বিশ্বজুড়ে সাধারণত ৫০ বছরের উর্দ্ধে বয়সী মহিলাদের মধ্যে এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এই বিষয়ে নারীদের সচেতন করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হলেও, বর্তমানে মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদেরও সচেতন করা হচ্ছে। বর্তমানে সারা বিশ্বের মহিলাদের কাছেই স্তন ক্যান্সার একটি আতঙ্কের নাম। কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির ফলেই স্তন ক্যানসার চিহ্নিত করা হয়, এই অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির ফলে স্তনের মধ্যে শক্ত মাংসপিণ্ড সৃষ্টি হয়। যদিও বিভিন্ন রকম ক্যানসারের মধ্যে এটি চিকিৎসাযোগ্য। প্রথমে শনাক্ত করা না গেলে, এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
আরও পড়ুন- সাবুতে থাকা রেজিসটেন্স স্টার্চ, অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্য়াকটেরিয়াকে চাঙ্গা রাখে
চিকিৎসক গীতা মঞ্জুনাথের সংস্থা 'নির্মাই' একটি এআই ভিত্তিক থার্মাল সেন্সর ডিভাইস তৈরি করেছে যা স্তন ক্যান্সারকে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করতে সক্ষম। অর্থাৎ, যখন এই রোগের লক্ষণগুলি অনুভূত হয় না সেই সময় থেকেই এই ডিভাইস স্তন ক্যানসার সনাক্ত করতে পারবে। গীতা বলেছেন যে আমাদের দেশে স্তন ক্যান্সার সনাক্ত করতে ম্যামোগ্রাফি ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিটি ৪৫ বছরের কম বয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে তেমনভাবে সফল নয়। তবে এই সেন্সর ডিভাইস বুকের ওঠানামা তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে ছবি তুলে তার অস্বাভাবিকতাগুলি সনাক্ত করে ও তাদের বিশ্লেষণ করে। এই ডিভাইসটির এই কাজটি করতে কেবল ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। এই থার্মালেটিক্স সেন্সর ডিভাইসটি খুব সহজেই ৫ মিমি ছোট টিউমারও সনাক্ত করতে সক্ষম।
আরও পড়ুন- দিনে চার থেকে পাঁচ কাপের বেশি চা খেলে কী কী বিপদ দেখা দিতে পারে জেনে নিন
এই ডিভাইসটি দিয়ে এক গবেষক দল ২৫ হাজারেরও বেশি মহিলার পরীক্ষা করেছেন। ডিভাইসটি ১২ টি শহর এবং বেঙ্গালুরু, মাইসুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, মুম্বই, দিল্লির মতো ৩০ টিরও বেশি হাসপাতালে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকার তহবিলও পেয়েছে। চিকিৎসক গীতা মঞ্জুনাথের জানান, 'দু'বছর আগে আমার দুই আত্মীয় ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। সময়মতো ক্যান্সার ধরা পড়লে তাঁরা বেঁচে থাকতে পারতেন। এই ঘটনার পর থেকেই গীতার মনে হয় এই বিষয়ে কিছু করা প্রয়োজব। এরপর তিনি থার্মোগ্রাফি বিষয়ে এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। সেই মতো একটি ছোট গবেষণা দলও স্থাপন করা হয় এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় ক্যান্সার শনাক্ত করতে সক্ষম এই থার্মালেটিক্স ডিভাইস তৈরি হয়।
আরও পড়ুন- ওজন বশে রাখতে চান, রাতের খাওয়ার আগে মাথায় রাখাুন এই বিষয়গুলি
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ১ লক্ষ মহিলার মধ্যে ২৬ জন এই মারণ রোগে আক্রান্ত। এর সংখ্যা আরও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে ক্যান্সারের ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে সময়মতো ক্যান্সার নির্ণয় করা হয় না বলে মৃত্যু হার বেশি। এই কারণে খুব কম সংখ্যক মহিলাই ক্যান্সারকে হারিয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারেন। তাই গীতা মঞ্জুনাথের সংস্থা নির্মাই এর সৃষ্ট এই সেন্সর ডিভাইস যে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন আশার আলো দেখাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।