
কংগ্রেসের সঙ্গে ২০২৪ সালের নির্বাচনী জোটের তত্ত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি। কিন্তু মমতার সূত্রের নিয়ে আসরে নেমেছে বিজেপি। মঙ্গলবার বিজেপি বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সূত্র অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের জন্য একটি 'নো- গো জোন' তৈরি হবে। কারণ মমতা বলেছেন যেসব রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলি শক্তিশালী সেখানে তাদেরকে সমর্থন করা উচিৎ কংগ্রেসের। অন্যদিকে যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে তারা সকলেই কংগ্রেসকে সমর্থন করবে। এদিন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাগ পুনাওয়ালা বলেন, সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে টেমপ্লেট সেট করেছে যা কংগ্রেসের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, তেলাঙ্গনা বা উত্তর প্রদেশের মত রাজ্যগুলির দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ এই রাজ্যগুলিতে রীতিমত দুর্বল কংগ্রেস।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র আরও বলেন, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী ঐক্য গঠনের প্রচেষ্টার মধ্যে বিরোধীদের 'কোনও মিশন ও কোনও ভিশন নেই।' বিরোধীরা এখনও যথেষ্ট ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছে।
কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী সেখানেই তাদের লড়াই করতে হবে। বাকি রাজনৈতিক দলগুলি তাদের সমর্থন জানাবে। কিন্তু এই সমর্থন পাওয়ার জন্য অন্যত্র কংগ্রেসকে বাকি রাজনৈতিক দলগুলিকে সমর্থন করতে হবে। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্তব্যে পরিষ্কার যে আসন ভাগাভাগির এই সূত্র অনুযায়ী আঞ্চলিক দলগুলিকে তারা যে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত সেখানে কংগ্রেসকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। এদিন মমতা বলেন , এটা কোনভাবেই হতে পারে না যে তৃণমূল কংগ্রেস কর্ণাটকে কংগ্রেসকে সমর্থন করবে আর বাংলায় কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে। তিনি আরও বলেন, ভাল কিছু পাওয়ার জন্য কংগ্রেসকেও কিছু ত্যাগ করতে হবে। তৃণমূল সুপ্রিম আরও বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের হিসেব অনুযায়ী কংগ্রেস দেশের ২০০ টি আসনে শক্তিশালী। উত্তর প্রদেশের কংগ্রেসের থেকে এগিয়ে রয়েছে রয়েছে অখিলেশ যাদব। সেখানে কংগ্রেসের অবশ্যই সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করা উচিৎ। তবে কংগ্রেস যে উত্তর প্রদেশের প্রার্থী দেবে না তা তিনি বলছেন না বলেও জানিয়েছেন। তাঁর কথায় সেখানে অশিলেশের সঙ্গে আলোচনা করেই কংগ্রেসকে প্রার্থী দিতে হবে। এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন বিজেপি বলে, কংগ্রেসের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস একেকটি রাজ্যে দরজা বন্ধ করে দিতে চাইছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস যে প্রস্তাব দিয়েছে তা আসতে একটি অনাস্থা ভোট। বিজেপির দাবি কর্ণাটকে কংগ্রেস বিরাট জয় পেয়েও এখনও বিরোধীদের মধ্যে আস্থা অর্জন করতে পারেনি। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মত রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের স্বার্থে কংগ্রেসকে ব্যবহার করতে চাইছে। আর এখন থেকেই কংগ্রেসকে তার বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের মত রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচনে আগে, অবস্থান বিভাজন, কমিশন, দুর্নীতির কারণেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এক ছাতার তলায় আসতে চাইছে। বিজেপিকে থামানো ছাড়া তাদের আর কোনও মিশন নেই।
বিজেপির দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি গুরুত্ব আছে, জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের এখনও তেমন কিছু কিছু নেই। কে বেশি ভাগ পাবে আর কাকে কম ভাগ দেওয়া যায় তা নিয়েই তারা আলোচনায় ব্যবস্থা। তাই এই জাতীয় জোটে কোনও মিশন বা ভিশন থাকে না।