চ্যালেঞ্জে ভরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ার। কখনও উত্থান, কখনও আবার পতন। শূন্য থেকে শীর্ষ, সবকিছুই দেখেছেন মমতা। নানা ঘাত-প্রতিঘাত, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সামনে আরও এক বিধানসভা নির্বাচন। জীবনের আরও একটা বড় চ্যালেঞ্জের সামনে তৃণমূল সুপ্রিমো। নন্দীগ্রাম আসন থেকে লড়ছেন মমতা। প্রতিপক্ষ একদা তারই সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারী। পুরো দেশের নজর এখন নন্দীগ্রামের। মহাসংগ্রামের জন্য আরও একবার প্রস্তুত মমতা। এই আবহে আরও একবার জেনে নিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ারে সংগ্রামের কাহিনি।
কলেজ জীবনে ছাত্র সংসদ করার পর ১৯৮৪ সালে সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে হারিয়ে লোকসভায় প্রথম প্রবেশ। প্রথম নির্বাচনেই সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে সকলকে চমকে দেন।
220
১৯৮৯ সালে সাফল্যের পর ব্যর্থতার সাক্ষীও থাকতে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মালিনী ভট্টাচার্যের কাছে যাদবপুর কেন্দ্রেই হেরে যান। তবে তাঁর রৈজনৈতির আন্দোলন থামেনি।
320
১৯৯০ সালে হাজরাতে সিপিআইএম কর্মীদের হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জখম হন। মাথা ফাটে তাঁর। সেই ঘটনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতির কেরিয়ারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
420
১৯৯১ সালে ফের এলেন লোকসভায়। দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে বিপ্লব দাশগুপ্তকে হারিয়ে। নরসিমা রাও সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন, ক্রীড়া, যুবকল্যাণ, নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী হন।
520
১৯৯৩ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মহাকরণ অভিযান। ১৩জন যুবকংগ্রেস কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। যারপর থেকে ২১ জুলাই শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
620
১৯৯৭ সালে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস নামে নতুন দল তৈরি করে নতুন করে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেন।
720
১৯৯৯ সালে নতুন দল গঠনের পরই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শরিক হন। রেলমন্ত্রীও হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
820
২০০১ সালে বনিবনা না হওয়ায় এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়েন। নির্বাচনে হারে পর সেই বছরই ফের যোগ দেন এনডিএ-তে।
920
২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য টিএমসির শোচনীয় পরজায় ঘটে। শুধু মাত্র দক্ষিণ কলকাতা আসনে জয়ী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এনডিএ সরকারের কয়লা এবং খনি দফতরের মন্ত্রী হন তিনি।
1020
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটাদের প্রস্তাবিত কারখানায় যাওয়ার সময় তাঁকে বলপূর্বক বাধা দেওয়া হয়। এরপর বিধানসভায় ভাঙচুর। প্রতিবাদে কলকাতায় ২৫ দিনের অনশন। সিঙ্গুর আন্দলন মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজৈনৈতিক জীবনের টার্নিং পয়েন্ট বলা হয়।
1120
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে পুলিসের গুলি চালনার ঘটনাতেই প্রতিবাদে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুর আন্দোলন নতুন ভবিষ্যৎ রচনা করে বঙ্গ রাজনীতির।
1220
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাপরিষদে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুরেও জয়ী। শক্ত হয় রাজনৈতির জমি।
1320
২০০৯ সালে বাম শাসনের অবসানের শুরু হয়। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট ৪২ টি আসনের মধ্যে ২৬টিতেই জয়ী হয়।
1420
২০১০ সালে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে জয়ী হয় ছোট লাল বাড়ির দখল নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১-র ললাট লিখন অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
1520
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট ২৯৪ আসনের মধ্যে ২২৭ আসনে জয়ী। যে রাইটার্স থেকে একদিন তাকে বার করে দেওয়া হয়েছিল সেই রাইটার্সেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পা রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
1620
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৪২ টি আসনের মধ্যে ৩৪টি-তেই জিতে অভাবনীয় ফল করে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির উত্থানে কিছুটা ধাক্কা খায় তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ৩৪ থেক কমে আসন দাঁড়ায় ২২। বিজেপি পায় ১৮টি। রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের তকমা যায় বিজেপির দখলে।
1920
এবার ২০২১ বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ছেন একদা তার লড়াইয়ের আঁতুরঘর নন্দীগ্রাম আসন। প্রতিপক্ষ এককদা তার ছায়াসঙ্গী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী।
2020
আরও এক মহাসংগ্রাম জেতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা দেশের নজর এখন নন্দীগ্রামে। শেষ হাসি কে হাসবে তার উত্তর অপেক্ষা করতে হবে ২ মে পর্যন্ত।