এবারের দমদম পার্ক ভারতচক্রের থিম হলো- 'অন্তর্লীন'। এই 'অন্তর্লীন'-এর একটি অন্তর্নিহিত অর্থও রয়েছে সেই ভাবনাকে কাজে লাগিয়েই এবছরের থিম পুজোর আয়োজন করেছে দমদম পার্ক ভারতচক্র। আসলে আমরা সবকিছুতেই আমার আমার করে থাকি। কিন্তু ভিতরের আমিটার খবর রাখি না। কিন্তু এই আমি খুবই তুচ্ছ। কারণ আমরা প্রকৃতির হাতে তুচ্ছ মাত্র। এমনকী শেষযাত্রাতেও আমিত্ব বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে না। আর এই আমিত্বকে ঝেড়ে ফেলার আহ্বানের ডাক দিয়েছে দমদম পার্ক ভারতচক্র ।
করোনার মহাসঙ্কট কাটিয়ে যেন ফের ছন্দে ফিরেছে আট থেকে অষ্টাদশী। পুজোর আনন্দে খুশির রেশ বাঙালির মনে। সাদা কাশফুল জানান দিচ্ছে উমা আসছে নিজের ঘরে। পুজো নিয়ে উন্মাদনা যেন বেড়েই চলেছে। রাত জেগে প্যান্ডেল হপিং থেকে খাওয়া-দাওয়া সবকিছুর লিস্টই প্রায় রেডি হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে পুজোর কাউন্টডাউন। দেবী দুর্গার আগমনে চারিদিকে যেন সাজো সাজো রব। প্যান্ডেল থেকে ঠাকুর, পুজোর থিম থেকে লাইটিং সবকিছুর প্রস্তুতিই এখন তুঙ্গে। কোন পুজোর কী থিম তা জানতেও মুখিয়ে রয়েছেন সকলেই। প্রত্যেক বারের মতোই এবারেও নয়া ভাবনা উপস্থাপন করছে দমদম পার্ক ভারতচক্র। এবারের দমদম পার্ক ভারতচক্রের থিম হলো- 'অন্তর্লীন'। এই 'অন্তর্লীন'-এর একটি অন্তর্নিহিত অর্থও রয়েছে সেই ভাবনাকে কাজে লাগিয়েই এবছরের থিম পুজোর আয়োজন করেছে দমদম পার্ক ভারতচক্র। আসলে আমরা সবকিছুতেই আমার আমার করে থাকি। কিন্তু ভিতরের আমিটার খবর রাখি না। কিন্তু এই আমি খুবই তুচ্ছ। কারণ আমরা প্রকৃতির হাতে তুচ্ছ মাত্র। এমনকী শেষযাত্রাতেও আমিত্ব বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে না। আর এই আমিত্বকে ঝেড়ে ফেলার আহ্বানের ডাক দিয়েছে দমদম পার্ক ভারতচক্র । গত দুই বছরে অতিমারি যা শিক্ষা দিয়েছে সকলকে সেখান থেকেও আমিত্ব ঝেড়ে ফেলে নতুন পথ চলা শুরু করাটাই সবচাইতে শ্রেয়। ২২ -তম বর্ষে এই অভিনব ভাবনাই হল 'অন্তর্লীন'-এর মূল বিষয়বস্তু।
প্রতি বছরই নয়া নয়া থিম নিয়ে হাজির হয় দমদম পার্ক ভারতচক্র। এবারও সেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। দমদম পার্ক ভারতচক্রের পুজো কমিটির সভাপতি সন্দীপ ব্যানার্জি জানিয়েছেন, অত্যন্ত সাধারণ ভাবেই পুজো মন্ডপটির তৈরি করা হচ্ছে, কোনরকম পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে না মূলত মাটি, খড়, বাঁশ দিয়ে মন্ডপ তৈরির কাজ চলছে। পরিবেশ সচেতনতা ও দূষণের কথা মাথায় রেখে অভিনব ভাবনায় কাজটি করা হচ্ছে। খুব সাধারণ ছিমছাম ভাবেই মায়ের রূপ থাকছে । যেখানে অলংকারে চাকচিক্য অনেকটাই ফিকে তার বদলে মা দেবী রূপে পূজিত হচ্ছেন অত্যন্ত সাধারণ ভাবে সেই দিকেই বেশি জোড় দেওয়া হচ্ছে। প্রতিমা সজ্জা থেকে সৃজনে পুরোটারই দায়িত্বে রয়েছেন অনির্বাণ দাস। বাউল গানের আদলেই সেজে উঠছে পুরো মন্ডপটি। আবহে রয়েছেন পার্বতী দাস বাউল, যার গানের ভিত্তিতে মন্ডপটি তুলে ধরা হচ্ছে এবং আলোকসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী।
এই বছর দুর্গাপুজো যেন বাঙালির কাছে একটু বেশি বাড়তি পাওনা। কারণ বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। তা যেন বড় গর্বের ও আনন্দের বটে। দমদম পার্ক ভারতচক্রের পুজো কমিটির সভাপতি সন্দীপ ব্যানার্জি আরও জানিয়েছেন, দুবছরের দম বন্ধ করা পরিবেশ থেকে অনেক বেশি উদ্দীপনা রয়েছে পুজো নিয়ে তাই বাজেটও যথারীতি বাড়ানো হয়েছে। তাই এবছরের পুজোয় আরও বেশি করে চাকচিক্য রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিবেশ সচেতনতা ও কোভিডের কথা মাথায় রেখেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। গত দুবছর ধরে যেভাবে মহামারিতে পুজো হয়েছে সেগুলির সবই ব্যবস্থা করা হবে। যেমন মাস্ক থেকে স্যানিটাইজার সবকিছুই রাখা থাকবে মন্ডপে। শুধু তাই নয়, মন্ডপটিকে এতটাই বড় রাখা হয়েছে যাতে ঠাকুর দেখার সময় প্রচুর মানুষের ভিড় হলেও সেখানে কোনও ধাক্কাধাক্কি না হয়। সেদিকটাতে বেশি জোড় দেওয়া হয়েছে। পুজোর এই কটা দিনে বিশেষ কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। আসলে ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। সকলের উদ্দেশ্য তিনি জানিয়েছেন, এই বছরের দুর্গোৎসব বিশ্বজনীন হয়েছে সেটাকে মাথায় রেখে উৎসবটাকে যাতে আরও আনন্দমুখর করে তুলতে পারে সেখানে সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। কলকাতর সমস্ত শারদ সম্মানই এই মুহূর্তে রয়েছে দমদম পার্ক ভারতচক্রের ঝুলিতে। তবে এবার কী কী পুরস্কার তাদের মুকুটে নয়া পালক যোগ করবে তা জানতে এবং 'অন্তর্লীন'-কে চাক্ষুস দেখতে হবে অবশ্যই আসতে হবে দমদম পার্ক ভারতচক্রে।
আরও পড়ুন- ৮৩তম গৌরবময় দুর্গোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হরি ঘোষ স্ট্রিট সার্বজনীন
আরও পড়ুন-জমজমাট পুজোয় অদেখার যাত্রায় যেতে প্রস্তুতি চলছে সিকদার বাগান সাধারন দুর্গোৎসব কমিটির
আরও পডুন- জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো মণ্ডপে শরতে বর্ষার আমেজ, অন্য পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তারা