Independence day story: ভগৎ সিংকে কলকাতায় আশ্রয় দিয়েছিলেন সুশীলা দিদি, জানুন এই স্বাধীনতা সংগ্রামীকে

সুশীলা মোহন ব্রিটিশ ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের ১৯০৫ সালের ৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় সেনা বাহিনীর চিকিৎসক।

 

 

স্বাধীনতার যুদ্ধে অনেক মানুষে প্রত্যক্ষ যোগ ছিল। পুরুষ কি মহিলা মাঠে নেমে আন্দোলন করেছিলে, জেলে গিয়েছিলেন, জেল খেটেছিলেন। অনেতে ব্রিটিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন। কেউ আবার ফাঁসিকাঠে ঝুলেছিলেন দেশ স্বাধীন করার লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু এমন অনেক মানুষ ছিলেন যারা পরোক্ষে যুক্ত ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। স্বাধীনতার যুদ্ধে যাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এই চুপচাপ যোগদান করা ছাড়া স্বাধীনতা সম্ভব হত না। কিন্তু তাদের আবেদনও ভোলার সময। স্বাধীনতা দিবসের প্রাককালে আসুন সেই সব সেনানিদের স্মরণ করে। এক মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীলা দিদিকে এই অমৃত মুহুর্তে স্মরণ করি।

Latest Videos

সুশীলা দিদিঃ

পুরো নাম সুশীলা মোহন। ব্রিটিশ ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের ১৯০৫ সালের ৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় সেনা বাহিনীর চিকিৎসক। সুশীলা মোহন ১৯২১-২৭ সালে জলন্ধরের আর্য মহিলা কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন জাতীয়তাবাদী কবি। ছাত্র-অবস্থাতেই তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেম। একাধিক রাজনৈতিক কাজে যুক্ত ছিলেন। অধ্যক্ষ শান্নো দেবী ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ কুমারী লজ্জাবতীর সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সক্রিয় বিল্পবী সদস্য সুশীলাঃ

সুশীলা হিন্দি সাহিত্যের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে দেরহাদুনে গিয়েছিলেন। সেই সময় লাহোর ন্যাশানাল কলেজের ছাত্রদের সংস্পর্শে আসেন। তারপরই সক্রিয়া রাজনীতিতে যোগদান করেন। সেই সময় থেকেই তিনি পূর্ণাঙ্গ কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ভগবতী চরণ ভোহরা এবং তাঁর স্ত্রী দুর্গা দেবীর সংস্পর্শে আসেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলার পর রামপ্রসাদ বিসমিল, আশফাক উল্লাহ খান, রাজেন্দ্র লাহিড়ী এবং রোশন সিং-এর ফাঁসি তাকে হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের একজন পূর্ণাঙ্গ কর্মী হতে অনুপ্রাণিত করেছিল। যদিও তাঁর বাবার প্রবল আপত্তি ছিল। তাতে অবশ্য সুশীলা নিজের মন পরিবর্তন করেননি। তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান। কিন্তু বাবা তাঁর পথকে সমর্থন করার পর আবারও বাড়ি ফিরে আসেন। তারপর সেখান থেকেই সরাসরি বিল্পবী কাজকর্ম চালাতেন তিনি। একটা সময় তিনি কলকাতাতেও ছিলেন। তিনি ছজ্জুরাম চৌধুরীর কন্যার গৃহশিক্ষকের কাজও করেছেন। কাকোরী মামলা লড়ার জন্য আসামীদের নিজের সোনার চুড়ি দিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সোনার চু়ড়িটি তাঁর মা তার বিয়ের জন্য তৈরি করে রেখেছিলেন।

সুশীলা-ভগৎ সিং সম্পর্ক

সুশীলার সঙ্গে ভগৎ সিং-এর সম্পর্ক ছিল। ১৯২৭ সালে ১৭ ডিসেম্বর সালে সন্ডার্স হত্যার পরে লাহোরে ভগৎ সিং ও দুর্গাদেবী লাহোর থেকে পালিয়ে লুকিয়ে থাকার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। সুশীলা দিদি তখন এগিয়ে আসেন। তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন কলকাতাতে। ভগৎ সিং সুশীলাকে দিদির হিসেবেই সম্মান দেন। তারপর থেকেই তিনি সকলেরই সুশীলা দিদি হয়ে যান। শোনাযায় সেই সময় সুশীলা অনেক ব্রিটিশ পুলিশের বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি ভগৎ সিংকে সহযোগিতা করেছিলেন।

কলকাতায় থাকার সময়, তিনি সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে সুভাষ চন্দ্র বসু কর্তৃক সংগঠিত প্রতিবাদে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীকালে, দিল্লি এবং লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় তাদের ভূমিকার কারণে ভগৎ সিং এবং সহ-বিপ্লবীরা গ্রেপ্তারের সম্মুখীন হলে, তিনি অন্যান্য নারী কর্মীদের সাথে ভগত সিং প্রতিরক্ষা কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কমিটির লক্ষ্য ছিল লাহোর এবং দিল্লী ষড়যন্ত্র মামলার সাথে যুক্ত আন্ডারট্রায়ালদের আইনি লড়াইয়ের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা। তার নিঃস্বার্থতা এবং সেবা-ভিত্তিক আচরণের কারণে স্নেহের সাথে "দিদি" নামে পরিচিত, তিনি একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে গেছেন।

সুশীলা দিদি একটা সময় হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি জাতীয় কংগ্রেসে যুক্ত হন। দিল্লি অধিবেশনে অংশ নিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৩৩ সালে শ্যাম মোহনের সঙ্গে বিয়ে করেন। শ্যাম মোহান ছিলেন পেশায় আইনজীবী, জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য।

সুশীলা দিদি দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে দিল্লিতে বাস করতেন। অল্পদিনের জন্য তিনি দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরবর্তীকালে দিল্লির কংগ্রেস কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৩ জানুয়ারি ১৯৬৩ সালে সুশীলা দিদি মারা যান। তাঁকে সম্মান জানিয়ে দিল্লির খারি বাওলি এলাকার নাম সুশীলা মোহন মার্গ নামকরণ করা হয়।

 

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

'আমরা স্বাধীন করালাম আর বাংলাদেশ বাবা-মা ভাবছে পাকিস্তানকে', বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Locket Chatterjee
‘TMC-র জন্য West Bengal এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য’ তৃণমূলকে ধুয়ে দিলেন Adhir Ranjan Chowdhury
সৎ বাবা না পাষণ্ড! কাণ্ড দেখে আঁতকে উঠবেন আপনিও! | South 24 Parganas News Today
সম্পত্তির দ্বন্দ্বে ভয়ংকর পরিণতি! তীব্র উত্তেজনা Paschim Medinipur-এ | North 24 Parganas News Today
Live : সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি অধীর রঞ্জন চৌধুরী, কী অভিযোগ, দেখুন সরাসরি #adhirranjanchowdhury