মোট আটটি আসন- আসানসোল, বর্ধমান পূর্ব, বহরমপুর, বীরভুম, বোলপুর, বর্ধমান-দুর্গাপুর, কৃষ্ণনগর ও রাণাঘাটের মানুষ আজ লোকসভা নির্বাচনে রায় দেবেন।
লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এর ভোটগ্রহণ পর্ব চলছে। আর এই রাজনৈতিক উত্তেজনার আঁচ বাড়তেই প্রতিদ্বন্দ্বী মহিলা প্রার্থীর অন্তর্বাসের রঙ নিয়ে মন্তব্য থেকে 'প্রধানমন্ত্রী পাজামাও পরতে জানতেন না' গোত্রের কুকথার ফুলকি ছুটছে। বরাবরের বিতর্কিত সপা নেতা আজম খান থেকে সিনিয়র কংগ্রেস নেতা কমল নাথ, তার ভাগীদার।
১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে রোমাঞ্চকর লোকসভা ভোট ২০১৯। প্রথম দফাতেই আন্দামান লক্ষদ্বীপ ও আন্দাামানের পাশাপাশি আরো ১২ টি রাজ্যের মোট ৯১ টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। প্রথম দফাতে ১৩০০ প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের এক ক্যাবিনেট মন্ত্রী-সহ মোট ৫জন মন্ত্রী লড়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরাও।
কারোর লক্ষ্য খ্যাতি, কারোর প্রতিবাদ, কারোর বা অন্য কারণ - কিন্তু লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এ দারুণ উন্মাদনা বারানসী কেন্দ্র নিয়ে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন। কাজেই এখানে দাঁড়ালে সহজেই মিলবে স্পটলাইট। সেই আলোকবৃত্তকে ধরতেই নেমে পড়েছেন হাইকোর্টের দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিচারক থেকে চাষী, বরখাস্ত হওয়া জওয়ান মায় নকল মোদী-ও।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে গেল গণতন্ত্রের উৎসব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের সাধারণ নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ভোট পড়ার শতাংশের হিসেব দেখলে মনে হতে পারে ২০১৪ সালের তুলনায় এবার ভোট কম পড়েছে। কিন্তু, কমিশনের দাবি এই হিসেব বিকেল ৫টা পর্যন্ত সংগৃহীত। কাজেই প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২০১৪-এর মতোই ভোট পড়েছে। তবে ভোটের দিনে বাজেয়াপ্ত হওয়া অবৈধ সম্পত্তির পরিমাণ কিন্তু প্রথম দিনেই ছাপিয়ে গিয়েছে আগের ভোটকে।
নিবাচনী বিধির বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করায় নির্বাচন কমিশন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করল যোগী ও মায়াবতীর ভোট প্রচারের উপরে।
উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলি আসন থেকেই আরও একবার লোকসভা নিক্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতী করছেন ইউপিএ চেয়ার পারসন তথা কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। সেখানকার জেলা-শাসকের কাছে দাখিল করা হলফনামায় সনিয়া জানিয়েছেন, স্থাবর-অস্থাবর নিলিয়ে বর্তমানে তাঁর সম্পত্তির মোট মূল্য ১১.৮২ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে শেষ বার নির্বাচনে লড়ার সময় সনিয়া যে হলফামা দেন তাতে মোট সম্পত্তির মূল্য বলা হয়েছিল ৯.২৮ কোটি টাকার। অর্থাত গত পাঁচ বছরে আড়াই কোটি টাকার বেশি সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে তাঁর।
নিজেদের স্বার্থেই রাজনৈতিক দলগুলি নোটা ভোট বা নান অব দ্য অ্যাবাভ ভোটের কোনও ক্ষমতাই নেই বলে প্রচার করে থাকে। অনেক ভোটারও মনে করেন পছন্দের প্রার্থী না থাকলেও নোটা-তে ভোট দেওয়া মানে ভোটটা নষ্ট করা। বস্তুত ভারতে এখনও নোটার ক্ষমতা বেঁধে রাখা হয়েছে। নোটাতে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়লেও পুনর্নির্বাচন হয় না, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওযা প্রার্থী জয়ী ঘোষিত হন। কিন্তু তারপরেও নোটা ভোটকে গুরুত্বহীন মনে করার কারণ নেই। ইতিহাসই এই ভোটের ক্ষমতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
বলা হয় প্রতিটি ভোটই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাধারণভাবে ভোট দানের মতো দারুণ গুরুত্বপূর্ণ পোস্টা ব্যালটও। কিন্তু গত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছে প্রতি ৫টিতে ১টি করে পোস্টাল ভোট বাতিল হয়েছে। অথচ এই ভোট দিয়ে থাকেন ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ভোটকর্মীদের থেকে শুরু করে ভোটের কাজে বা সীমান্তে প্রহারা দেওয়া সেনা ও পুলিষ কর্মীরা। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য এই ভোটদান প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব না দেওয়াতেই এই অবস্থা। তবে অনেক ভোট বিশেষজ্ঞের আবার অভিযোগ এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে কমিশন।
ভোটের এই তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানান, ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তিনি নরেন্দ্র মোদীকেই দেখতে চান। পাক প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য রীতিমতো বিস্ফোরকের মতো কাজ করেছে এই ভোটের বাজারে।