ভারত ও বাংলাদেশের প্রায় ৩ লক্ষ পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকরা লকডাউনে সিঙ্গাপুরে আটকে রয়েছে। তাদের উদ্ভুদ্ধ করতে সেখানের সরকার নতুন উদ্য়োগ নিয়েছে। শুরু হয়েছে, 'আওয়ার্স স্টোরিস ইওয়োর্স স্টোরিস' অর্থাৎ 'আমার তোমার সবার কথা'। এই প্রোজেক্টটাতে দেখা যাবে দুই বাংলার সেরা শিল্পীদের। যেখানে স্বয়ং ঋতুপর্ণাও মন খুললেন।
জয়সূচক কবিতা পাঠের পর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানালেন, সবাই এখন বড় দুঃসময়ের মধ্য় দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরই সঙ্গে দিলেন কবিতার মাধ্য়মে অভয় বার্তা, 'হাস্য়মুখে অদৃষ্টরে করবো মোরা পরিহাস'। তার মধ্য়ে মন খুলে বললেন, জীবনের নানা সময়ের আসা বাধা কীভাবে অতিক্রম করে তিনি ভেঙে দিয়ে সব সোশ্য়াল ট্য়াবু। একটা সময় অনেকেই বলেছিল, বিয়ের পর সংসার জীবনে সন্তানের জন্মের পর এই ফিল্মি দুনিয়ায় আর ফেরা যায় না। কিন্তু না, সেই সব বস্তা পচা কনসেপ্টকে ভেঙে দিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন সবই হয় ইচ্ছাশক্তির জোরে এবং পরিবারের ভালোবাসায়। আত্মবিশ্বাস-নিষ্ঠায় সব সম্ভব, যদি কোনও কাজে কেউ পারদর্শী হয়, তাহলে কেউ তাঁকে আটকাতে পারবে না। সারা বিশ্বে ফিরে তাকালে এমন অনেক বড় শিল্পিকে পাওয়া যাবে , যারা প্রত্য়েকেই তাদের পরিবারকে সঙ্গে নিয়েই সেরা কাজটি করে গেছেন।
আরও পড়ুন, হৃদয়ের নানা ঋতুতে-সঙ্গে 'সোশ্য়াল ইস্য়ু'তেও, বাজিমাত ঋতুপর্ণার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্য়ানেল
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আরও জানালেন, একবার একটি শুটিং করছিলাম। প্রভাত রায়ের ছবি। তখন আমি অন্তঃসত্তা, দ্বিতীয়বার মা হতে চলেছি। আমার প্রথম সন্তান অর্থাৎ আমার ছেলের তখন ডেঙ্গু হয়েছে। তখন সারারাত আমি হাসপাতালে বসে থাকতাম। আর ভোর হলেই শুরু হত শুটিং। এদিকে আমার সন্তানকে নিয়ে যাবতীয় চিন্তা-স্ট্রেস সবই সরাতে হত মুখের থেকে। কারণ সেলুলয়েডের ঋতুপর্ণাকে তো সবাই নায়িকার মতোই দেখতে চায়। তবে অনেকসময়ই ফিল্মের স্ক্রিপ্ট, ফেলা আসা জীবনের সঙ্গে মিলে যায়। এতটাই ছুঁইয়ে যায় যে, কখনও কখনও আবেগে টালমাটাল হতে হয়। তিনি আরও জানালেন, ফিল্মে একটা বাবার মৃত্য়ুর সিন ছিল, যা আমাকে টান মেরে নিয়ে যায় আমার নিজেরই জীবনে। আমার নিজের বাবাকে আমি শেষ দেখেছিলাম যখন তিনি কোমায় ছিলেন। আমেরিকাতে শো থাকায় পারিনি আসতে সময় মত। তাই বাবা শুয়েই ছিল, কিন্তু কথা বলা হল না আর।
ভারত ও বাংলাদেশের প্রায় ৩ লক্ষ পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকরা লকডাউনে সিঙ্গাপুরে আটকে রয়েছে। সিঙ্গাপুর সরকার তাদের সবার থাকা খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে এবং সবরকম সাহায্য় করছে। একটি হোয়াটসঅ্য়াপ মাধ্য়মে প্রয়োজনীয় তথ্য় পৌছে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে সিঙ্গাপুর সরকার এই এপার ও ওপার বাংলার শ্রমিকদের উদ্ভুদ্ধ করতে নতুন উদ্য়োগ নিয়েছে। তাদের সঙ্গে আছে দর্পন গ্লোবাল প্রধান শ্রেয়শী সেন। 'আওয়ার্স স্টোরিস ইওয়োর্স স্টোরিস' অর্থাৎ 'আমার তোমার সবার কথা'। এই প্রোজেক্টটাতে দেখা যাবে দুই বাংলার সেরা শিল্পীদের। ঋতুপর্ণা এখন সিঙ্গাপুরেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে আছেন। আর ঋতুপর্ণার সঙ্গেই প্রথম যোগাযোগ করেন এবং কবিতা পাঠান উনি। তারপর একে একে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায়, ফিরদৌস আহমেদ, লোপামুদ্রা মিত্র, মুস্ফাফা সারোয়ার ফারোকি ও আরও অনেককে নিয়েই শুরু হয়েছে 'আমার তোমার সবার কথা' প্রোজেক্টটি। যেখানে সেলেবরা তাদের নানা গল্প শোনাবেন। আর এই পুরো প্রোজেক্টটি পরিচালনা করছেন সার্থক দাশগুপ্ত।