করোনা মহামারীর জেরে বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ১৮ লক্ষের বেশি। আমেরিকায় সংখ্যআ ছাড়িয়ে গিয়েছে সাড় পাঁচ লক্ষের গণ্ডি। পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত করোনা প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। তবে এর মধ্যেই আশার আলো দেখিয়েছিল করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল চিন। ধীরে ধীপে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরে এসেছিল দেশটি। এমনকি গত ৭৬ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর গত ৮ এপ্রিল করোনার এপি সেন্টার উহান থেকেও লকডাউন তুলে নেওয়া হয়ে। যেভাবে চিন করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে তাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও 'হু ' প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিল দেশটিকে। এর মধ্যেই আবার সিঁদুরে মেঘ দেখতে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গত রবিবার দেশটিতে ১০৮ জনের নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। তার একদিন আগে অর্থাৎ শনিবার সংক্রমণের সংখ্যাটা দেশজুড়ে ছিল ৯৯।
গত ৫ মার্চ চিনে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন ১৪৩ জন। তারপর থেকেই ক্রমে দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল নিম্নগামী। তবে ছয় সপ্তাহ পর দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ফের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে গেল। আর এতেই নতুন করে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়াচ্ছে চিন জুড়ে। পরিসংখ্যান বলছে এবার কেবল উহান বা হুবেই নয়, করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে পুরো চিন জুড়েই। যদিও আক্রান্তরা সকলেই বিদেশ ফেরত বলে দাবি করে চলেছে চিনা সরকার।
করোনাভাইরাসকে চ্যালেঞ্জ দিতে জাগছে ইবোলা, কঙ্গোতে নতুন করে ছড়াচ্ছে সংক্রমণমৃত্যু মিছিলে হিমশিম নিউইয়র্ক, বিশ্বের অন্যতম আধুনিক শহরে এবার খোড়া হচ্ছে গণকবর৭৬ দিনের লকডাউন উঠতেই উহানে বিয়ের ধুম, আবেদন জমা পড়ল ৩০০ গুণ বেশিবর্তমানে চিনে সরকারি ভাবে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৮২,১৬০। আর মৃত্যু হয়েছে ৩,৩৪১ জনের।তার উপর চিনা সরকারের চিন্তা বাড়িয়েছে উপসর্গহীন রোগীদের সংখ্যা। সূত্রের খবর, চিনে অন্তত ৬৩ জন এরকম বাহকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যাঁদের শরীরে কোনও উপসর্গ নেই, অথচ পরবর্তী সময়ে তাঁরা করোনা পজিটিভ হয়েছেন। সূত্রের আরও খবর, শনিবার যে ৯৯ জনের শরীরে কোভিড ১৯-এর অস্তিত্ব মিলেছে, তাঁদের মধ্যে ২ জন স্থানীয় বাসিন্দাও ছিল।
জানা যাচ্ছে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে রাশিয়া সীমান্ত লাগোয়া হেলিংজিয়ং প্রদেশের ৫৬ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৯ জন রাশিয়া থেকে ফিরেছিলেন। এদেশে দেশে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ফের রাশিয়া সংলগ্ন সীমান্তে নিরাপত্তা আটসাঁট করছে চিনা সরকার। বিদেশ ফেরত সকলকে ২৮ দিনের কোয়ারেন্টাইনে পাঠান হচ্ছে।
চিনের পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিশ্চিতভাবেই একটা সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঝড় আসছে। দেশটিতে ফের লাফিয়ে বাড়বে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এটা তারই নমুনা মাত্র। অর্থাৎ ফের বিপর্যয়ের ইঙ্গিত রয়েছে গবেষক এ বিশেষজ্ঞদের কথায়। তাঁদের আশঙ্কা, এবার হুবেই নয়, করোনা ছোবল মারবে চিনের বাকি অংশগুলিতে। কারণ চিনে এখনও বেশ শীত রয়েছে। গরমের আভাস নেই। বৃষ্টিও পড়ছে বেশ। ফলে করোনা ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি করা বা সংক্রমণ ছড়ানোর সব মালমশলাই মজুত রয়েছে দেশটিতে।