১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীনতার নামে ভিক্ষা পেয়েছে দেশ দাবি তোলেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। এরপরই কঙ্গনার বিরুদ্ধে ধিক্কারে ভরে ওঠে নেটদুনিয়া। এবার কঙ্গনার পদ্মশ্রী প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন দেশের ভিবিন্ন প্রান্তের রাজনৈতিক কর্মীরা।
বিতর্কের শিরোনামে বারবার উঠে এসেছে কঙ্গনা রানাউতের (Kangana Ranaut) নাম। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের একটি অনুষ্ঠানে এসে দেশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বসেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)। তাঁর এই বিতর্কমূলক মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যে দেশের নানা প্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছে শোরগোল। নেটদুনিয়াযায় চরম কটাক্ষের শিকার ও হয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী (Bollywood Actress) । অনুষ্ঠানে এসে কঙ্গনা বলেন, 'দেশ প্রকৃত স্বাধীন হয়েছে ২০১৪ সালে।' এখানেই শেষ নয়, কঙ্গনা আরও বলেন যে, '১৯৪৭ সালে ভারত যা অর্জন করেছিল তা ছিল ভিক্ষা।' কঙ্গনার মত অনুসারে ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জমানায় ভারত আসল স্বাধীনতা পেয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় কঙ্গনার এই ভিডিও। এবং তারপরেই বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে এহেন আপত্তিমূলক মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস, শিবসেনা, এনসিপি, আম আদমি পার্টির নেতারা। শুধু তাই নয়, বিজেপি-র সহযোগী হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা (হাম)-ও কঙ্গনা রানাউতের এই মন্তব্যকে সমর্থন করেন নি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কিছুদিন আগেই পদ্মশ্রী (Padmashree) সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন এই বলিউড অভিনেত্রী (Bollywood Actress) । তারপরই এক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের অনুষ্ঠানে এসে এই ধরণের বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায় তাঁকে। কঙ্গনা রানাউতের (Kangana Ranaut)এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে তার পদ্মশ্রী (Padmashree) প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যরা। কঙ্গনাকে পদ্মশ্রী (Padmashree) সম্মাননা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। শুক্রবার তিনি বলেন, 'এই ধরণের সম্মান দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন করা উচিত। তাঁরা যাতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অসম্মান করতে না পারেন তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।'
পাশাপাশি এনসিপি নেতা নবাব মালিকের (Nawab Malik) মন্তব্য, 'দেশের স্বাধীনতা নিয়ে এমন মন্তব্য করার আগে কঙ্গনা নিশ্চয়ই তাঁর হিমাচল প্রদেশের বাড়িতে বসে ‘মালানা ক্রিম’ (হিমাচলের মালানা গ্রামে তৈরি মাদক) সেবন করেছিলেন।' অন্যদিকে শিবসেনার তরফে কঙ্গনার পদ্মশ্রী প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগ তুলেছেন। আম আদমি পার্টির মহারাষ্ট্র শাখা জানিয়েছে, কঙ্গনা রানাউতের (Kangna Ranaut) বিরুদ্ধে তাঁরা মুম্বই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করবে। এছাড়াও বিজেপি-র সহযোগী ‘হাম’-এর সভাপতি তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝিঁর তরফেও কঙ্গনাকে বয়কটের দাবি তোলা হয়েছে। পাশপাশি বিজেপি সাংসদ বরুন গান্ধী (BJP MP Varun Gandhi) কঙ্গনার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। টুইটারে তিনি লেখেন, 'কখনও সে মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma gandhi) আত্মত্যাগকে অপমান করেছে, গান্ধীজির হত্যাকারীকে শ্রদ্ধার্ঘ্য দেওয়ার কথা তো ছেড়েই দিলাম। এ বার মঙ্গল পাণ্ডে, রানি লক্ষ্মীবাঈ, ভগৎ সিংহ, চন্দ্রশেখর আজাদ, সুভাষচন্দ্র বসু-সহ লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের (Indian Freedom Fighters) অপমান করা হয়েছে। এই ধরনের চিন্তাভাবনাকে পাগলামি বলব না কি রাষ্ট্রদোহিতা?'