প্রাণ বাঁচিয়ে প্রতিবাদ, ভেন্টিলেটর ছাড়াই সাপে কাটা যুবককে বাঁচালেন শালবনীর দুই চিকিৎসক

  • শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঘটনা
  • পঁচিশ বছর বয়সি যুবককে সাপে কামড়ায়
  • কৃত্রিমভাবে শ্বাস প্রশ্বাস চালু রাখেন চিকিৎসকরা
  • হাতে কালো ব্যাজ পরেও কর্তব্যে অবিচল
     

debamoy ghosh | Published : Jun 16, 2019 7:01 AM IST / Updated: Jun 16 2019, 12:48 PM IST


চিকিৎসকদের নিগ্রহের প্রতিবাদে হাতে কালো ব্যাজ পরা। কিন্তু তা বলে কর্তব্যে ঘাটতি নেই। পরিকাঠামোর অভাব সত্ত্বেও প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করে পঁচিশ বছর বয়সি এক রোগীকে প্রাণে বাঁচালেন শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। 

সাপের কামড় খাওয়া শালবনীর রঘুনাথপুরের বছর পঁচিশের ভটোরাম টুডুকে শনিবার আনা হয়েছিল শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। শালবনী হাসপাতালে ভেন্টিলেটর নেই। তাতেও হাল না ছেড়ে মরণাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আসা ওই রোগীর শ্বাসনালীতে নল ঢুকিয়ে  কৃত্রিমভাবে শ্বাস- প্রশ্বাস চালু রাখার ব্যবস্থা করেন চিকিৎসকরা। প্রায় ছ' ঘণ্টা ধরে হাতে পাম্প করে ওই রোগীকে বাঁচিয়ে রাখেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। ভেন্টিলেশন চালু করে এবং অন্যান্য সহযোগী জীবনদায়ী ওষুধ দিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা হয় যুবককে। তাঁর অবস্থা এখন অনেকটা ভালো।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, শালবনী হাসপাতালে এর আগেও বহু মরনাপন্ন রোগীর প্রাণ বাঁচানো হয়েছে। শনিবারও তাই হয়েছে।  শালবনীর ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, অভিষেক মিদ্যা বলেন, কৃত্রিমভাবে শ্বাস প্রশ্বাস চালিয়ে ওনাকে বাঁচানো হয়েছে। প্রায় ৬ ঘণ্টা হাতে পাম্প করেছেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এটা করা হয়েছে, এটাই আমাদের দায়িত্ব। পরে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই রোগীকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। 

সাপের কামড় খাওয়া ওই যুবকের স্ত্রী সীতা টুডু বলেন, 'ভোরে জঙ্গলে গিয়েছিল। বাড়ি এসেই বলে, বুক শুকিয়ে যাচ্ছে। গা, হাত, পা জ্বলে যাচ্ছে। অবস্থা খুব খারাপ হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসকরা সব সময় পাশে থেকেছেন। ওঁরা না থাকলে আমার স্বামীর সকালেই কিছু একটা হয়ে যেত।'

রোগীর চিকিৎসা করেন নবকুমার দাস এবং  অভিষেক বেরা দুই চিকিৎসক। নবকুমারবাবু বলেন, 'রোগী যে অবস্থায় এসেছিলেন, আমরা কিছু না করলে উনি মারা যেতেন। এখন তাঁর অবস্থা মোটামুটি ভালো। পুরোপুরি সুস্থ হতে গেলে ভেন্টিলেটর লাগবে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আমরা চিকৎসক, আমাদের কাজ রোগীর সেবা করা। কর্তব্যরত অবস্থায় এটাই আমাদের যা করা উচিত সেটাই করেছি। একই সঙ্গে আমরা কালো ব্যাজ পরে এনআরএসের ঘটনারও প্রতিবাদ করছি।' 

শালবনীj হাসপাতালে যদিও এই প্রথম নয়, এর আগেও নিজেরা ভেন্টিলেটর তৈরি করে শিশু-সহ বহু রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এনআরএসের ঘটনার প্রতিবাদ করছেন তাঁরাও। কিন্তু কাজ করে, পরিষেবা দিয়ে।
 

Share this article
click me!