আবারও জমি বিতর্ক। আবার অমর্ত্য সেনের থেকে জমি ফেরত চাইল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখনও এই বিষয় কিছু জানায়নি অমর্ত্য সেন।
আবারও নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে জমি জখলের অভিযোগ করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে থেকে অমর্ত্য সেনকে মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনের একটি প্লটের কিছু অংশ হস্তান্তরের জন্য আবেদন জানান হয়েছে। কর্তৃপক্ষ দাবি বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ বেআইনিভাবে জমির ওই অংশটি দখল করেছেন। বলে এই বিষয় এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি অমর্ত্য সেন বা তাঁর পরিবার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপিটি রেজিস্ট্রার স্বা৭রিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, অর্থনীতিবিদের বাসভবন একটি এলাকায় তৈরি করা হয়েছে, যেখানে অতিরিক্ত ১৩ ডেসিমেল জমি বেদখল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই বিষয়ে তারা প্রতিনিধিদের একটি যৌথ জরিপ অর্থাৎ দুই পক্ষের সদস্যদের নিয়ে মাপঝোপ করতে প্রস্তুত। চাইলে অমর্ত্য সেনের নিযুক্ত সার্ভেয়ার বা অ্যাডভোকেট এই দাবিগুলি যাচাই করে দেখতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি রেকর্ড, শারীরিক সমীক্ষা বা সীমানা থেকে পাওয়া গিয়েছে অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জমি অননুমদিতভাবে দখল করে রেখেছেন। সেই ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে দ্রুত হস্তান্তর করারও আবেদন জানান হয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্বভারতীর মুখমাত্র মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছে, অমর্ত্য সেনের বাবা আসুতোষ সেন ১৯৪৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ১২৫ ডেসিমেল জমি লিজে নিয়েছিলেন। কিন্তু এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সেন পরিবারের তরফ থেকে কিছুই জানান হয়নি।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সেন পরিবারের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের জমি অবৈধভাবে দখল করে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন। পাল্টা অমর্ত্য সেনও সেই সময় জানিয়েছিলেন জমির প্লটটি দীর্ঘমেয়াদী লিজে রয়েছে। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিজেপির নীতি ও আদর্শের সমালোচনা করার জন্য অমর্ত্য সেনকে হয়রান করছে। তিনি আরও বলেছিলেন ৫০ বছর পরে কেন এই জমি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না।
সম্প্রতি দেশে ফিরে অমর্ত্য সেন আবারও বিজেপির সমালোচনা করেছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একক দল হিসেবে লড়াইয়ে থাকবে - এটা মনে করা ভুল। শনিবার নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কয়েকটি আঞ্চলিক দল রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে। ৯০ বছরের অমর্ত্য সেন এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। তিনি বলেন মমতার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে মমতার গ্রহণযোগ্যতা এখনও যাঁচাই করা যায়নি।
এদিন অমর্ত্য সেন বলেন, 'আমি মনে করি বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যার মধ্যে ডিএমকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং সমাজবাদী পার্টি শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।' তবে এগুলি আগামী দিনে কতটা শক্তিশালী হবে সেসম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন বলেও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি এটা এখনই খারিজ করে দেওয়া ভুল হবে যে বিজেপি জায়গা নিতে পারে এমন কোনও দল নেই কারণ বিজেপি একটি দল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু বর্তমানে বাকি অংশের তুলনায় হিন্দুদের দিকেই এই দল বেশি মনোযোগী।'
আরও পড়ুনঃ
নির্দেশ উপেক্ষা করেই 'অন্ধকার'ক্যাম্পাসে বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শন, থামাতে পাথার বৃষ্টি JNUতে
Delhi crime: আফতাবের কথা আমান্য করায় শ্রদ্ধাকে খুন , ৬ হাজার পাতার চার্জশিটে দাবি পুলিশের
নেতাজির পরিবারে পাল্টি খেলেন চন্দ্র, দাদা সুগতর পথ ধরে কি তৃণমূলে যাচ্ছেন তিনি