আলিপুরে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তাপস আর কুন্তলকে। তদন্তকারীদের দাবি তাদের দুজনকেই কালীঘাটের কাকু নিয়োগ দুর্নীতির দালাল হিসেবে ব্যবহার করতে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে যাওয়ার পথে বিস্ফোরণ কুন্তল ঘোষ। তিনি প্রকাশ্যেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। বলেন, 'ইডি মিথ্যা কথা বলছে। তদন্তকে ভুল জায়গায় চালিত করছে ' এখানেই শেষ নয়, কুন্তন আরও বলেন, 'ইডির যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে আমার স্টেটমেন্ট আদালতে পেশ করুক। ' কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর গ্রেফতারি নিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে কুন্তল ঘোষ। যদিও এদিন তাঁরই সঙ্গে আদালতে পেশ করা হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্য অভিযুক্ত তাপস মণ্ডলকে। তিনি অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে সরাসরি জানিয়েছেন, 'যা বলার কুন্তলই বলবে।'
শুক্রবার আলিপুরে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তাপস আর কুন্তলকে। তদন্তকারীদের দাবি তাদের দুজনকেই কালীঘাটের কাকু নিয়োগ দুর্নীতির দালাল হিসেবে ব্যবহার করতে। যদিও এই বিষয়ে দুজনের কেউই মুখ খোলেনি। অন্যদিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রথম তাপস মণ্ডলের মুখেই উঠে আসে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নাম। এই মামলায় অন্য অভিযুক্ত গোপাল দলপতির মুখেও শোনা দিয়েছিল কালীঘাটের কাকুর নাম। তারপরই গোয়েন্দাদের নজরে পড়েন সুজয়কৃষ্ণভদ্র। এই অবস্থায় একিধিকবার জিজ্ঞাসার পরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
তাঁকে জেরা করছে তদন্তকারী সংস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন কুন্তল বা তাপসকে নিয়োগ দুর্নীতির দালাল হিসেবেই ব্যবহার করতেন সুজয়। অন্যদিকে সুজয়ের অবাদ যাতায়াত ছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের অফিসে। মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল তাঁর।
রিমান্ড লেটারে দাবি করা হয়েছে দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল কালীঘাটের কাকুর। তেমনই দাবি করছে ইডির একটি সূত্র । ইডি সূত্রে খবর , ২০২২ সালে তাপস মণ্ডল বলেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের দফতের ভিতরেই কালীঘাটের কাকুর অবাধ যাতায়াত ছিল। সেখানে তিনি খাওয়াদাওয়া করতেন। মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে গোপন বৈঠকও করতেন। তাপস মণ্ডলের এই বয়ানকেই হাতিয়ার করে ইডি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলেও সূত্রের খবর। ইডি সূত্রের খবর তাদের কাছে খবর রয়েছে মানিক মণ্ডলের সঙ্গে বৈআইনি চাকরি নিয়ে বৈঠক করার জন্যই কালীঘাটের কাকু যেতেন সেখানে। ৩২৫ জনেকে চাকরি বিক্রি করে টাকা তোলা হয়েছিল। সেই বেআইনি চাকরি প্রার্থীদের তালিকা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন পর্যদের অফিসে। তাদের তেকে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। ইডির অনুমান চাকরি বিক্রির ব্লুপ্রিন্টও তারা তৈরি করতেন।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার আদালতে মুর্শিদাবাদের বড়োঝার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা -সহ ৯ জন অভিযুক্তকে আলিপুরের সিবিআইএর পেশ করা হয়। অভিযুক্তদের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা প্রশ্ন তোলেন সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছে তাদের মধ্য থেকে সকলকে গ্রেফতার করা হয়নি। শুধুমাত্র কয়েক জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এই বৈরিতা কেন। তারই উত্তরে সিবিআই আইনজীবী জানান নগোটা রাজ্য সংগঠিত অপরাধ হয়েছে। যাদের অপরাধের মাত্রা বেশি তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে। তুলনায় যাদের অপরাধের মাত্রা কম তাদের রাজসাক্ষী করার পরিকল্পনা রয়েছে।