে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিল মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম সিঙ্গার হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে শুধুমাত্র ঘরে আবদ্ধ হয়ে বইয়ের মধ্যে মুখ গুঁজে পড়াশোনা করা নয়, এই পরিস্থিতিতে তাদের বৌদ্ধিক বিকাশের জন্য শরীর সুস্থ রাখতে 'ইনডোর গেম'-এর মধ্যে দিয়ে 'ইন্টারঅ্যাকটিভ স্কিল' বৃদ্ধি করতে এবার পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুরু হল হরেক রকমের খেলার সামগ্রী বিলি। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন অভিনব উদ্যোগে খুশি অভিভাবক ও এলাকার বাসিন্দারা। 

নবগ্রাম বাজার থেকে মাত্র দু'কিমি দূরে সিঙ্গার হাইস্কুল অবস্থিত। কিন্তু, এলাকার বেশিরভাগ মানুষ আদিবাসী সমাজ ভুক্ত হওয়ায় আজও ওই এলাকা সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। তবে এই কয়েক বছর সিঙ্গার হাইস্কুল এলাকার ছেলে মেয়েদের আলোর পথে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিভাবকদের দাবি। করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও গত মে মাস থেকেই সকল স্তরের ছেলে মেয়েদের জন্য অনলাইনে শিক্ষার পরিবেশ গড়ে দিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে শুধু অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে দিয়েই দায় সারেনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মণ্ডলী। নিয়ম করে প্রতিমাসে পড়ুয়াদের বাড়িতে গিয়ে হোম ট্যাস্ক অ্যাক্টিভিটির গতিবিধি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। 

আরও পড়ুন- 'আমরা ঘরে বসে থেকে রাজনীতি করতে চাইনা' ত্রিপুরায় তৃণমূলের মোক্ষম দাওয়াই দুয়ারে প্রচার

আরও পড়ুন- 'বাবাকে অ্যাসাইলেমে ভর্তি করা হোক' সিঁদুরদান প্রসঙ্গে বিস্ফোরক শোভন পুত্র সপ্তর্ষি

প্রয়োজনে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধা অসুবিধার কথাও জেনে নিচ্ছেন সিঙ্গার হাইস্কুলের শিক্ষকরা। এদিকে অনলাইন শিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে গ্রামীণ পড়ুয়ারা যাতে মোবাইলের প্রতি আসক্ত না হয়ে ওঠে সেকথা মাথায় রেখে পড়ুয়াদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তাদের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে ফুটবল, স্কিপিং, লুডো। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শারীরশিক্ষার শিক্ষকরা পাড়ার একটি নির্দিষ্ট স্থানে কিছু ছেলে মেয়েদের সমবেত করে মাসে একদিন করে শারীরশিক্ষার ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। 

আরও পড়ুন- Shovan Baisakhi: সবকিছু ছাপিয়ে গেলেন যুগল, দশমীতে অন ক্যামেরা 'বান্ধবী'কে সিঁদুর পরালেন শোভন

বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ পড়ুয়ার মধ্যে মুড়োরিয়া, কল্যাণগঞ্জ, শুয়োরমারা ডাঙা, হিজরোল, গরোড়ার মতো একাধিক গ্রামের ৬০০-র বেশি স্কুল পড়ুয়ার কাছে ওই খেলার সামগ্রী বিতরণ করা গিয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই বাকি পড়ুয়ার কাছে পৌঁছে যাবে খেলার সামগ্রী। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, "করোনা আবহে পড়ুয়াদের একঘেয়েমি দূর করতে আমরা পালা করে সব শিক্ষকরা ওদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। এবার মূলত মোবাইলের নেশায় যাতে ওরা বুঁদ না হয়ে যায় তাই খেলার সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি শারীরশিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।" শিক্ষকদের এই ভূমিকায় রীতিমত খুশি অভিভাবকরা। তাঁদের কথায়, করোনার মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা শুধু শিক্ষাদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং প্রতিনিয়ত এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলেছেন। 

Share this article
click me!