শীতকালে বয়স্কদের শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যাওয়ায় হাইপোথার্মিয়ার মতো স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়স্কদের গরম ও সুরক্ষিত রাখার ৮টি কার্যকরী উপায় আলোচনা করা হয়েছে।

শীতকাল সব বয়সের মানুষের জন্যই বেশ কঠিন। কিন্তু বয়স্কদের জন্য শীত আরও বেশি কষ্টদায়ক হয়। আসলে, এই মরসুমে বয়স্কদের শরীরের তাপমাত্রা তরুণদের তুলনায় দ্রুত কমে যায়। ফলে তাদের জন্য শীত সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। এটি মূলত বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেটাবলিজম রেট স্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণে হয়, যার ফলে শরীর কম তাপ উৎপন্ন করে।

যদি কোনো ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ৩৭°C-এর নিচে নেমে যায়, তাহলে হাইপোথার্মিয়ার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। হাইপোথার্মিয়া হলো অস্বাভাবিকভাবে কম শারীরিক তাপমাত্রার কারণে সৃষ্ট একটি অবস্থা এবং এটি তখন শুরু হয় যখন শরীরের তাপমাত্রা ৩৫°C-এর নিচে নেমে যায়। এছাড়া, এই মরসুমে বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে পড়ে। ঠান্ডার কারণে গাঁটে ব্যথা, সর্দি-কাশি বা রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, কিছু সহজ उपाय অবলম্বন করে আপনি আপনার বাড়ির বয়স্কদের গরম ও সুরক্ষিত রাখতে পারেন।

শীতে সুরক্ষিত ও গরম থাকার জন্য পরামর্শ

গরম কাপড়ের যত্ন নিন

বয়স্কদের সবসময় স্তরে স্তরে বা লেয়ারিং করে পোশাক পরান বা পরতে বলুন। যেমন থার্মাল, সোয়েটার, মাফলার, মোজা এবং টুপি। এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বাড়ির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন

ঘরে পর্যাপ্ত উষ্ণতা বজায় রাখতে হিটার বা ব্লোয়ার ব্যবহার করুন, তবে বাতাসকে খুব বেশি শুষ্ক হতে দেবেন না। পাশাপাশি, ঘরে হালকা রোদ আসতে দিন। বাড়ির তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখুন।

ফ্লু-এর টিকা নিন

ফ্লু-এর টিকা গুরুতর অসুস্থতা থেকে বাঁচার একটি নিরাপদ এবং কার্যকর উপায়। কারণ বয়স্কদের জন্য ফ্লু খুব বিপজ্জনক হতে পারে। শীতকালে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

সুষম ও গরম খাবার দিন

শীতে বয়স্কদের উষ্ণতা দেবে এমন খাবার, যেমন স্যুপ, হলুদ মেশানো দুধ, আদা-রসুন খাওয়ান। এটি শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ড্রাই ফ্রুটসও সীমিত পরিমাণে দিন। সবসময় গরম জল পান করতে উৎসাহিত করুন। ঠান্ডা জল থেকে দূরে রাখুন।

ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করান

বয়স্কদের জন্য ঠান্ডা জল বিপজ্জনক। পান করার পাশাপাশি স্নানের জন্যও গরম জল দিন। বাথরুমে গিজার লাগিয়ে দিন যাতে তারা এটি ব্যবহার করতে পারে।

ওষুধ ও ডাক্তারি পরীক্ষার খেয়াল রাখুন

সময়মতো ওষুধ দিন এবং ডাক্তারের কাছে রুটিন চেকআপ করান। শীতে রক্তচাপ এবং সুগার লেভেলের উপর নজর রাখা জরুরি।

গরম তেল দিয়ে মালিশ করুন

ঠান্ডা বাতাস ত্বককে শুষ্ক করে তোলে, তাই ময়েশ্চারাইজার বা নারকেল তেল দিয়ে মালিশ করুন। এতে ত্বক নরম ও স্বাস্থ্যকর থাকে। এছাড়া বয়স্কদের গরম তেল দিয়ে মালিশ করতে থাকুন।

হালকা ব্যায়াম জরুরি

সকালের হালকা রোদে হাঁটা বা যোগব্যায়াম করলে গাঁটের ব্যথা কমে এবং শরীর সক্রিয় থাকে। বয়স্কদের সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে যান এবং তাদের সাথে যোগব্যায়াম করুন।