সংক্ষিপ্ত

অটিজম হল স্নায়বিক বিকাশ সংক্রান্ত একটি জটিল রোগ। শৈশব থেকেই মানুষ রোগের শিকার হয়ে থাকেন। সাধারণত এই রোগের ফলে মানুষের কথা বলার ক্ষেত্রে বা মনের ভাব প্রকাশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়, যার ফলে তাঁদের নানান ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। গোটা বিশ্বে প্রতিটি ১৬০ জন মানুষের মধ্যে একজন শিশু এই রোগে আক্রান্ত। 

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (Autism Spectrum Disorder) আক্রান্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ব জুড়ে ২রা এপ্রিল পালিত 'বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস (World Autism Day)।' এটি একটি মস্তিষ্ক জনিত রোগ যা মানুষের কথা বলার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা বা মানুষেরা সাধারণত সমাজ থেকে অনেকটাই চ্যুত কারণ শৈশব থেকেই এই রোগ মানুষের সামাজিক জীবন ও দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে থাকে। 

সাধারণত অটিস্টিক ডিজঅর্ডার (Autistic Disorder) একজন মানুষের ৩ বছর বয়স বা তার আগে শুরু হয়ে শেষ জীবন পর্যন্ত থাকতে পারে, যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যদি সংবেদনশীলভাবে তার যত্ন নেওয়া হয়  তাহলে উপসর্গ কমে যেতে পারে এবং তারা একটি সুন্দর সৃজনশীল কাটাতে পারে। এই রোগে আক্রান্তদের শৈশবেই ভবিষ্যতের সমস্যার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে উপসর্গগুলি কারও ক্ষেত্রে জন্মের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই দেখা দিতে পারে, আবার কারও ক্ষেত্রে তা জন্মের ২৪ মাস বা তারও পরে দেখা দিতে পারে। 

আরও পড়ুন- গরমে ত্বক অধিক তৈলাক্ত হয়ে যাচ্ছে? মেকআপ করার আগে এই কয়টি জিনিস মাথায় রাখুন

আরও পড়ুন- চুলের যত্ন নিন ঘরোয় উপায়, ব্যবহার করুন মেথি দিয়ে তৈরি তেল, রইল তেল তৈরির উপায়

আরও পড়ুন- বানিয়ে ফেলুন হোম জিম, জেনে নিন কোন কোন সরঞ্জাম রাখার অত্যাবশ্যক

অটিজমের লক্ষণ:

* এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত ১২ মাস বয়সেও তার নাম ধরে ডাকলে প্রতিক্রিয়া করে না। 
* এদের বয়স ১৮ মাস হয়ে গেলেও এরা খেলতে পারে না। 
* এই ধরণের শিশুরা খেলতে শিখলে সাধারণত অনেক খেলনার মাঝেও কেবল একটি খেলনা নিয়ে খেলতে বেশি পছন্দ করে। 
* বেশি লোকজন বা মেলামেশা করতে এরা খুব একটা পছন্দ করে না। 
* কেউ ডাকলে এরা সাধারণত সাড়া দেয় না, আপন মনে নিজের মত থাকতেই এরা বেশি পছন্দ করে। 
* এই ধরণের শিশুদের অন্য মানুষের অনুভূতি বুঝতে বা তাদের নিজস্ব অনুভূতি বোঝাতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। 
* এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা অনেক দেরিতে ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা অর্জন করে থাকে। 
* নিজেদের কথা বোঝাতে ছোট ছোট ভগ্ন শব্দ এরা বারবার ব্যবহার করে থাকে।
* কিছু শব্দ শুনে বা গন্ধ বা স্বাদ পেয়ে এরা প্রায়শই একটি অস্বাভাবিক আচরণ প্রকাশ করে থাকে।  
* কিছু কিছু সময় তারা আচমকাই তাদের দুই হাতে ঝাপটা মারতে থাকে, তাদের শরীর দোলাতে থাকে। 

অটিজমের কারণ:

এই রোগের কারণ সম্পর্কে এখন ও সঠিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায় নি ঠিকই তবে গবেষকরা এই রোগের পিছনে মূলত পারিবারিক এবং পরিবেশকে দায়ী করেছেন।  

জেনেটিক (Genetic) বা পরিবারগত কারণ: অনেক সময় পরিবার সূত্রে শিশুরা এই রোগের শিকার হয়ে থাকেন। যেমন কারও ক্ষেত্রে যদি পূর্ব পুরুষের বা পরিবারের অন্য কোনও ব্যাক্তি যার সঙ্গে পারিবারিক জিন সম্পর্কযুক্ত এমন কেউ এই রোগে আক্রান্ত থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও এই রোগ বিস্তারের সম্ভাবনা থাকে।  

পরিবেশগত (Environmental) কারণ: গবেষকরা মনে করেন যদি কোনও মহিলা অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন তাঁকে কোনও ভুল ওষুধ দেওয়া হয় তার ফলে এই রোগ দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি বায়ু দূষণকে এই রজার একটি কারণ বলে উল্লেখ করেছেন গবেষকরা।