এই দিন থেকেই শুরু হয় দুর্গা মায়ের আরাধনার কাজ। এদিনে মায়ের বোধনের মাধ্যের পুজোর শুরু। একথা সকলেরই জানা। তবে 'বোধন'-এর অর্থ কি একথা কি বলতে পারবেন। ষষ্ঠীর
পঞ্জিকা অনুযায়ী, ১ অক্টোবর ২০২২ শনিবার, অর্থাৎ আজ শারদীয়ার মহাষষ্ঠী তিথি। এই দিন থেকেই শুরু হয় দুর্গা মায়ের আরাধনার কাজ। এদিনে মায়ের বোধনের মাধ্যের পুজোর শুরু। একথা সকলেরই জানা। তবে 'বোধন'-এর অর্থ কি একথা কি বলতে পারবেন। ষষ্ঠীর দিন সকালে দেবীর কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীর পুজা করা হয় এবং সন্ধ্যায় হয় দেবীর বোধন। এই শব্দের অর্থ হয় দেবীর জাগরণ করা বা দেবীকে জাগ্রত করা। তবে মনে এ প্রশ্ন থাকতেই পারে কেন দেবীকে জাগ্রত করা হয়। দেবীর অর্থে স্বয়ং ঈশ্বর, তাই ঈশ্বরকে জাগ্রত করার অর্থ কি!
মনে এমন প্রশ্ন আসাটাই প্রাসঙ্গিক। পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুসারে শরৎকালে দেবলোকে রাত্রি যাকে বলে দক্ষিণায়ন চলে। এমন সময় দেবলোকের দেবতারা নিদ্রায় বা শয়নে থাকেন। এই শরতের সময় দেবতাদের নিদ্রার সময়। তাই মায়ের পুজোর আগে দেবতাদের জাগ্রত করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এই নিয়ম মেনেই মায়ের জাগরণ বা ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয়। এই বোধণ মানে মায়ের জাগরণ করা বা সহজ ভাষায় ঘুম থেকে ডেকে তোলা। এরপর মায়ের প্রতিষ্ঠা করার পুজো পদ্ধতি শুরু করা হয় বা মা পুজো গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত থাকেন।
একাধিক পুরাণ ও অন্যান্য হিন্দু ধর্মগ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে যে, রাবণ বধের পূর্বে রাম দেবী পার্বতীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে বেল গাছের নীচে বোধনের জন্য দুর্গাপূজা করেছিলেন। শরৎকাল দেবপূজার ‘শুদ্ধ সময়’ নয় বলে রাম দেবী পার্বতীর বোধন ‘অকালবোধন’ নামে পরিচিত হয়। উল্লেখ্য, শাস্ত্রমতে বসন্তকাল দুর্গাপূজার প্রশস্ত সময় হলেও, আধুনিক যুগে শারদীয়া দুর্গাপূজাই অধিকতর প্রচলিত। রাবণ বসন্ত কালে চৈত্র মাসে দেবী পার্বতী কে পুজো করে সন্তুষ্ট করলে দেবী তাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু যদি সে দেবীর পূজা মন্ত্রে শ্রী শ্রী চন্ডিতে কোনও রূপ ত্রুটি করে তবে দেবী তাকে ত্যাগ করবেন। এই কারণে রামের সকল অস্ত্র রাবণের উপর বিফল হয়ে যায়। তখন ব্রহ্মা রামচন্দ্র কে দেবী পার্বতীর পুজো করতে বলেন। কারণ দেবী এই সময় মর্ত্যে তাঁর মাতা পিতা র গৃহে আসেন।
আরও পড়ুন- দুর্গাপুজা ও তার পরবর্তী সময় এই ৫ রাশির জন্য খুব চাপের হতে পারে, দেখে কোন রাশি আছে এই
আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোর সময় থেকে বাকি বছরটা এই ৪ রাশির জন্য অত্যন্ত শুভ, জেনে নিন কারা আছেন
আরও পড়ুন- এই বছর মা দুর্গার আগমণ হবে 'হাতিতে' চড়ে, জেনে নিন মায়ের প্রতিটি বাহনের গুরুত্ব
রাম দেবী পার্বতীর পুজো করলে দেবী তাঁর উদ্দেশ্যে আনা একটি পদ্ম তিনি হরণ করেন। তখন রামচন্দ্র নিজ চক্ষু দেবী কে দান করতে চাইলে দেবী পার্বতী তাঁকে বিরত করেন ও বর দেন। তার পর হনুমান দশমী তিথিতে রাবণ কল্যাণে শ্রী চন্ডী পাঠ রত বৃহস্পতি কে অজ্ঞান করে। শ্রী চন্ডী অশুদ্ধ করলে রাবণকে ত্যাগ করেন দেবী। রাবণ দেখে দেবী তাকে ত্যাগ করে কৈলাসে চলে যাচ্ছেন রাবণের শত মিনতি সত্ত্বেও দেবী পার্বতী আর ফিরে তাকালেন না। তারপর রামচন্দ্র রাবণ বধ করেন।