সোমবার মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন নিয়ে নাটক দশদিনে পড়ছে। আর ওই দিনই মহানাটক পৌঁছে যাচ্ছে ভারতের রাজধানীতে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বাছাই দেবেন্দ্র ফড়নবিশ দেখা করবেন অমিত শাহ-এর সঙ্গে। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সাক্ষাত করার কথা সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছিল গত ২৪ অক্টোবর। তারপর থেকে সরকার গঠন নিয়ে নাটক দশদিনে পড়ল। আর দশম দিনে অর্থাৎ সোমবার এই মহানাটক পৌঁছে যাচ্ছে ভারতের রাজধানীতে। এই নাটকের দুই মুখ্য চরিত্র, বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার দুজনেই পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করবেন শরদ পওয়ার। আর এই পওয়ার প্লে-তে শিবসেনার রান তোলা আটকাতে অমিত শাহ-এর দ্বারস্থ হচ্ছেন দেবেন্দ্র পড়নবিশ। সরকারিভাবে ফড়নবিশ-শাহ'এর এই বৈঠকের বিষয় বস্তু মহরাষ্ট্রের খরা আক্রান্ত এলাকার কৃষকদের ত্রাণ বন্টন সংক্রান্ত পদক্ষেপ হলেও, দলীয় সূত্রে খবর দুই নেতার আলোচনার মুখ্য বিষয় হতে যাচ্ছে মহারাষ্ট্রে দলের পরবর্তী পদক্ষেপ।
মহারাষ্ট্রে এইবার নির্বাচনে জোট গড়েই লড়েছিল দুই এনডিএ শরিক শিবসেনা ও বিজেপি। কিন্তু ফল বের হওয়ার পর থেকেই ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে দুই দল। শিবসেনা একদিকে স্পষ্ট করে দিয়েছে মুখ্য়মন্ত্রীর চেয়ারেও ৫০-৫০ ফর্মুলা মেনেই ভাগ চাই তাদের। অন্যদিকে বিজেপির বক্তব্য ৫০-৫০ ফর্মুলার মতো কোনও প্রতিশ্রুতি শিবসেনাকে দেয়নি তারা। দুই দলের কেউই নিজেদের অবস্থাব থেকে একচুল না সরায় এক অদ্ভূত অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যে।
গত দুই দিনে অবশ্য দুই দলের কেউই নতুন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ফড়নবিশ ও উদ্ধব ঠাকরে, দুইজনেই আপাতত খরা আক্রান্ত এলাকাগুলিতে সফর করছেন। কিন্তু এরমধ্যেই শিবসেনা এনসিপি নেতাদের সঙ্গে তলে তলে আলাপ আলোচনা চালিয়ে বিজেপি-কে কড়া বার্তা দিয়ে রেখেছে। রবিবার এনসিপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারকে মেসেজ করেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। জবাবে রাউত-কে তিনি ফোন করবেন বলে জানিয়েছেন অজিত পওয়ার।
এনসিপি প্রথম থেকেই মহারাষ্ট্রে বিরোধী আসনে বসবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা যে শিবসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তাও ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দিয়েছে। সেই ক্ষেত্রে তারা বাইরে থেকে কংগ্রেসের সমর্থন চাইতে পারে। রাজ্যে কংগ্রেসের বিজয়ী সাংসদদের প্রায় সকলেরই এই পদক্ষেপে সায় রয়েছে। তবে বাধ সেধেছেন স্বয়ং সনিয়া গান্ধী। তিনি মনে করছেন শিবসেনাকে সমর্থন দিলে কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে।
কাজেই শরদ পওয়ার-এর সঙ্গে তাঁর সোমবারের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সনিয়া রাজি হলে শিবসেনা কী করে সেই দিকেও নজর থাকবে সকলের। আর পওয়ারের এই খেলা আটকাতে অমিত শাহ-ই বা দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে কী পরামর্শ দেন, তাও কৌতূহলের বিষয় হতে চলেছে। সব মিলিয়ে শেষ ধাপে এসে কিন্তু দারুণ জমে উঠেছে মহরাষ্ট্রের মহানাটক।