বাংলা ছবি কেন দক্ষিণী দাপটে ম্লান? প্রসেনজিতের দাওয়াই, ১০ কোটি বাঙালি হলে এলেই ‘হাউজফুল’

পরমব্রতর দাবি, ‘‘পুরনো প্রবাদ ‘গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না’ এখনও প্রাসঙ্গিক। আমরা যখনই বলিউড বা হলিউডের তকমা নিয়ে ফিরি, তখনই কত আদর-কদর!’’

‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’! টলিউডের এটাই নতুন স্লোগান। কিংবা দক্ষিণী দাপটে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি জবুথবু। এই প্রসঙ্গ উঠলেই টলিউডের রথী-মহারথীদের কপালে ভাঁজ। কিন্তু সামনাসামনি বসে আলোচনা হয় কই? এই ভাবনা থেকেই রবিবাসরীয় সন্ধেয় কলকাতার প্রথম সারির এক সাত তারা হোটেলের ছাদে নেমে এসেছিলেন বাংলা রুপোলি পর্দার এক ঝাঁক তারকা। যেখানে আলোচনা, আত্ম-সমালোচনায় তাঁরা খুঁজে নিয়ে চেষ্টা করলেন, আসল ফাঁকটা কোথায়? সৌজন্যে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স। সেখানেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় একটা সহজ অঙ্ক কষে দিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলায় মোট বাঙালি কত? আন্দাজ ৩০ কোটি। তার মধ্যে ১০ কোটি প্রেক্ষাগৃহে এলেই কিন্তু ‘হাউজফুল’ বোর্ড ঝুলবে!’’

অনুষ্ঠানের সূত্রধর পরিচালক-প্রযোজক, আইসিসি চেয়ারপার্সন অরিন্দম শীল। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, তা হলে কি বাংলা ইন্ডাস্ট্রি সেই ১০ কোটি বাঙালিকেও ধরে আনতে পারছে না? প্রসেনজিতের অকাট্য যুক্তি, ‘‘পারছে না বলেই মুম্বই পুরস্কার অনুষ্ঠানে কলা-কৌশল বিভাগে বাঙালি ছেলেমেয়েদের ভিড়! আমরা যে শুধু প্রেক্ষাগৃহে লোক টানতে পারছি না তা নয়। আমরা বাংলার প্রতিভাদেরও ধরে রাখতে পারছি না।’’ প্রসেনজিতের এই বক্তব্য সমর্থন করেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও। তিনিও এই আলোচনার অন্যতম অংশ। প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতার দাবি, ‘‘খুব কাঁচা বাংলায় বলতে বাধ্য হচ্ছি, পুরনো প্রবাদ ‘গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না’ এখনও প্রাসঙ্গিক। আমরা যখনই বলিউড বা হলিউডের তকমা নিয়ে ফিরি, তখনই কত আদর-কদর! ওই একই ব্যক্তি শুধু বাংলায় থাকলে তাঁকে কে পোঁছে?’’ পরমব্রত এও জানিয়েছেন, বাংলা ছবি মানেই যেন এখনও কম বাজেটের ছবি। সেখানে বেশি লগ্নির কথা কোনও প্রযোজক ভাবেনই না! অথচ গুজরাত, তামিল, তেলুগু, কন্নড় ছবির বাজেট লাফিয়ে বাড়ছে। তাঁর মতে, বাংলার এক জন ‘দেবদূত’ প্রযোজকের প্রয়োজন। যিনি প্রথম ছবিতেই লাভের অঙ্ক না কষে ছবির স্বার্থে বিনিয়োগ বাড়াবেন।

Latest Videos

এই বক্তব্য ছিল অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীরও। তাঁর মতে, ‘‘প্রত্যেক ভাষার ছবিকে সেই ভাষার আঞ্চলিক ছবি বলাই উচিত নয়। ছবি মানেই ছবি। তা সে যে ভাষারই হোক। কারণ, ভাল ছবির প্রতি আগ্রহ সব দর্শকের। ভাষা সেখানে কোনও বাধা তৈরিই করতে পারে না।’’ বিনোদন দুনিয়ার স্বার্থে এই মঞ্চ থেকে প্রসেনজিত ভারত-বাংলাদেশকে জোট বাঁধার আহ্বানও জানান। তাঁর মতে, ‘‘বাংলা ও বাঙালি মানে শুধুই ভারত নয়। বাংলাদেশও। তার জ্বলন্ত উদাহরণ চঞ্চল চৌধুরীর ‘হাওয়া’। ভাল ছবি কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে সব দেশেই ‘ঝড়’ হয়ে উঠতে পারে।’’ উপস্থিত ছিলেন পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। ছবির মতোই তাঁরও একই অভিজ্ঞতা বাংলা গানকে ঘিরে। বিক্রম যে পারিশ্রমিক মুম্বই গেলে পান সেই একই অনুষ্ঠান কলকাতায় করতে গেলে পারিশ্রমিক কমাতে হয় তাঁকে।

এই জায়গা থেকেই অরিন্দমের মতামত, এই ধরনের আলোচনা এক দিন করলেই সমাধান হবে না। পরস্পরের পিঠ চাপড়ালেও হবে না। প্রতি মুহূর্তে গভীর ভাবে ভাবতে হবে সবাইকেই। একই সঙ্গে জোর দেন বাণিজ্যিক ঘরানার ছবি নির্মাণেও। বলেন, ‘‘যে বিষয় আমরা জানতে পারি না তার গল্প পর্দায় উঠে এলে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসবেন। একই সঙ্গে দরকার সিঙ্গল স্ক্রিনও। যার সংখ্যা ১২শো থেকে কমতে কমতে ২৪৫!’’

 

 

 

 

 

Share this article
click me!

Latest Videos

Malda-র রাস্তায় সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ কর্মসূচি! সচেতনার বার্তা র‍্যালির মাধ্যমে
RG Kar Case Update Today : চাইলেন না চরম শাস্তি! মোক্ষম চাল দিলো অভয়ার পরিবার | Calcutta High Court
এবার আগুনের গ্রাসে অন্য এলাকা! পুড়ছে স্যান দিয়েগো কাউন্টির একাধিক অংশ San Diego fire | Wildfires
Suvendu on Kartik Maharaj : কেন পদ্মশ্রী পাচ্ছেন কার্তিক মহারাজ? খোলসা করে সবটাই বললেন শুভেন্দু
Suvendu on Trump : ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শুভেন্দু অধিকারী, কারন জানলে অবাক হবেন