Health News: চেনা কিছু সাপ্লিমেন্টেই লুকিয়ে বিপদ। রোজ খেতে থাকলে অজান্তেই ক্ষতি হবে হার্ট, লিভারের। কোন কোন সাপ্লিমেন্ট চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে খাবেন না জেনে নিন।
Protein Supplement: আজকাল অনেকের অভ্যাস—জ্বর নেই, সর্দি নেই, রক্তপরীক্ষার রিপোর্টও কেউ দেখেননি, তবু ‘স্বাস্থ্য ভালো রাখতে’ প্রতিদিন কয়েক রকম সাপ্লিমেন্ট গিলে ফেলা। যেন এগুলো না খেলেই শরীর ভেঙে পড়বে! অথচ চিকিৎসকেরা বলছেন, এই অভ্যাসই অনেক ক্ষেত্রে নীরবে বড় বিপদ ডেকে আনছে। আয়রন, ভিটামিন ডি, ম্যাগনেশিয়াম—নাম শুনলেই মনে হয় এগুলো তো সাধারণ পুষ্টি উপাদান, একটু-আধটু খেলে ক্ষতি কী! এখানেই ভুল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুল ডোজ, ভুল সময়ে অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এগুলো খেলে শরীরের ভিতরে এমন কিছু গোলমাল শুরু হয়, যা বোঝার আগেই জটিল রোগের দিকে এগোতে হয়।
কেন বাড়ছে সাপ্লিমেন্টের নেশা?
ক্লান্তি একটু বেশি হচ্ছে, রাতে ঘুম ভাঙছে, শরীরে ব্যথা… এই সামান্য উপসর্গ দেখলেই অনেকে নিজে থেকেই ওষুধের দোকান থেকে সাপ্লিমেন্ট কিনে নেন। দাম কম, সহজলভ্য আর সঙ্গে ইন্টারনেটে হাজার তথ্য—এসব মিলেই ভুল অভ্যাস তৈরি করে ফেলছে। অথচ এই তিনটি সাপ্লিমেন্টই ভুল ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
- ম্যাগনেশিয়াম গ্লাইসিনেট: ঘুমের ওষুধ নয়। অনেকেই ঘুম বাড়াতে বা উদ্বেগ কমাতে রাতে এই সাপ্লিমেন্ট খান। সত্যিই কিছু ক্ষেত্রে এটি কাজে আসে, কিন্তু গ্লাইসিনেট শরীরে জমা হলে শুরু হয় পেটের সমস্যা, ডায়েরিয়া বা তীব্র অ্যাসিডিটির মতো উপসর্গ। সবচেয়ে বড় বিপদ—কিডনি ক্ষতি। ডায়াবিটিস বা কিডনি রোগে আক্রান্তরা নিয়মিত খেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
- ভিটামিন ডি: বেশি মানেই ভালো নয় ভিটামিন ডি ক্যালশিয়াম শোষণ বাড়ায়। কিন্তু মাত্রা বেশি হলে রক্তে ক্যালশিয়াম জমতে থাকে। তৈরি হয় হাইপারক্যালশেমিয়া—বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, খিদে কমে যাওয়া, এমনকি কিডনিতে পাথর। অনেকে প্রায় প্রতিদিনই ভিটামিন ডি খেয়ে থাকেন, অথচ শরীরে আসল ঘাটতি রয়েছে কি না তা তাঁরা জানেনই না।
- আয়রন ট্যাবলেট: অতিরিক্ত আয়রন বিষের মতো। আয়রনের অভাব থাকলে এটি প্রয়োজনীয়। কিন্তু অতিরিক্ত আয়রন শরীরে জমে গেলে হার্ট ও লিভারের ক্ষতি হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে তো বিষক্রিয়ার আশঙ্কাই থাকে! আয়রনের ঘাটতি আছে কি না—তা রক্তপরীক্ষা ছাড়া জানা যায় না। তাই ইচ্ছে হলেই এ ওষুধ খাবেন না।
তাহলে কী করবেন?
শরীরে কোনও পুষ্টির ঘাটতি হলে তার স্পষ্ট লক্ষণ থাকে। সন্দেহ হলে আগে রক্তপরীক্ষা করুন। চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার ও সাপ্লিমেন্ট ঠিক করুন। খাবার থেকেই যে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায়—তা ভুললে চলবে না। পালং শাক, কুমড়োর বীজ, ব্রকোলি, ড্রাই ফ্রুট, ডাল, ছোলা, মুরগির মাংস, মাছ, ডিম—এসব নিয়মিত খেলে অনেক ক্ষেত্রেই সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন পড়ে না। স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাপ্লিমেন্ট নয়—সঠিক জ্ঞানই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


