জীবানুমুক্ত করতে রাসায়নিক-স্নান, যোগী-রাজ্যে চোখ হারানোর দশা পরিযায়ী শ্রমিকদের

খালি পেটে পায়ে হেঁটে ভিন রাজ্য থেকে ঘরে ফিরছিলেন তাঁরা

নিজেদের জেলায় পৌঁছেই অদ্ভূত পরিস্থিতিতে পড়তে হল

বিষাক্ত রাসায়নিক দিয়ে তাদের স্নান করানো হল

তারপরই তাঁরা চোখ জ্বালার অভিযোগ করেছেন

 

amartya lahiri | Published : Mar 30, 2020 1:13 PM IST

খালি পেটে পায়ে হেঁটে ভিন রাজ্য থেকে ঘরে ফিরেই অদ্ভূত পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছিল একদল পরিযায়ী শ্রমিককে। যোগী রাজ্যের কিছু অতিসক্রিয় অফিসার ওই শ্রমিকদের 'জীবানুমুক্ত' করার উদ্দেশ্য়ে এদিন তাদের উপর একধরণের রাসায়নিক স্প্রে করেন। এই নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রবল বিতর্ক দেখা দিয়েছে। চাপের মুখে যোগী প্রশাসন অবশ্য এটা অতি সক্রিয় কিছু অফিসারের কীর্তি বলে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।  

ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার। দেশব্যাপী লকডাউন হওয়ার পর, বেশ কিচু অভিবাসী শ্রমিক কয়েক মাইল পথ হেঁটে বেরিলিতে পৌঁছেছিলেন। একটি ৩১ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপে দেখা গিয়েছে এরপরই হ্যাজম্যাট স্যুট পরা কয়েকজন লোক, মাটিতে বসে থাকা ওই অভিবাসী শ্রমিকদের উপর কিছু 'রাসায়নিক' স্প্রে করছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ-ও। শ্রমিকদের চোখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিতে শোনা যায় তাদের।

ওই ঘটনার পরপরই কয়েকজন মহিলা ও শিশু-সহ বেশ ওই অভিবাসী শ্রমিকদের বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন তাদের চোখ জ্বালা করছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও এবং ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সঙ্গে সঙ্গেই শিশু অধিকার সংস্থা এনসিপিসিআর এবং বিরোধী দলগুলি ওই সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।

এদিন চাপের মুখে বেলিরির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নীতীশ কুমার এটা 'অতি-সক্রিয়' কিছু অফিসারের কাজ বলে দাবি করে, সরকারের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর দাবি বেরিলি নগর নিগম ও দমকল বিভাগ-কে ওই শ্রমিকের দল যেসব বাসে এসেছিলেন সেই বাসগুললি জীবানুমুক্ত করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, তারা সেই বাস স্যানিটাইজ করার রাসায়নিক দিয়েই শ্রমিকদের রীতিমতো চান করিয়ে দেন। তিনি আরও জানান, ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা চলছে বলেও জানান তিনি। উত্তরপ্রদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও জেলাশাসকের বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করেছে।

এর আগে শিশু অধিকার সংস্থা এনসিপিসিআর এটি অমানবিক কাজ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। জেলাশাসককে তারা তিন দিনের মধ্যে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে। বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে অবিলম্বে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে লকডাউন চলাকালীন অভিবাসী শ্রমিকদের শিশুদের খাদ্য, আশ্রয় এবং সুরক্ষা এবং তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে তারা।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব জিজ্ঞাসা করেছিলেন এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনও অনুমোদন আছে কিনা সেই প্রশ্ন তোলেন। উত্তরপ্রদেশের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও তথা বসপা সুপ্রিমো মায়াবতী প্রশাসনের এই কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রও রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ এই শ্রমিকদের আর সমস্যা না বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন।

 

Share this article
click me!