প্রখরের বয়স মাত্র ২৬ বছর। তাঁর বাবা রাকেশ জৈন। কোতওয়ালি সদর এলাকায় তাঁর একটি মুদির দোকান রয়েছে। আর মা গৃহবধূ। প্রখরের বড় হওয়া ললিতপুরেই। সেখান থেকে হাইস্কুলের পড়া শেষ করেছিলেন তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁর বাবা তাঁকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শহরে। আইআইটি কানপুর থেকে বি.টেক পাশ করেন।
প্রখর জৈন (Prakhar Jain), ইউপিএসসি টপারদের (UPSC Topper) মধ্যে একজন। ২০২০ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় (UPSC Exam) তিনি ৯০ তম স্থান দখল করেছেন। যদিও তাঁর এই যাত্রাপথ একেবারেই সুগম ছিল না। অনেক ওঠা পড়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু, কথায় বলে যে ইচ্ছে থাকলে যে কোনও কাজই সম্ভব হয়, আর সেটাই একবার প্রমাণ করে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ললিতপুরের (Lalitpur) বাসিন্দা প্রখর। চতুর্থ বারের (4th Time) চেষ্টায় ইউপিএসসিতে ৯০ তম স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছেন। এই চাকরির পরীক্ষায় বসার জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেছে তা এশিয়ানেট নিউজের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন তিনি।
প্রখরের বয়স মাত্র ২৬ বছর। তাঁর বাবা রাকেশ জৈন (Rakesh Jain)। কোতওয়ালি সদর এলাকায় তাঁর একটি মুদির দোকান (grocery store) রয়েছে। আর মা গৃহবধূ। প্রখরের বড় হওয়া ললিতপুরেই। সেখান থেকে হাইস্কুলের পড়া শেষ করেছিলেন তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁর বাবা তাঁকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শহরে। আইআইটি কানপুর থেকে বি.টেক পাশ করেন। তারপর চলে গিয়েছিলেন দিল্লিতে। সেখানে তাঁর ছোট ভাই প্রতীক থাকে। সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন প্রখর। মোটা মাইনের চাকরি হলেও তাঁর মন বসছিল না সেখানে। এরপর ঠিক করেন সিভিল সার্ভিসের দিকে যাবেন। এই মনস্থির করার পরই সঙ্গে সঙ্গে চাকরি ছেড়ে দেন। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন- ২০ লক্ষ টাকার প্যাকেজের চাকরির দিকে ফিরেও তাকাননি,জানুন ইউপিএসসি পরীক্ষার এই কৃতীর কথা
কিন্তু, সাফল্য খুব সহজে আসেনি। পড়াশোনা ভালো করে করলেও প্রথম দু'বার এই পরীক্ষায় বসে তাঁকে ব্যর্থ হতে হয়েছিল। প্রথম দু'বারে প্রিলিমিনারি পরীক্ষাই ক্লিয়ার করতে পারেননি। তবে ব্যর্থ হলেও হেরে যাননি। চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। মনকে আরও শক্ত করেছেন তিনি। এরপর তৃতীয় বারে কিছুটা হলেও সাফল্য পেয়েছিলেন। ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৬৯৩ স্থান অধিকার করেন তিনি। তার ফলে ডিফেন্স অ্যাকাউন্ট সার্ভিসের ক্যাডার হন। কিন্তু, জীবন থেকে আরও বেশি কিছু প্রত্যাশা ছিল প্রখরের।
সেই চকরিতে কয়েকদিনের জন্য যোগ দিয়েছিলেন প্রখর। তবে বেশিদিন থাকতে পারেননি। ঠিক করেন তাঁকে আরও পড়তে হবে। যার ফলে মনের মতো চাকরি তিনি পেতে পারেন। এরপর আরও ভালো করে নিজেকে প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত নেন। চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে নেন তিনি। শুরু করেন প্রস্তুতি।
তবে তখন করোনার জন্য লকডাউন হয়ে যায় কোনও কোচিং ক্লাসে পড়তে যেতে পারেননি প্রখর। অগত্যা নিজের উপরই তাঁকে ভরসা রাখতে হয়েছিল। দিনে প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা পড়াশোনা করেন তিনি। কোচিংয়ের সুবিধা না থাকায় বই ও গুগলের সাহায্য নিয়েছিলেন। তার মাধ্যমেই পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন।
প্রতিদিন সকাল ৭টার সময় ঘুম থেকে উঠে পড়তেন প্রখর। এরপর যতক্ষণ উচ্ছে হত পড়াশোনা করতেন। তাঁর মতে, সাফল্য পাওয়ার জন্য মন দিয়ে পড়াশোনা করা খুবই প্রয়োজন। তার মাধ্যমেই একমাত্র সাফল্যকে পাওয়া সম্ভব। অবশেষে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সাফল্য পান প্রখর। এই পরীক্ষায় ৯০ স্থান দখল করেন। তবে এই সাফল্যের পিছনে বাবা-মায়ের অনেক অবদান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।