তাহলে সবকটি বোর্ড পরীক্ষা কি গুরুত্বহীন হয়ে গেল, প্রশ্ন ওঠে। এর জবাব বুধবার দেন ইউজিসি চেয়ারম্যান।
কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট। সারা দেশে হইচই পড়েছিল এই পরীক্ষার ঘোষণায়। বলা হয়েছিল এবার থেকে কলেজে ভর্তি হতে গেলে একটিই সাধারণ পরীক্ষা দিতে হবে। উচ্চমাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে কলেজে ভর্তি আর হবে না। ইউজিসি অর্থাৎ ইউনিভির্সিটি গ্রান্ট কমিশন জানায়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমস্ত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে স্নাতকস্তরে পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য নতুন কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট (Common University Entrance Test) বা CUET স্কোর ব্যবহার করতে হবে।
এরপরেই বিতর্ক তৈরি হয়। তাহলে সবকটি বোর্ড পরীক্ষা কি গুরুত্বহীন হয়ে গেল, প্রশ্ন ওঠে। এর জবাব বুধবার দেন ইউজিসি চেয়ারম্যান জগদেশ কুমার। তিনি বলেন সিইউইটি বা কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট কোনও বোর্ড পরীক্ষায় বাধা তৈরি করবে না। এমনকী কোচিং সংস্কৃতিতেও কোনও আঘাত হানবে না এই পরীক্ষা।
ইউজিসির তরফ থেকে জানানো হয়েছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ), যা মূলত পরীক্ষা পরিচালনা করে, পরবর্তী সেশন থেকে বছরে দুবার সিইউইটি পরিচালনা করার বিষয়ে বিবেচনা করবে। পিটিআই-কে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে, ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন যে সিইউইটি শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না কারণ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা স্নাতক ভর্তির জন্য সাধারণ প্রবেশিকা পরীক্ষা থেকে স্কোর ব্যবহার করার জন্য বোর্ডে আসতে চায়।
চেয়ারম্যান জানান, "সিইউইটি যেহেতু এই বছরই প্রথম শুরু হচ্ছে, তাই এবছর একবারই পরীক্ষাটি নেওয়া হবে। তবে NTA পরবর্তী সেশন থেকে বছরে অন্তত দুবার পরীক্ষা পরিচালনা করার কথা বিবেচনা করবে। প্রবেশিকা পরীক্ষা শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতেও থাকবে।”
তিনি আরও বলেন টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস (টিআইএসএস) এবং জামিয়া হামদর্দ সহ আটটি ইউনিভার্সিটিও শিক্ষার্থীদের স্নাতক কোর্সে ভর্তির জন্য সিইউইটির স্কোর ব্যবহার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এই আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং পরিচালকদের সাথে একটি বৈঠক হয়েছে ইউজিসির। তবে যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইউইটি গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের নাম বলেনি এই কেন্দ্রীয় সংস্থা।
গত সপ্তাহে ইউজিসি ঘোষণা করেছিল যে ক্লাস টুয়েলভের স্কোর নয়, ৪৫টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাধ্যতামূলক হবে CUET স্কোর। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাদের ন্যূনতম যোগ্যতার মানদণ্ড ঠিক করতে পারবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে।
ইউজিসির চেয়ারম্যান জানান, পরীক্ষার জন্য কোন কোচিং প্রয়োজন হবে না তাই এটি কোচিং সংস্কৃতিকে ধাক্কা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। পরীক্ষা সম্পূর্ণরূপে দ্বাদশ শ্রেনীর সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে হবে। পরীক্ষায় একাদশ শ্রেনীর সিলেবাস থেকেও প্রশ্ন থাকবে কিনা তা নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী উদ্বিগ্ন।
ইউজিসি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য বোর্ডের শিক্ষার্থীদের কোন অসুবিধা হবে না এবং পরীক্ষাটি সমস্ত বোর্ডের শিক্ষার্থীদের সমান ভাবে সুযোগের জায়গা রাখবে। গ্রামীণ এলাকার শিক্ষার্থীরা আঞ্চলিক ভাষায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, বিভিন্ন অর্থনৈতিক পটভূমি থেকে আসে এবং ভৌগলিকভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কথা মাথায় রেখে এই পরীক্ষা হবে। এরই সঙ্গে ইউজিসি প্রধান এই আশঙ্কা প্রত্যাখ্যান করেছেন যে এই পরীক্ষা বোর্ড পরীক্ষাকে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলবে।