‘বিশ্বাস, ইচ্ছাশক্তি মিললে তবেই অলৌকিক ঘটবে, শুধু প্রার্থনায় নয়’, প্রার্থনা বিতর্কে অকপট অনিন্দ্যপুলক

অনিন্দ্যর কথায়, ‘‘কেউ সব্যসাচীর ধারাবাহিকের ছবি ব্যবহার করছেন। কেউ রাধা-কৃষ্ণের ছবি। এ গুলো ‘ইমোশনাল গেম’ ছাড়া আর কী?

তিনিই প্রথম ঐন্দ্রিলা শর্মার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দানের কথা ভেবেছিলেন। তিনিই এশিয়ানেট নিউজ বাংলার কাছে ‘প্রার্থনা বিতর্ক’ নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন। অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘পাশ্চাত্যের স্তম্ভ যুক্তি আর কার্যকারণ। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে সেটা বিশ্বাস। বিশ্বাসের হাত ধরেই প্রবল ইচ্ছাশক্তি আসে। এই দুই শক্তির মেলবন্ধন ঘটলে অলৌকিক ঘটতে বাধ্য। শুধু প্রার্থনায় কিচ্ছু হয় না।’ পাশাপাশি তাঁর এও দাবি, সব্যসাচীর জায়গায় থাকলে তিনিও তাই করতেন যা ছোটপর্দার ‘বামাখ্যাপা’ করছেন। কারণ, তখন তাঁরও কোথাও নির্ভর বা আত্মসমর্পণের প্রয়োজন পড়ত। যেটা প্রত্যেক মানুষের দরকার পড়ে। অনিন্দ্যর দাবি, সব্যসাচী যখন এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবেন তখন তিনি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারবেন। এবং তিনিও বুঝবেন, প্রার্থনার পাশাপাশি বিশ্বাস এবং ইচ্ছাশক্তিরও প্রয়োজন। এর জোরেই সম্ভবত শ্রীরামকৃষ্ণ দেব ঈশ্বরের দেখা পেয়েছিলেন।

গত সোমবার চিকিৎসকেরাই সব্যসাচীকে প্রথম অলৌকিক শক্তির উপরে ভরসা করার কথা বলেন। বলেন, অন্তর থেকে ঈশ্বরকে ডাকতে। এমনটাই দাবি সব্যসাচীর। তিনিও ফেসবুকে সবাইকে আন্তরিক অনুরোধ জানান, ‘মন থেকে প্রার্থনা করুন। এক মাত্র অলৌকিক শক্তিই পারে ঐন্দ্রিলা শর্মাকে বাঁচাতে।’ বুধবার সকাল থেকে অবস্থার অবনতি হয় ঐন্দ্রিলার। সে দিনই অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীর পোস্ট, ‘অনেককেই দেখি নানা কারণে ফেসবুকে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যাঁর কাছে প্রার্থনা করা হয় তিনি ফেসবুক করেন তো?’ বিদীপ্তা চক্রবর্তী, ঊষসী চক্রবর্তী, পৌলমী দাস-সহ বহু জনের দাবি, সঠিক প্রশ্ন তুলেছেন ঋত্বিক। এই বিষয়েই মতামত দিতে গিয়ে নিজের ভাবনা অকপটে মেলে ধরেন অনিন্দ্য। তাঁর মতে, ‘প্রার্থনাকে একেবারেই ছোট করে দেখছি না। কারণ, গোটা খ্রিস্টান সমাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রার্থনার উপরে ভিত্তি করে। তাঁরা ভাল-মন্দ সবেতেই যিশু খ্রিস্টের কাছে প্রার্থনা জানান। তবে মনে রাখতে হবে, সেখানেও কিন্তু বিশ্বাস কাজ করে। এই বিশ্বাসটাই এখন সব্যসাচীর প্রধান অস্ত্র। যা কোনও মতেই হারিয়ে ফেললে চলবে না।’

Latest Videos

 

 

শুক্রবার রাতে সব্যসাচী সবিস্তার জানানোর পরে আরও একটি পোস্ট দিয়েছেন অনিন্দ্য। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে ইমোশনাল গেম বন্ধ হোক এ বার। সহ-নাগরিক হিসেবে এটা বলার অধিকার আমার আছে।’ অভিনেতা কি সচেতন ভাবেই ‘ইমোশনাল গেম’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করলেন? এই প্রশ্নও রেখেছিল এশিয়ানেট নিউজ বাংলা। এ বারেও স্পষ্টবক্তা অনিন্দ্য। সাফ বললেন, ‘‘কেউ সব্যসাচীর ধারাবাহিকের ছবি ব্যবহার করছেন। যেখানে দৃশ্যের খাতিরে অভিনেতা তারা মাকে জড়িয়ে ধরে রয়েছেন। কেউ রাধা-কৃষ্ণের ছবি ব্যবহার করে ওঁদের সেই জায়গায় তুলে ধরতে চাইছেন। কেউ কেউ শ্রদ্ধা ওয়ালকর-আফতাব পুনাওলার বিপরীত দৃষ্টান্ত হিসেবে এই জুটিকে দেখাতে চাইছেন। এ গুলো ‘ইমোশনাল গেম’ ছাড়া আর কী? এ গুলোর কোনওটাই তো ওঁরা নন। এটা সবার আগে বুঝতে হবে।’’ অভিনেতার যুক্তি, অভিনেতা মাত্রেই আবেগসর্বস্ব। এই আবেগের জোরেই তাঁরা চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন। সেই জায়গা থেকে এক জন অভিনেতা হয়ে তিনি বলতে বাধ্য হচ্ছেন, কিছু একটা বিষয় পেলেই তাই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মাতামাতি তাঁর চোখে এ বার যেন বাড়াবাড়িই ঠেকছে।

 

 

নিজের কথার স্বপক্ষে অনিন্দ্যর দাবি, ‘‘সব্যসাচী থামতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তার পরের ২৪ ঘণ্টা সবাই চুপ। অরিজিৎ সিংয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ফের তুলকালাম! আমাদের আবেগ কোথাও ‘ফিল্টার’ হবে না? সবার এই অতিরিক্ত আবেগই এক এক সময় একটু হলেও যেন ‘সস্তা’ মনে হচ্ছে। আবেগ যত সংযত হবে তার জৌলুস ততই আলাদা! একই সঙ্গে বিষয়টি চাপে ফেলে দিচ্ছে সব্যসাচী এবং ঐন্দ্রিলার পরিবারকেও।’’ তিনি এও বলেন, একই ঘটনা প্রত্যন্ত গ্রামের কোনও কৃষকের মেয়ের সঙ্গে ঘটলে কিন্তু কেউ মাথা ঘামাবেন না। তাই নিয়ে খবরও হবে না। কারণ, তাঁরা তারকা নন। তাঁরা জনপ্রিয়ও নয়। যে দিন তাঁদের নিয়েও সমান ভাবে উত্তাল হবে সোশ্যাল মিডিয়া সে দিন তিনি মনে করবেন, সামাজিক মাধ্যমের যোগ্য ব্যবহার হচ্ছে। অনিন্দ্যর আফসোস, ‘কিছু দিন আগেই চাকরীপ্রার্থীদের উপরে ঘটে যাওয়া অন্যায় নিয়ে সরব সোশ্যাল মাধ্যম। সরব সবাই। অবাক ঘটনা, ঐন্দ্রিলার অসুস্থ হতেই তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন নেট ব্যবহারকারীরা! ব্যাপারটা পুরো ধামাচাপা পড়ে গেল? আমরা কি তা হলে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাচ্ছি?’

আরও পড়ুন

ঐন্দ্রিলার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আর্জি অনিন্দ্যর, ‘এক্ষুণি প্রয়োজন নেই’, মত সব্যসাচীর

‘ঈশ্বর ফেসবুক করেন না জানি, তাই লিখেছিলাম মন থেকে প্রার্থনা করুন: সব্যসাচী

‘ভেন্টিলেশনেও লড়াই জারি, মাটি কামড়ে পড়ে ঐন্দ্রিলা’, হাসপাতাল থেকে দেখে এসে আর কী জানালেন রিমঝিম?

Share this article
click me!

Latest Videos

গোটা ভারতবর্ষে কে রোহিঙ্গাদের সাপ্লাই দিচ্ছে! শুভেন্দুর উত্তরে চমকে উঠবেন | Suvendu Adhikari
ভাটপাড়ায় প্রোমোটারের 'দাদাগিরি', আতঙ্কে জমির মালিক, কি বলছে পুরসভা! দেখুন | Bhatpara News
Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি
'আমি মারা গেলে আমার যেন স্ট্যাচু না হয়' দলের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার
Mamata Banerjee Live: নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা, দেখুন সরাসরি