করোনাভাইরাস এখনি যাওয়ার নয়, ভয় বাড়িয়ে দিল বিজ্ঞানীদের হিসাব

বিশ্বজুড়ে লকডাউন প্রোটোকল জারি করা হচ্ছে

কাজকর্ম বন্ধ করে সবাই বাড়িতে বসে

আর কতদিন কাটাতে হবে এভাবে

ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে গবেষকদের হিসাব

amartya lahiri | Published : Mar 18, 2020 4:39 PM IST

শুরুটা হয়েছিল চিনের উহান শহরে। কিন্তু গত কয়েক মাসে করোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যপী। প্রতিদিনই নতুন নতুন সাম্রাজ্য স্থাপন করছে সে। বুধবার রাত পর্যন্ত এই ভাইরাস সংক্রমণের বলি হয়েছেন ৮,২৭২ জন। শুধু ভারতেই মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের আর আক্রান্তের সংখ্যা এদিন ১৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে বিশ্বের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির দেশে সংক্রমণ ঠেকাতে সম্পূর্ণ লকডাউন প্রোটোকল জারি করা হয়েছে।

অর্থাৎ, শপিং মল, বার, পাব, জিম, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সব বন্ধ। খোলা রাখা হয়েছে শুধু কিছু ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে মানুষকে যতটা সম্ভব বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, ভারতেও যেখানে এখনও পর্যন্ত 'সম্প্রদায়ের সংক্রমণ'-এর প্রমাণ মেলেনি, সেখানেও একের পর এক রাজ্যে মল, বার, জিম এবং অন্যান্য গণজমায়েত হওয়ার মতো জায়গা স্থান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গাতেই কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে অনলাইনে।  

এই স্ব-বিচ্ছিন্নতা বা সামাজিক দূরত্বই এই ভয়ানক ছোঁয়াচে রোগের সংক্রমণ ঠেকানোর একমাত্র উপায় বলে মেনে নিয়েছেন সারা বিশ্বের সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, এছাড়া এখনও ভাইরাসটি সম্পর্কে তাঁরা অন্ধকারেই আছেন। অন্তত বছর দুয়েক-এর আগে কোনও নিরাময়ক টিকা বা ভ্যাকসিন তৈরি করা যাবে না। কিন্তু তাহলে এই অবস্থাটা কতদিন চলবে? কতদিন বজায় রাখতেো হবে এই স্ব-বিচ্ছিন্নতা বা সামাজিক দূরত্ব?

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের একদল গবেষক এই প্রকোপটি কীভাবে ছড়াচ্ছে এবং কীভাবে এ মোকাবিলা করা যাবে, তা বোঝার জন্য একাধিক কম্পিউচার সিমুলেশন করেছেন। অর্থাৎ এখনকার সংক্রমণের গাদা গাদা তথ্য সংগ্রহ করে কম্পিউটারের মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ করে, ভবিষ্যতে সংক্রমণ কী আকার নিতে পারে সেই সম্পর্কে ধারণা তৈরি করেছেন। আর তাতেই এতদিনের ধারণা অনেকটাই বদলে দিয়েছে।

এতদিন মনে করা হচ্ছিল এটা কয়েক সপ্তাহের বিষয়। কয়েকটাদিন কষ্ট করে সামাজিক মেলামেশা এড়িয়ে থাকতে পারলেই রোগের প্রাদুর্ভাব কমে আসবে। তারপর আবার সব আগের মতো হয়ে যাবে। কিন্তু, এই নতুন তথ্য বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যাচ্ছে, এই সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্নতা সম্ভবত এক বছরের বেশি সময় ধরে বজায় রাখতে হবে। এরমধ্যে কোনও টিকা বা ওষুধ বের হলে অন্য কথা। তবে তা যতক্ষণ না পাওয়া যাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত সংক্রমণ এড়ানোর একমাত্র উপায় হ'ল নিজেকে বিচ্ছিন্ন করা। এছাড়া গবেষকরা জানিয়েছেন, যদি সবাই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যান, সেই ক্ষেত্রে যে বিপর্যয় তৈরি হবে, তাতে স্বাস্থ্য় পরিষেবা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা এখনও বিশ্বের কোনও দেশে নেই। তাই, সামাজিক দূরত্ব স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থাগুলির ভার লাঘবও করছে।

 

Share this article
click me!