৩ দিনে ৫০টা ঠাকুর উদ্বোধনের পরিকল্পনা, পুজো এভাবেই কাটাচ্ছেন বিধায়ক দেবাশীষ কুমার

পুজোকেই ফাস্ট প্রায়োরিটি দেন বিধায়ক দেবাশীষ কুমার। পুজোকে বাঁচিয়েই  রাজনীতির যেকোনো কাজ করতে রাজি আছেন তিনি কিন্তু পুজোকে বন্ধ করে নয়।   এশিয়ানেটের প্রতিনিধি ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে টেলিফোনিক পুজোর আড্ডায় বিধায়ক দেবাশীষ কুমার।

কলকাতা পুরসভার ভোটার আগে এক ভোটপ্রচারি অনুষ্ঠানে প্রথম কথা হয়েছিল ওনার সঙ্গে।কথা বলার পর  ওনার সম্পর্কে যে  ফার্স্ট ইম্প্রেশন হয়েছিল আমার সেটা  হলো উনি দারুন কথা বলতে পারেন। সেদিনের সেই নির্বাচনী প্রচারের পর যেখানে যখন দেখা হয়েছে  তার সেই যুক্তিবাদী এবং স্পষ্টবাদী কথা বলার ধরণটি বার বার  আমাকে, কিছু না কিছু শিখিয়েছে । সেদিন মোবাইলে তার নম্বরটি  ডায়াল করার আগেও যে বিষয়টি নিয়ে  আমি সবথেকে বেশি এক্সসাইটেড ছিলাম  সেটা হলো আজও   আবার নতুন কিছু শিখতে পাবো । একটুও দেরি না করে চটজলদি নম্বরটা ডায়েল করে, করলাম ফোন। ২টো- ৩ টে রিং হবার পরই দেখলাম ওপার থেকে ভেসে এলো এক গম্ভীর কণ্ঠ,  বললেন "হ্যালো ". ফোনের পাস থেকে এতো আওয়াজ আসছিলো যে মনে হচ্ছিলো উনি নিশ্চই  কোনো জনসমাবেশে আছেন।  তাই কথা না বাড়িয়ে নিজের কাজের কথাটুকু সংক্ষেপে জানালাম তাকে ।  উনি বললেন আজ একবার রাতের দিকে কল করুন।  বলেই ফোনটা দিলেন কেটে। 

এরপর রাট ১০ টা  নাগাদ আবার করলাম কল।  প্রচন্ড আওয়াজের মধ্যেই ছিলেন আবারও।  কিন্তু কলটা ধরে বললেন " হ্যাঁ মনে আছে আমার ,দাঁড়ান একটু সাইড হতে দিন , তারপর দিচ্ছি আপনাকে ইন্টারভিউ।  তারপর অনেক লোকের মাঝখান থেকে সরে গেলেন সাইডে। ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েসটাও  গেলো একটু একটু করে কমে।  তারপর শুরু হলো টেলিফোনিক আলাপচারিতা।  শোনালেন কিভাবে ৩ দিনে ৫০ টা ঠাকুর উদ্বোধনের পরিকল্পনা করেছেন তিনি এবার।  এশিয়ানেটের প্রতিনিধি ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে টেলিফোনিক পুজোর আড্ডায় বিধায়ক দেবাশীষ কুমার।      

Latest Videos





১। পুজোর কটা দিন কি রাজনীতিকে ভুলে থাকা যায়?
দেখুন রাজনীতি এমন একটা বিষয় যেটা থেকে কখনোই দূরে থাকা যায় না। আমরা যতক্ষণ বেঁচে থাকবো ততক্ষন রাজনীতির মধ্যেই আমাদের থাকতে হবে।  যদি কখনো রিটায়ারমেন্ট হয়ে যায় বা স্বেচ্চা অবসর নি যে পলিটিক্স করবো না বলে তখন  সেটা আলাদা কথা।  কিন্তু যতদিন রাজনীতির মধ্যে আছি  ততদিন সেরকম আলাদা করে অবসর সময় বলে কিছু থাকে না আমাদের জীবনে। রাজনীতির মধ্যে ২৪ ঘন্টায় আমাদের থাকতে হয়,  আমাদের মাঝরাতেও ফোন এলে ফোন ধরতে হয় যদি কোনো এমারজেন্সি হয় সেই বুঝে এক্ট করতে হয়। কাজেই রাজনীতিকে ভুলে থাকা পুরোপুরি সম্ভব নয়। 


২। পুজোর সময় কখনও ঘুরতে গিয়েছেন
পুজোর সময় কলকাতার বাইরে আজ পর্যন্ত আমি  কখনো যায়নি


৩। এমন একটা পুজো যেখানে নিশ্চিন্তে ভুরিভোজ আর ঘুম দিয়েই দিন কেটে গিয়েছে
না দেখুন সেরকম কোনো স্কোপ এখনো পর্যন্ত আসেনি।  যেসময় খুব আনন্দের সঙ্গে পুজো কাটাতাম সেইসময়টা ঘুমোতে ইচ্ছে করতো না , তখন ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করতো। আর্লি স্কুল লাইফ ,কলেজ লাইফ তখন ব্যস্ততা পুজোতে খুব একটা থাকতো না। তারপর যখন রাজনীতি শুরু করলাম তারপর থেকেই  ওই  একটু রেস্ট নি বা একটু বসে থাকি সেই সময় তা আর আসেনি জীবনে । 

৪। মণ্ডপে মণ্ডপে যান প্রতিমা দেখতে
একটা সময় ছিল যখন ছোটবেলায় খুব প্যান্ডেল হপিং করতাম। সারারাত্রি ঘুরেছি। ঠাকুর দেখেছি। ওটা আর্লি স্কুল লাইফে বা কলেজ লাইফে তখন খুব এরকম ইচ্ছে হতো তাই তখন এরকম করেওছি প্রচুর। 

এখনো কি সেই ইচ্ছে জাগে ?
ইচ্ছে তো এখনো আছে। এই যে আমরা এতগুলো উধবধনে যাচ্ছি। সেখানেও একটার পর একটা  প্যান্ডেল দেখা হচ্ছে , ঠাকুর দেখা হচ্ছে, চলছেই।  কাজেই জিনিসটা  এক আছে ফরমেশনটা পাল্টেছে  

৫। পুজোর দিনগুলো কোন রুটিনে দিনটা শুরু করেন
দেখুন মিছিল মিটিং হয়না এটা ঠিক কিন্তু আমাদের কাছে জনসংযোগের খুব বড়ো একটা প্লাটফর্ম হলো পুজো। যার ফলে আমার পুজোর রুটিন হচ্ছে সকাল বেলা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘুম থেকে উঠে নতুন জামাকাপড় পরে আগে অঞ্জলি দেওয়া । অঞ্জলি দেবার পরে  আবার মানুষের সঙ্গে মেশা শুরু। মণ্ডপে মণ্ডপে যাওয়া মানুষের সাথে মিট করা।  তখনও যদি মানুষের কোনো রিকোয়েস্ট আসে তবে আমার ক্ষমতা বা সাধ্য অনুযায়ী  সেই কাজটা আমি নিশ্চই করে দি।  এই করতে করতে বেলা বাড়ে দুপুরবেলা একটা কমিউনিটি লাঞ্চ হয় সেখানে সবাই মিলে খাই। এরপর সন্ধ্যে হলে আর একবার জামাকাপড় পাল্টাই। নতুন জামাকাপড় পড়ি।  এরপর রাট ১ টা -২ টো পর্যন্ত বসে থাকি প্যান্ডেলে। লোক আসে কথা বলি। সারাবছর হয়তো তাদের সঙ্গে দেখা হয় না কিন্তু ওই পুজো মণ্ডপে আসেন তখন দেখা হয়। এইরকম জনসংযোগ করতে করতেই কাটে পুজোর দিনগুলো। 

৬। এমন কোনও পুজো জাস্ট রাজনৈতিক কারণে অন্যদিকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে
দেখুন আমি খুব রেলিজিয়াসলি পিজার সময় যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন পুজো থাকে আমার ফাস্ট প্রায়োরিটি। সেই কাজ বাঁচিয়ে রাজনীতির যেকোনো কাজ করতে রাজি আছি কিন্তু পুজোটাকে বন্ধ করে নয়। 


৭। পুজোর দিনে পুরনো দিনের বন্ধুদের সঙ্গে কি আড্ডাটা আজও হয়
আড্ডাটা প্রায় ভুলে গেছি এখন আর আড্ডাটা হয় না। যেটা হয় সেটা হলো দেখাশুনা হয়। এখন যেকোনো মানুষই আমাদের সাথে দুটো কথা বললে তাতে একটা অন্তত কাজের কথা বা প্রয়োজনের কথা বলেন। তাই সেইরকম নিরবিচ্ছিন্ন আড্ডা সেটা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। 




৮। এবারের পুজো প্ল্যান কেমন
পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়ে গেছে ,পুজোর উদ্বোধন করছি। বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরছি আজকেও  বিধানসভার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কয়েকটা উদ্বোধন করলেন সেখানে ছিলাম। 
কাল থেকে আমাদের নিজেদের উদ্বোধন আছে।  তিনদিনে প্রায় ৫০ টা পুজোর উদ্বোধন করবো। আমার নিজের পুজো প্যান্ডেলে থাকা। নাহলে আসে পাশে ঘোরা এই আর কি। 

৯। এক কথায় যদি জানতে চাই পুজো মানে আপনার জীবনে কি
পুজো মানেই আমার জীবনে অনেকগুলো রং ,অনেক কালার।  পুজো মানে আমার কাছে একটা এক্সসাইটমেন্ট। পুজো মানে আমার কাছে  আনন্দ। 


আরও পড়ুন-
দেবীপক্ষের নবমী তিথি কোনও রাশির উপর কেমন প্রভাব ফেলবে, দেখে নিন আপনার আজকের রাশিফল
চিত্রা নদীর তীরে এক প্লটে দুর্গা মণ্ডপ আর মসজিদ, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির পীঠস্থান
Durga Puja 2022 : ৯৭ তম বর্ষে উল্টোডাঙার তেলেঙ্গা বাগান, থিমের নাম 'তোরমা'

Share this article
click me!

Latest Videos

'আমি বলছি, আমার নাম করে লিখে রাখুন' ঝাঁঝিয়ে উঠে যা বললেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
প্রেমের নামে এসব কী! নিখোঁজ নাবালিকার মর্মান্তিক পরিণতি, শোকের ছায়া পরিবারে | Nadia News Today
প্রেমিক আসল শয়তান! মাঝরাতে ঘটল 'জঘন্য' ঘটনা, হতবাক সকলে! | Ashoknagar News Today
সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু! তার আগেই বিরোধীদের কড়া বার্তা PM Modi | Parliament Winter Session 2024
TMC ছেড়ে কেন BJP-তে শুভেন্দু! আজ নিজেই বলে দিলেন সব | Suvendu Adhikari | Bangla News