হলুদ হয়ে গেল জিভ - ধরা পড়ল 'এপস্টাইন বার ভাইরাস', করোনা এ আবার কাকে ডেকে আনল, দেখুন

অনেক সুপ্ত ভাইরাসেরই শক্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে করোনাভাইরাস। এবার সেই তালিকায় সংযোজিত হল নতুন নাম 'এপস্টাইন বার ভাইরাস' বা ইবিভি।
 

Asianet News Bangla | Published : Jul 30, 2021 10:09 AM IST / Updated: Jul 30 2021, 03:50 PM IST

কোভিড দিন চারেক ধরে কানাডার এক ১২ বছরের কিশোরের গলা ব্যথা হচ্ছিল। সেইসঙ্গে তার প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে উঠেছিল। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তার জিভের রং একেবারে হলুদ হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় তাকে ডাক্তারদের কাছে নিয়ে এসেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। পরীক্ষা করে দেখা গেল, ওই কিশোর 'এপস্টাইন বার ভাইরাস' বা ইবিভি-তে সংক্রামিত হয়েছে। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন ওই কিশোেরর ঘটনাটি জানানো হয়েছে। 

কী এই এপস্টাইন-বার ভাইরাস?

মার্কিন ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টার বা সিডিসি জানিয়েছে, এপস্টাইন-বার ভাইরাস বা ইবিভি, হিউম্যান হার্পিস ভাইরাস ৪ নামেও পরিচিত। কারণ এটি হার্পিস-ভাইরাস পরিবারেরই এক সদস্য। এই ভাইরাসটি কিন্তু একেবারেই বিরল কোনও ভাইরাস নয়। সারা বিশ্বেই এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়। আর অধিকাংশ মানুষই জীবনে কোনও না কোনও সময় ইবিভিতে আক্রান্ত হন। এই ভাইরাসটি মূলত মোনোনিউক্লিয়েস বা এক ধরমের সংক্রামক জ্বর ঘটায়। তবে কযেক ধরণের ক্যান্সারেরও কারণ এই ভাইরাস।

কীভাবে ছড়ায় ইবিভি?

ইবিভি দেহস্রাব, বিশেষ করে লালার মাধ্যমে সবথেকে বেশি ছড়ায়। এই অতি-সংক্রামক ভাইরাসটি চুম্বন, একসঙ্গে খাবার ও জল ভাগ করে খাওয়া বা অন্য কোনওভাবে দেহস্রাব বিনিময়ের মাধ্যমে সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এর বিস্তার প্রতিরোধের একমাত্র উপায় সতর্কতা অবলম্বন করা। 

সাধারণ লক্ষণগুলি কী কী?

এই ভাইরাসের সাধারণ উপসর্গগুলি হল - জ্বর, গায়ে ফুসকুড়ি, ক্লান্তি, শরীরে ব্যাথা, গলায় ব্যথা, মাথা ব্যথা, লিভার ফুলে যাওয়া, ফোলা ঘাড়, হাতপায়ের গাঁট ফুলে যাওয়া, প্লীহার স্ফীতি,খাওয়ার অনীহা ইত্যাদি। 

আরও পড়ুনু - - তিব্বতের গলন্ত হিমবাহে মিলল ১৫০০০ বছরেরও পুরোনো ভাইরাস, সকলের অগোচরে বাড়ছে বিপদ

আরও পড়ুন - নয়া আতঙ্কের নাম নোরোভাইরাস, করোনা-মাঙ্কি বি-র সঙ্গেই এবার 'ভমিটিং বাগ'এর প্রাদুর্ভাব

আরও পড়ুন - ফের বিদ্যুত গতিতে ছড়াচ্ছে করোনা - 'হারতে বসেছে গোটা বিশ্ব', সতর্ক করল WHO

কীভাবে সনাক্ত করা যায় এই রোগ?

চিকিৎসকরা লক্ষণ দেকেই রোগ ধরতে পারেন। তবে নিশ্চিত হতে রক্ত ​​পরীক্ষার মূল্যায়ন প্রয়োজন। 

এই রোগের চিকিৎসা হয় কীভাবে?

এপস্টাইন-বার ভাইরাসের কোনও ভ্যাকসিন নেই। নেই কোনও নির্দিষ্ট ওষুধও। তাই বেশি করে তরল পান, উপসর্গগুলি সাড়ানোর ওষুধ দেওযা এবং অনেক অনেক বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। 

কী হল সেই কিশোরের?

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইবিভি সংক্রমণের ফলে ওই কিশোর তীব্র হিমোলিটিক অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল।  তাঁর শরীরে জন্ডিসও ধরা পড়েছিল এবং প্রতি ডেসিলিটারে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নেমে দাড়িয়েছিল ৬.১ গ্রাম। চিকিৎসায় অবশ্য সে সুস্থ হয়ে উঠেছে। 

এপস্টাইন-বার ভাইরাস ও নভেল করোনাভাইরাস

এপস্টাইন-বার ভাইরাসের সঙ্গে সরাসরি নভেল করোনাভাইরাসের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে প্যাথোজেনস ডার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, গুরুতর কোভিড-১৯ রোগী এবং যারা দীর্ঘদিন কোভিডে ভুগে সুস্থ হযে উঠেছেন, তাদের শরীরে এপস্টাইন-বার ভাইরাসের পুনরুত্থান ঘটার ,সম্ভাবনা বেশি দেখা যাচ্ছে। কোভিড ইতিবাচক সনাক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই অনেক রোগীার দেহেই ইবিভি সংক্রমণের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। 

Share this article
click me!