লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই আফিসাগের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। দুই অফিসার - সহ চার কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করল সিবিআই।
বীরভূমের বগটুই গণহত্যার অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যু হয়েছিল সিবিআই হেফাজতে। লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য সিবিআই কর্তাদের দায়ি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তারী সংস্থা। আর এই ঘটনায় দুই সিবিআই কর্তা-সহ চার জনকে রবরখাস্ত করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর লালন শেখের মৃত্যুর সময় চারজনই রামপুরহাটের সিবিআই - এর অস্থায়ী ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন সোমবার তাদের সাসপেন্ড করা হয়।
সিবিআই সূত্রের খবর রাহুল প্রিয়দর্শী, বিলাস মধঘুট - দুই সিবিআই অফসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে দুই কনস্টেবলকে। সূত্রের খবর সিবিআই কর্তাদের উপস্থিতিতে কীভাবে একজন অভিযুক্তের মৃত্যু হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, তারা বগটুইকাণ্ডের সঙ্গে ভাগদু শেখ হত্যাকাণ্ড মামলারও তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। যদিও লালন শেখ হত্যা মামলায় সুশান্ত ভট্টাচার্য নামে আরও এক সিবিআই কর্তার নাম উঠেছিল। কিন্তু তার কর্তব্য গাফিলতির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও সূত্রের খবর। সিবিআই দুর্নীতি দমন শাখার এই অফিসারের সঙ্গে লালন শেখের মৃত্যুর কোনও যোগ নেই। অন্যদিকে লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় যে সব এসপি বা ডিআইজির বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি সিবিআই কর্তারা।
গত ১২ ডিসেম্বর রামপুরের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছিল লালন শেখের নিথর দেহ। প্রাথমিত তদন্তে সিবিআই কর্তাদের অনুমানা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে লালন শেখ। এই ঘটনার পরই সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। লালন শেখের পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা দাবি করে সিবিআই-এর অত্যাচারের কারণে লালন শেখের মৃত্যু হয়। লালন শেখকে টাকার জন্য সিবিআই কর্তারা চাপ দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময়ই সিবিআই জানিয়েছে গোটা ঘটনার তদন্ত হবে। প্রয়োজনে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে।
গত বছর ২১ মার্চ ১৪ নম্বর জাতীয় সড়তের ধারে বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের ভাদু শেখ। খুনের বদলা নিতে ওই রাতেই বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। তাদের মধ্যে ৯ জন মহিলা। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল লালন শেখ। অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘটনার পরের দিনও তাকে গ্রামে দেখা যায়। ঘটনার পরদিন রাজ্য সরকার সিট গঠন করে। তারও দুই দুদিন পর হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত হতে নেয় সিবিআই। সেই সময় থেকেই ফেরার হয়ে যায় লালন শেখ। অবশেষে গত শনিবার লালন শেখকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৫ ডিসেম্বর পেশ করা হয় রামপুরহাট আদালতে। সেই সময় আদালত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে। সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার পর ২১ জুন প্রাথমিক চার্জশিট জমা দেয়। ওই চার্জশিটে লালন শেখকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মূল অপরাধী হিসেবে লেখা হয়। অন্যদিকে ভাদু শেখ খুনের প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবেও তার নাম ছিল। কারণ লালন ছিল ভাদুর ছায়াসঙ্গী। ভাদুকে খুনের সময় লালন পাশেই ছিল বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীরা দাবি করেছে।
আরও পড়ুনঃ
অগ্নিবীরদের প্রথম ব্যাচের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সঙ্গে ছিলেন রাজনাথ সিং
১০০ কোটি টাকার প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস বাজেয়াপ্ত দেগঙ্গায়, সবগুলি মৌর্য ও কুষাণ যুগের
মকর সংক্রান্তির পূন্যস্থান সারলেন লক্ষাধিক মানুষ, এখনও সাগরের পথে অনেক তীর্থযাত্রী