চলতি বছরের শুরুতেই করোনার টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। অ্যাস্ট্রা জেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন ও স্পুটনিকের টিকা নেওয়ার পর অনেকের শরীরেই রক্ত জমাট বেঁধেছে বলে জানা গিয়েছে। তারপরই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যদিও টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বাঁধার পিছনে টিকাকরণের কৌশল দায়ি থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাঁদের দাবি, সঠিক পদ্ধতি মেনে শরীরে টিকা না দেওয়ার ফলেই রক্ত জমাট বেঁধেছে। এতে টিকার কোনও দোষ নেই।
আরও পড়ুন- কোভিডের বিরুদ্ধে ৭৭.৮ শতাংশ কার্যকর কোভ্যাকসিন, তথ্য প্রকাশ তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের
সম্প্রতি জার্মানির মুনিচ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইটালির একটি গবেষণা কেন্দ্রের তরফে ইঁদুরের উপর একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে টিকা দেওয়ার সময় সঠিক কৌশল মানেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর সেই কারণে টিকার সূচ পেশী পর্যন্ত না পৌঁছে ধমনী পর্যন্ত পৌঁছায়। আর সেখানেই ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ওষুধ দেওয়া হয়। তার ফলেই অনেক সময় রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
আরও পড়ুন- ৯৭ দিন পর দেশে ৫ লক্ষের নিচে নামল অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা, কমেছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য রাজীব জয়াদেবন বলেন, "যদি সূচের ডগা মাংসপেশীতে গভীরভাবে না পৌঁছায় বা কোনও রক্তনালীতে আঘাত করে, তবে টিকা সরাসরি রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে। টিকা দেওয়ার সময় স্বাস্থ্যকর্মী যদি চামড়া উপরের দিতে তুলে ধরে থাকেন তাহলে এই ধরনের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ইন্ট্রা মাসকুলার ইঞ্জেকশন দেওয়ার সময় চামড়াকে উপরের দিকে টেনে ধরার কোন প্রয়োজন নেই। এতে স্বাভাবিকভাবেই সূচ মাংসপেশী পর্যন্ত পৌঁছে যায়। কিন্তু, চামড়া টেনে ধরার ফলে তা শুধুমাত্র ত্বকের নিচের অংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর ফলে শরীরে টিকার কার্যকরী ক্ষমতা হারিয়ে যায়। আর এটা যদি রক্তনালীতে আঘাত করে তাহলে তার ফলে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।"
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যখনই এই টিকা রক্তনালীতে দেওয়া হচ্ছে তখনই তা নিমেশের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ছে। আর তার ফলেই শরীরের যে কোনও অংশেই রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। তাই সঠিক কৌশল মেনে স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন গবেষকরা।