সংক্ষিপ্ত

  • শুক্রবার রাতে উদ্ধব ঠাকরের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া পাকা হয়েছিল
  • শনিবার সকালে অজিত পওয়ারের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ
  • রাতারাতি কিন্তু এই ভারসাম্যের বদলটা ঘটেনি
  • ক্রিজে পড়ে থেকে খেলাটা ঘুরিয়েছেন অমিত শাহ

নাটকীয় মোড় বললেও কম বলা হয়। শুক্রবার রাতে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকার হওয়ার কথা প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। শরদ পওয়ার জানিয়েছিলেন, তাঁরা উদ্ধব ঠাকরেকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু পরদিন সকালে ভালো করে সকলের ঘুম ভাঙার আগেই এনসিপি-র সমর্থনে (অন্তত কাগজে) মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। আপাত দৃষ্টিতে এই ঘটনাকে যতই ইউটার্ন মনে হোক, রাতারাতি কিন্তু এই ভারসাম্যের বদলটা ঘটেনি। ক্রিজে পড়ে থেকে খেলাটা ঘুরিয়েছেন সেই বহু ভোটযুদ্ধের নায়ক বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

আরও পড়ুন - সরকার তো হল, টিকবে তো, নাকি তড়িঘড়িতে ভুল করে বসল বিজেপি

মহারাষ্ট্রের ভোটের ফলাফল বের হওয়ার পর থেকে রাজ্যে পা ফেলেননি অমিত শাহ। কিন্তু নেপথ্যে থেকে খেলাটা পুরোটাই পরিচালনা করেছেন তিনি, বিজেপি সূত্রে এটাই জানা যাচ্ছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত বিজেপি শিবসেনার জন্য তাদের দরজা খুলে রেখেছিল। তবে বিজেপি সভাপতি বিকল্প পরিকল্পনা ছকা শুরু করেছিলেন তারও এক সপ্তাহ আগে, ১০ নভেম্বর বিজেপি সরকার এককভাবে গঠন করবে না এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই। জানা গিয়েছে, এর জন্য নিজে না এসে অমিত শাহ তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি ভূপেন্দর যাদব-কে মহারাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন - পিছন থেকে ছুরি, ভাঙল পরিবারও, রাজনৈতিক উত্তাপে নজর কাড়ছে বোনের অভিমান

ঠিক হয়, শিবসেনা, কংগ্রেস-এনসিপি'র সঙ্গে যা করছে তা করে যাক। এতে সবার নজর তাদের উপরই থাকবে। তলে তলে এনসিপির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হবে। প্রাথমিকভাবে বিজেপি আত্মবিশ্বাসী ছিল শিবসেনার সঙ্গে এনসিপি-কংগ্রেস জোট কখনই দানা বাঁধবে না। কিন্তু গত এক সপ্তাহে অবস্থা পাল্টে যায়। মূল বাধা ছিলেন সনিয়া গান্ধী। শরদ পওয়ার রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের দিয়ে চাপ দিয়ে তাঁকেও রাজি করিয়ে নেন। এতেই চাপ বাড়ে বিজেপি শিবিরে।

আরও পড়ুন - বিধায়কদের সমর্থনপত্রের চূড়ান্ত অপব্যবহার, কোন কৌশলে দাঁও মাড়লেন অজিত পওয়ার

এরপরই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং অমিত শাহ নিজে অজিত পওয়ারের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। এরমধ্যে কিছু রহস্যজনক ঘটনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে ৪০ মিনিট ধরে বৈঠক করেন। আবার রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে মোদীর মুখে এনসিপি-র প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা রয়েছে সম্ভবত অজিত নয় শরদ পওয়ারের দিকেই প্রথমে হাত বাড়িয়েছিল বিজেপি।  

আরও পড়ুন - 'অ্যান্টি ডিফেকশন ল' কী, পওয়ার-হুমকি ফাঁকা আওয়াজ না সত্যিই খাদের মুখে 'দাদাপন্থী'রা

আবার এক কংগ্রেস নেতার দাবি মুম্বইয়ে কংগ্রেস-এনসিপি বৈঠকের সময়ই বেশ কয়েক ঘন্টার জন্য যোগাযোগ করা যায়নি অজিত পওয়ারর সঙ্গে। দিল্লির বৈঠকের সময়ও তিনি নাকি বেশ কিছুক্ষণের জন্য উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। যাইহোক, বিজেপি সূত্রে খবর শুক্রবার শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস বৈঠক চলাকালীনই অমিত শাহ সিদ্ধান্ত নেন বসে বসে দেখার সময় ফুরিয়েছে, এবার কাজ করতে হবে।  

আরও পড়ুন - একরাতে 'মুখ্যমন্ত্রী বদল', কীভাবে সরকার গঠন মহারাষ্ট্রে, দেখুন তার সময় সারণী

রাতেই ফের ভূপিন্দর যাদব আসেন মুম্বইয়ে। ফের যোগাযোগ করা শুরু হয় অজিত পওয়ারের সঙ্গে। শিবসেনার এক নেতা দাবি করেছেন, শুক্রবার রাতের বৈঠকে অজিত পওয়ারের হাবভাব সুবিধের ছিল না। চোখের চোখ রেখে কথা লতে পারছিলেন না। বৈঠকের পর তড়িঘড়ি বেড়িয়ে যান। বলেছিলেন, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলবেন। শিবসেনা, কংগ্রেস এমনকী এনসিপিরও সন্দেহ, সেই সময়ই অজিতের সঙ্গে সরকার গঠনের 'ষড়যন্ত্র' করেছিল বিজেপি।

আরও পড়ুন - অজিত পাওয়ারকে ব্ল্যাকমেইলিং করা হয়েছিল, ফের বিস্ফোরক সঞ্জয় রাউত

দেখুন ভিডিও - সব হিসেব উল্টে মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন ফড়নবীশ

দেখুন ভিডিও - দরকার নেই 'খিচুড়ি' সরকারের, মসনদে বসেই শিবসেনাকে তোপ ফড়নবীশের

দেখুন ভিডিও - বিজেপিকে সমর্থন দিয়ে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী শরদ পাওয়ারের ভাইপো, দরকার স্থায়ী সরকার, সাফাই অজিতের