করোনাভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণের জন্য কোভিডের জিনের তৃতীয় রূপান্তরকেই দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞরা। মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছে ভারত। বিশ্বের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলির ক্রম তালিকায় ব্রাজিলকে সরিয়ে দিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার পেশ হওয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা তিন লক্ষ ছুঁই ছুঁই। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্টে আক্রান্তের এদিন আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৯৫ হাজারের বেশি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যায গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২৩ জনের। দ্বিতীয় তরঙ্গে করোনা মহামারির এই দ্রুত সংক্রমণের জন্য বিশেজ্ঞরা মনে করছেন ভাইরাসটি দ্বিতীয় রূপান্তরের পর এবার তৃতীয় রূপান্তরও ঘটে গেছে। আর ভারতের কাছে মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই উপস্থিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় রূপান্তর আগেই ঘটেছিল। এবার ভারতে ঘটছে তৃতীয় রূপান্তর। এই অর্থ হল তিনটি ভিন্ন ভিন্ন কোভিড স্ট্রেইন একটি নতুন রূপে অবতীর্ণ হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে সনাক্ত করা হয়েছে। সূত্রের খবর মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতে ট্রিপল মিউট্যান্ট জিনের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের যে ঢেউ উঠেছে তাতেই নতুন এই জিনটির প্রভাব দেখতে পাওয়া গেছে।
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিজেমিওলজির অধ্যাপক মধুকর পাই বলেছেন এটি আরও সংক্রমণ যোগ্য রূপ। নতুন এই করোনা জিন মানুষকে দ্রুত সক্রমিত ও অসুস্থ করে তুলতে সক্ষম। প্রতীকার হিসেবে তিনি টিকাকরণের ওপরেই জোর দিয়েছেন। একই সঙ্গে সিকোয়েন্সিংএর প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞের কথায় করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ভারতের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেছেন দ্বৈত রূপান্তর সনাক্তকরণে বিলম্ব বর্তমান ভাইরাসের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। তিনি আরও বলেছেন ভাইরাসটি যত বেশি ছড়িয়ে পড়ে ততই বেশি রূপান্তর ঘটে।
কেন আমরা এভাবে করোনাভাইরাসের টিকা অপচয় করছি, মহামারির নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ দিল্লি আদালতের ..
ট্রিপল মিউটেশন কী?
আগেই দ্বৈত রূপান্তর হয়েছিল। ভারতে তা পরিলক্ষিত হয়েছে। যখন দুটি স্ট্রেইন একত্রিত হয়েছিল। বর্তমানে তিনটি স্ট্রেইন একত্রিত হয়েছে। তাই ট্রিপল মিউটেশন জিন হিসেবে সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি শুধুমাত্র ভারতে নয়। গোটা বিশ্বে নতুন করে যাঁরা সংক্রমিত হচ্ছেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই জিনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। নতুন এই জিন কতটা সংক্রামক আর কতটা মারাত্মক তার জন্য আরও পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। ভারতের মাত্র ১০টি ল্যাবেই ভাইরাসের জিনোম স্টাডি হয়।
'দয়া করে মাস্ক পরে নিন', ভাইরাল ভিডিওতে করোনা মাহামির কথা বলতে গিয়ে চোখে জল চিকিৎসকের ...
তবে বিজ্ঞানীদের কথায় ডাবল মিউটেশনে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছিল। শিশুদের ওপরেও এই প্রভাব পড়েছিল। এটি তারথেকেই মারাত্মরক বলেও মনে করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে নতুন করোনার জীবাণু নিয়ে এখনই চিন্তা করার কোনও কারণ নেই বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
লকডাউন নিয়ে বার্তা নরেন্দ্র মোদীর, দেখে নিন জাতির উদ্দেশ্যে কী বললেন প্রধানমন্ত্রী ...
ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর?
ট্রিপিল মিউটেশনের তিনটি জিনের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুটি জিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ভ্যাকসিনগুলি কার্যকর বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। অর্থাৎ অ্যান্টিবডিগুলির প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়এছে। তাই চিকিৎসকরা মনে করছেন ভ্যাকসিনগুলি কার্যকারিতা দেখাতে পরাবে। তবে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন নতুন রূপটিতে কোভিডের শরীরের প্রাকৃতিক অর্জিত অনাক্রম্যতা থেকে বাঁচার কিছু সুবিধে রয়েছে। তবে আইসএমআর জানিয়েছে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত রূপের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম।