শৌচালয়ের নোংরা অস্বস্তিকর ঘরেই ছোট্ট সুহানির পড়া করে, মা ও মেয়ের অভাবের সঙ্গে লড়াইকে সেলাম জানাবেন আপনিও

Published : Jun 25, 2024, 08:45 PM IST
Needy mother teaching daughter in toilet in Ranaghat know the story of needy bsm

সংক্ষিপ্ত

শৌচালয়ের ভেতরেই রয়েছে ছোট্ট একটা ঘর। ভ্যাপসা গরমে শান্তি বলতে একটা পাখা। মেয়েকে পাশে বসিয়ে বইয়ের ছাপা অক্ষরে আঙুল রেখে মা পড়াচ্ছেন। 

জনগণের জন্য তৈরি হওয়া শৌচাগারেই মেয়েকে নিয়ে দিন কাটান অভাবী মা। সেখানেই পড়াশুনা করান ছোট্ট মেয়েকে। দিনের শেষে শৌচালয় থেকে রোজগারের সামান্য কিছু টাকা নিয়ে মা বাড়ি ফেরেন ছোট্ট মেয়ের হাত ধরে। গরমের মধ্যে গোটা দিনই কাটে খুব কষ্টে। কিন্তু কেন এই কষ্ঠ মা ও মেয়ের- তার পিছনে রয়েছে একটি দীনদরিদ্র পরিবারের অভাবের কথা।

রানাঘাট আদালত চত্বরে রয়েছে পুরসভার শৌচালয়। আইনজীবী, মক্কেল কিংবা প্রশাসনিক কাজে মহকুমা শাসকের দফতরে আসা মানুষজন সেটি ব্যবহার করে। শৌচালয়ের ভেতরেই রয়েছে ছোট্ট একটা ঘর। ভ্যাপসা গরমে শান্তি বলতে একটা পাখা। মেয়েকে পাশে বসিয়ে বইয়ের ছাপা অক্ষরে আঙুল রেখে মা পড়াচ্ছেন। শৌচালয়ের ওই ঘর যেন এখন হয়ে উঠেছে বছর দশের সুহানীর সাউয়ের ' নিজের পাঠশালা'। গরমের ছুটিতে রানাঘাট ব্রজবালা প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এই ছাত্রীর অধিকাংশ দিন কাটে রানাঘাট আদালতের পাশে থাকা ওই শৌচালয়ের ঘরে। নিজের মায়ের সঙ্গে।

সেই ঘরে বসেই আনমনে সাদা কাগজে এঁকেছে ছবি। মেয়ের শখের আঁকা ছবি শৌচালয়ের ওই ঘরের দেওয়ালে সযত্নে ঝুলিয়ে রেখেছেন মা কল্পনা দেবী ।

Watch Video: তৃণমূল সাংসদের 'জয় গুজরাট' স্লোগান, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাঠানের গুগলি

জানাগিয়েছে, রানাঘাট শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের থানাপাড়ার বাসিন্দা শংকর সাউ। রানাঘাট রেল বাজারে বিভিন্ন দোকানের বস্তা মাথায় এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন তিনি। যেটুকু পারিশ্রমিক মেলে তা দিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও দুই মেয়ের পেট কোনরকমে চলে। তাই কলেজ পড়ুয়া বড় মেয়ে স্নিগ্ধা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছোট মেয়ে সুহানীর পড়াশোনার খরচ জোগাতে শৌচালয়ে কাজ নিয়েছেন মা।

Weather Update: বর্ষার বৃষ্টিতে কবে স্বস্তি ফিরবে দক্ষিণবঙ্গে? ঘূর্ণাবর্তে আবহাওয়া বদলাবে এখানে

শৌচালয়ের ছোট্ট ঘরে মেয়েকে পড়াচ্ছেন মা। এদিন দুপুরে দেখা গেল শৌচালয়ের কাউন্টারে খুচরো পয়সার হিসেব রাখার কাজের ফাঁকেই মেয়েকে পড়াচ্ছেন মা। কিন্তু শৌচালয়ে কেন? এই বিষয়ে কল্পনা দেবী বলেন, “বড় মেয়ে চাকদহ কলেজে পড়ে। ও কলেজে যাওয়ার সময় বোনকে স্কুলে দিয়ে যায়। তিনি আরও জানান , “স্বামী, মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়িতেই ঠাঁই হয়েছে বর্তমানে তার । বড় অভাবের সংসার তাঁদের । ছোট মেয়েকে কোথায় রেখে আসব ভেবে ওকে আমার সঙ্গে নিয়ে এসেছি। কল্পনা দেবী বলেন এই যে দেখছেন বিভিন্ন ছবি আঁকা। সব মেয়ে এঁকেছে। ও আঁকা শিখতে চায়। কিন্তু সেই ক্ষমতাটাও আমাদের নেই।” আর ছোট্ট সুহানীর বক্তব্য, “মায়ের কাছে সারা দিন বই নিয়ে পড়তে তার খুব ভাল লাগে।”

'এবার সাংসার চালাতে চুরি করতে হবে!', মমতার বৈঠকের পরই ফুটপাথ-ব্যবসায়ীদের করুণ আর্তি

 

জানাযায় , প্রতিদিন ওই শৌচালয়ের জন্য ১২০ টাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য আলাদা করে রাখতে হয় কল্পনাকে। তার পর যেটুকু থাকে, তা নিয়েই ঘরে ফেরেন তিনি । আবার আদালত বন্ধ থাকলে উপার্জন সেভাবে হয়না।

বর্তমানে প্রায় ৪০ বর্গফুটের শৌচালয়ের এই ঘর যেন কল্পনার কাছে সংসার হয়ে উঠেছে। এক দিকে, উপার্জন। অন্য দিকে, মেয়েকে মানুষ করে তোলার লড়াই তাঁর ।

PREV
click me!

Recommended Stories

Suvendu Adhikari: ওয়াকফ বিল নিয়ে মমতাকে বিস্ফোরক আক্রমণ শুভেন্দুর! দেখুন কী বলছেন তিনি
'এবার থেকে যেখানে যাবেন বন্দে মাতরম বাজান হবে' মমতাকে চরম বার্তা শুভেন্দুর