রানি হওয়ার কথা ছিল না কখনও, তবুও কীভাবে সিংহাসনে আসীন হয়েছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ? তাঁর জীবনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অজানা তথ্য।
৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, প্রয়াত হলেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। রানি এলিজাবেথের মৃত্যুতে ব্রিটেনের রাজ পরিবার জুড়ে শোকের ছায়া। রানির মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে বাকিংহাম প্যালেসের তরফ থেকে দেওয়া হয় টুইট বার্তা।
দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের রাজপরিবারের এমন এক সদস্যা, যিনি রাজরানি হিসাবে ব্রিটেনের মসনদে আসীন ছিলেন সবচেয়ে বেশিদিন। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ছিলেন অধিষ্ঠান করেছিলেন ব্রিটিশ মসনদে। ২০১৫ সালেই রানি ভিক্টোরিয়ার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। গত বছরই হারিয়েছেন স্বামী ফিলিপ মাউন্টব্যাটেনকে। ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে জন্ম নেওয়া এলিজাবেথ সারা জীবন ধরে বিশ্ব রাজনীতির বহু ওঠাপড়া প্রত্যক্ষ করেছেন। তাঁর কার্যকালে ব্রিটেনের নিয়মতান্ত্রিক প্রধান হিসাবে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন ১৫ জন। আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসেছেন ১৪ জন। তাঁর জীবনাবসানে ব্রিটেন জুড়ে এক বিরাট অধ্যায়ের শূন্যতা তৈরি হল।
দ্বিতীয় এলিজাবেথের কিন্তু কোনও দিনই রানি হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু, তাঁর সিংহাসনে বসার ইতিহাসটি অনেকটা গল্পের মতোই। তাঁর বাবা প্রিন্স অ্যালবার্ট, ডিউক অব ইয়র্ক ছিলেন রাজা পঞ্চম জর্জের ছোট ছেলে। রাজা হওয়ার কথা ছিল বড় ছেলে অষ্টম এডওয়ার্ডের । কিন্তু, এক বিবাহ-বিচ্ছিন্নাকে বিয়ে করার কারণে অষ্টম এডওয়ার্ড রাজা হতে পারেননি। ১৯৩৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্রিটেনের রাজা হন এলিজাবেথের বাবা প্রিন্স অ্যালবার্ট। এরপর রানি হিসেবে দ্বিতীয় এলিজাবেথের অভিষেক হয় ১৯৫৩ সালের ২ জুন। গ্রেট ব্রিটেন এবং উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের রাজদণ্ড হাতে তুলে নেন তিনি।
জীবদ্দশায় কোনও দিন সংবাদ মাধ্যমকে কোনও সাক্ষাৎকার দেননি ব্রিটেনের রানি। রাজ পরিবারের কর্তব্য পালন করতে গিয়ে নিজের সন্তানদের সারাজীবন অবহেলা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে বারবার। পূর্বতন ব্রিটিশ শাসকদের রক্ষণশীলতা ভেঙে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের কমনওয়েলথ সফর এবং ১৯৬১ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ সফরে এসেছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ১৯৫১ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজা অ্যালবার্ট। তখন থেকে বাবার প্রতিনিধিত্ব করতে যে রাজকার্যের ভার কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন আদরের কন্যা লিলিবেথ, সেই দায়ভার প্রায় একাত্তর বছর ধরে নিরলস পালন করে গেলেন তিনি। পথে এসে বহু সমালোচনা এবং বিতর্ক, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত কিছু সামাল দিয়েছেন মুখ বুজে থেকেই। তাঁর মৃত্যুতে প্রায় বর্ণহীন হয়ে পড়ল ব্রিটেনের রাজ-ঐতিহ্য।
আরও পড়ুন-
গুটিকয়েক বন্ধু মিলে শুরু হয়েছিল পুজো, হাটখোলা গোঁসাইপাড়ার দুর্গা আরাধনার ‘যাত্রাপথ’ এবছর পা দিচ্ছে ৮৬ বছরে
মা কেন ‘অশুচি’? লালবাগান সার্বজনীনে এবছর একেবারে ভিন্ন রূপে দুর্গার উপাখ্যান
সর্বভারতীয় NEET পরীক্ষায় ভারতের মধ্যে ২২তম স্থান দখল, বাংলা মাধ্যমে পড়েই ডাক্তারির পথে মহিষাদলের দেবাঙ্কিতা