কলকাতা ও পাশ্ববর্তী এলাকায় তাপমাত্রার পারদ এখনও উর্ধ্বেগামী। প্রশ্ন একটাই বর্ষবরণের রাতেও কি এমন অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে। তবে আপাতত তাপমাত্রার বিশেষ হেরফের হবে না বলেও পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী নতুন বছরের আগে জাঁকিয়ে শীত পড়ার আর তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। হালকা শীতেই কিছুটা ঘাম ঝরিয়েও বর্ষবরণ করতে হবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের। বুধবারের মত তেমন অস্বস্তিকর অবহাওয়া না হলেও বৃহস্পতিবারও তাপমাত্রার পারদ উর্ধ্বগামী। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এদিন কলকাতার সর্বোচ্চো ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, ২৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ২০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় সাত ডিগ্রি বেশি।
তবে উত্তরবঙ্গে তাপমাত্র রীতিমত নিম্নগামী। জলপাইগুড়ির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দুটোই স্বাভাবিকের তুলনায় কম রয়েছে। মালদাতেও শীতের আমেজ রয়েছে। দার্জিলিং-এর তাপমাত্রাও নিম্মগামী। সিমিকে তুষারপাতের প্রভাব পড়েছে রাজ্যের পাহাড়ি জেলায়। যার জেরে কিছুটা আনন্দ রয়েছে পর্যটকদের মধ্যে।
আগামী এক সপ্তাহ আবহাওয়ার তেমন কোনও পরিবর্তন হবে না বলেও পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ১৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আসেপাশে ঘোরাফেরা করবে। বৃহস্পতিবার সকালের আকাশ সামান্য মেঘলা ছিল। তারকারণে একটু বেশি শীত অনুভূত হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হবে। আর তাপমাত্রার পারদও সামান্য হলেও চড়বে। উত্তরে হাওয়া দিলেও তাপমাত্রার তেমন কোনও পরিবর্তন হবে না বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আলিপুর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে উত্তর বঙ্গোপসাগরে। যার কারণে রাজ্যে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমী বাতাস সাগর থেকে স্থলভাগের দিকে ঢুকেছে। তার ফলে জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় উত্তুরে হাওয়া ঢোকার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাশাপাশি বাতাসে বাড়ছে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ। সেই কারণে বাড়ছে অস্বস্তি। কবে স্বস্তি মিলবে তারও কোনও উত্তর এখনও পর্যন্ত দিতে পারেনি হাওয়া অফিস। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ার তেমন কোনও লক্ষণ নেই বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এসে কলকাতার পারদ উঠে গেছে কুড়ির উপরে। সোমবার ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মঙ্গলবার ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বুধবারও ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পৌষ মাসের মাজামাঝি এসেও পারদের এমন ঊর্ধ্বগমন বঙ্গবাসীর কাছে খুবই হতাশার। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ৫৩ বছরের রেকর্ড, ১৯৬৯ সালের পর ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে এই প্রথম এত উচ্চতায় রয়েছে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। অর্থাৎ, ঠান্ডার রেকর্ড ভাঙার বদলে ২০২২-এর শীতে ভাঙল উষ্ণতার রেকর্ড।
১ জানুয়ারি, অর্থাৎ বর্ষবরণের দিন কলকাতার পারদ পৌঁছে যেতে পারে ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ বার কাঁটা হবে ভূমধ্যসাগরের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। ফলে উত্তর ভারতেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে উত্তুরে হাওয়া। উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতে এখন হাড়-হিম করা ঠান্ডা। শূন্যের কাছে রাজস্থানের তাপমাত্রা, পাঁচের আশপাশে রাজধানী। কিন্তু ঝঞ্ঝার পূর্বাভাস মাথায় রেখে সেখানেও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে মৌসম ভবন। বর্ষশেষ-বর্ষবরণে এর কুপ্রভাব পড়বে বাংলার শীতেও।
আরও পড়ুনঃ
কলকাতার বিমানে যাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ভিডিও
চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার, মারধর করার হুঁশিয়ারি