পিরিয়ডসে বন্ধ ঠাকুরঘরে যাওয়া, আদৌও কি যুক্তিযুক্ত- কি বলছে ইতিহাস

সেই দিনগুলিতে যেহেতু তাঁদের ভারি কাজ করতে গিয়ে যাতে অস্বস্তিতে পড়তে না হয়, তার জন্যই এই ধরনের অভ্যাস করা হয়েছিল যাতে মহিলারা তাদের পিরিয়ডের সময় মানসিক এবং শারীরিকভাবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পান।

মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে ট্যাবু আর নিয়মের শেষ নেই। এ যেন অভিশাপ, যেন অনেকটা অপরাধের মতো। কিন্তু দিন বদলাচ্ছে। ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের আগল ঠেলে বেরিয়ে এসেছেন বহু মহিলা। আমরা এখন এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে নারীরা শক্তিশালী হয়ে মহাশূন্যে পর্যন্ত পৌঁছেছে। তবে, মাসের ওই পাঁচদিন (Five Days in Month)। এখনও অদ্ভুত এক নঞর্থকতা(Negativity) জড়িয়ে এই তিনটে শব্দের মধ্যে। পিরিয়ড চলাকালীন মহিলাদের মন্দিরে যেতে নিষেধ করার প্রথা এখনও পরিবর্তন হয়নি (Women Forbidden From Entering Temple During Menses)।

সেই দিনগুলিতে, মহিলাদের ঋতুস্রাবের সময় এক কোণে বসতে বলা হত এবং কোনও ঘরের কাজ করতে বা প্রার্থনা করার জন্য মন্দিরে যেতে দেওয়া হত না। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে আমাদের বাড়ির মা কাকিমারা যারা তাদের সমস্ত কাজের মধ্যে এত গভীরতা রাখেন, তারা কেন এই অভ্যাসটি বয়ে নিয়ে চলেছেন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকেও তা বইতে বাধ্য করছেন ?

Latest Videos

কুসংস্কারের পিছনের ইতিকথা

প্রাচীনকালে, মহিলারা শারীরিক কাজ যেমন ভারী হাঁড়ি বহন, পরিষ্কার করা, রান্না করা, কৃষিকাজ করার মধ্যে সময় কাটাতেন। তখন স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিনের মতো সুবিধা ছিলনা। ফলে তাদের মাসিকের সময় অস্বস্তি, ক্র্যাম্প, অত্যধিক রক্ত​প্রবাহ, বিষণ্নতা, মেজাজের পরিবর্তন এবং বিভিন্ন ইমোশনের মধ্যে দিয়ে যেতেন,যা অত্যন্ত স্বাভাবিক হরমোনাল প্রক্রিয়া। 

সেই দিনগুলিতে যেহেতু তাঁদের ভারি কাজ করতে গিয়ে যাতে অস্বস্তিতে পড়তে না হয়, তার জন্যই এই ধরনের অভ্যাস করা হয়েছিল যাতে মহিলারা তাদের পিরিয়ডের সময় মানসিক এবং শারীরিকভাবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পান। তার ওপর মহিলাদের তখন তাদের পিরিয়ডের জন্য কাপড় বা পাত্র ব্যবহার করতে হত, কারণ তখন স্যানিটারি ন্যাপকিন ছিল না। অতএব, সেই সময় তাদের এক কোণে বসতে বলা এবং তাদের পিরিয়ডের সময় চলাফেরা করতে নিষেধ করা হয়েছিল কেন, তার একটা কারণ সহজেই অনুমেয়। 

ঠিক একই কারণে মন্দিরে যাওয়া সেই সময় বন্ধ ছিল। যা আজ কুসংস্কারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আজকের মহিলাদের জীবন অন্য খাতে বইছে। কোনও বাধাই তাঁদের কাছে বাধা নয়। বর্তমান প্রজন্মের মহিলাদের জীবন আগের প্রজন্মের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আজ নতুন নতুন ব্র্যান্ডের স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য। দোকানে দাঁড়িয়ে সেই ন্যাপকিন কিনতে কোথাও আজ লজ্জা নেই, বাধা নেই। ফলে স্কুল, কলেজ, অফিসে যেতে বা অবাধে কাজ করার অনুমতি তাঁরা ছিনিয়ে নিয়েছে। 

মহিলাদের যে জৈবিক প্রক্রিয়াতে পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চারের ইঙ্গিত আসে, সেই প্রক্রিয়াকে আদৌ অশুচি করে তুলতে পারে কোনও দেহ? মহিলাদের যে জৈবিক প্রক্রিয়া প্রাণ ধারণ করার সম্ভাবনা তৈরি করে, তা কীভাবে স্থান, কাল বা দেবস্থানকে অপবিত্র করে তোলে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

এটিএম লুঠের ছক ভেস্তে দিলো পুলিশ! ভীন রাজ্যের যোগ, চাঞ্চল্য New Barrackpore-এ | North 24 Parganas
Hooghly-তে ফের কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ED-র বড়সড় অভিযান! এলাকায় উত্তেজনা তুঙ্গে | Hooghly News Today
চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে হিন্দুদের মহামিছিল বাংলাদেশের রংপুরে, দেখুন | Chinmay Krishna Das
Suvendu Adhikari : 'চিকিৎসা করাতে ভারতে আসবেন না' #shorts #suvenduadhikari #bangladeshcrisis
বাংলায় দেব দেবীর মূর্তি ভাঙার অভিযোগ তুলে বিধানসভা ওয়াক আউট শুভেন্দুদের, দেখুন ভিডিও | BJP Walk Out