চুরি হওয়া থেকে বাঁচাতে, আমের পাহারায় ৬ শিকারি কুকুর ও ৪ নিরাপত্তা রক্ষী

  • দুটি আমগাছকে পাহারা দিচ্ছে ৬টা শিকারি কুকুর
  • মোতায়েন রয়েছে চারজন নিরাপত্তা রক্ষী
  • জব্বলপুরের এক দম্পতি বাগানে রয়েছে এই আমগাছ
  • বিশ্বের দ্বিতীয় মূল্যবান আম এটি

Maitreyi Mukherjee | Published : Jun 17, 2021 4:37 PM IST / Updated: Jun 17 2021, 10:14 PM IST

২৪ ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছে ৬টা শিকারি কুকুর। আর তার সঙ্গে রয়েছে চারজন নিরাপত্তা রক্ষী। তবে এখন প্রশ্নটা হল যে কি পাহারা দিচ্ছে তারা? নাহ, তারা কোনও মানুষকে পাহারা দিচ্ছে না। আবার কোনও মহা মূল্যবান গয়নাকেও পাহারা দিচ্ছে না। তাহলে তারা কি পাহারা দিচ্ছে? আসলে দুটি আমগাছকে পাহারা দিচ্ছে তারা। এক মুহূর্তও গাছ দুটির থেকে তাদের নজর সরছে না। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। গয়না তো কোন ছাড়, তার থেকেও বেশি দামি হল এই দুটি আমগাছ। তাই তাদের জন্য এই নিশ্চিদ্র পাহারার আয়োজন করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে। 

আরও পড়ুন- টোটোর মধ্যেই স্ট্রিট ফুড সেন্টার, মৃদুলের লড়াইয়ে সঙ্গী এই তিনচাকার যান

মিয়াজাকি। এটি একটি জাপানি আম। জব্বলপুরের এক দম্পতি বাগানে রয়েছে এই আমের দুটি গাছ। আসলে এই আম দুর্লভ প্রজাতির। এমনকী, বিশ্বের দ্বিতীয় মূল্যবান আম এটি। এক কিলো আমের দাম ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। সাধারণ আমের থেকে এই আমকে দেখতে একেবারেই আলাদা। রং টকটকে লাল। আর সেই কারণে একে সূর্যের ডিমও বলা হয়।

জব্বলপুরে কৃষক দম্পতি সংকল্প পরিহার ও রানি পরিহার। চেন্নাইয়ের এক ব্যক্তির কাছ থেকে এই আমের চারা পেয়েছিলেন তাঁরা। তারপর তা নিজেদের বাগানে লাগিয়ে দেন। তখন অবশ্য এই আমের বিষয়ে কিছুই জানতেন না তাঁরা। আর পাঁচটা আমগাছের মতোই লালন পালন করে এই গাছ দুটিকে বড় করছিলেন। এমনকী, এই আমের আসল নাম যে কি তাও তাঁদের জানা ছিল না। নিজেদের সন্তানের মতোই গাছ দুটিকে বড় করছিলেন তাঁরা। আর এর নাম দিয়েছিলেন দামিনী। পরিহার দম্পতির আদর যত্নে বেড়ে উঠছিল গাছ দুটি।

কিন্তু, গাছটি বড় হতেই পরিহার দম্পতির সন্দেহ হয়। কারণ এই আম দেখতে অন্য আমের থেকে একেবারেই আলাদা। হলদে, কমলা বা সবুজ নয় এই আমের রং টকটকে লাল। যা দেখে প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন এটা বিষাক্ত কোনও ফল হবে। তারপরই খোঁজ নিতে শুরু করেন। খোঁজ নেওয়ার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যান তাঁরা। জানতে পারেন এই আমের আসল পরিচয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর মূল্য। 

এদিকে বাজারে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় সমস্যা। আম চুরি করার জন্য চোরের উপদ্রব বাড়তে শুরু করে। তারপরই এই গাছ দুটিকে রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন পরিহার দম্পতি। ততক্ষণে অবশ্য দুটি আম ও একটি গাছের ডাল চুরি হয়ে গিয়েছে। এরপর নিরাপত্তা আরও জোরদার করেন। মোতায়েন করা হয় ৬টি শিকারি কুকুর এবং ৪ জন কড়া নিরাপত্তারক্ষী। এখন এই নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা পেরিয়ে আম চুরি করার সাধ্য কারও নেই। 

আরও পড়ুন- এই বর্ষার মরশুমে চটজলদি বানিয়ে ফেলুন, স্টিক কাবাব আর ধনিয়া চাটনি

তবে কড়া নিরাপত্তা থাকলেও এই আম কেনার জন্য পরিহার দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন একাধিক ব্যবসায়ী। এই গাছের চারা ও আম কেনার জন্য অনেক টাকাও দিতে চাইছেন তাঁরা। জব্বলপুরের পরিহারদের বাগান এখন অন্যতম দর্শন স্থান। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো মধ্যপ্রদেশ টুর প্যাকেজের মধ্যে ঢুকে পড়বে এই বাগান। তাই পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার পর আপনিও চাইলে নিজের চোখে এই আমের দর্শন করে আসতেই পারেন। 

Share this article
click me!