শিয়রে প্রথম দফার ভোট
তার আগেই 'তালিবানি শাসনের অভিযোগে বিদ্ধ নীতিশ কুমার
দুর্গাপূজার বিসর্জনের মিছিলের উপর পুলিশের গুলিচালনার অভিযোগ
পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেঝছেন চিরাগ পাসওয়ান
সামনেই বিহারের ভোট। আর তার আগে রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে অসামাজিক কাজকর্ম। তার প্রভাব পড়ল এমনকী দুর্গাপূজোর ভাসানেও। সোমবার বিহারের মুঙ্গের জেলার বিসর্জন-কে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলজেপি নেতা চিরাগ পাসওয়ান গুরুতর অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার-এর বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, সোমবার প্রতিমা নিমজ্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে জলে নামা নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক এবং পুলিশদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়েছিল। মুঙ্গের পুলিশ-এর দাবি, বিসর্জন দিতে আসা দলটিতে থাকা কিছু 'অসামাজিক উপাদান' পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেছিল। সেই থেকে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ উন্মত্ত জমতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ।
তবে মুঙ্গের পুলিশ গুলি চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি জনতার ছোঁড়া পাথরের আঘাতে ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পাথর বৃষ্টির মধ্যেই জনতার মধ্য থেকে একজন আচমকা গুলি চালায়, আর তার আঘাতেই অনুরাগ পোদ্দার নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এমনকী, পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করেও গুলি করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর এলাকা থেকে তিনটি পিস্তল, গুলি ও কার্তুজ পাওয়া গিয়েছে।
বুধবার ২৮ অক্টোবরই বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম পর্ব। তার আগে পুলিশের এই বক্তব্য ছাপিয়ে উঠে এসেছে রাজনৈতিক তরজা। নীতিশ কুমার-এর সরকারের সঙ্গে 'তালিবানি শাসনে'র তুলনা টেনে তাঁর প্রবল সমালোচক এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ান, দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে যাওয়া হিন্দু ভক্তদের নীতীশ কুমারের পুলিশ গুলি চালিয়েছে, বলে অভিযোগ করেছেন। মুঙ্গের পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা উচিত বলে মত দিয়েছেন তিনি। স্থানীয় এসপিকে অবিলম্বে বরখাস্ত করার দাবিও করেছেন। সেই সঙ্গে মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং সরকারী চাকরি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পাসওয়ান।
তবে নীতিশ সরকারের পাশেই থাকার বার্তা দিয়েছে বিজেপি। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল মোদী ঘটনাটিকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলেছেন। তাঁর মতে নির্বাচন কমিশনের এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যদিও পুলিশ দাবি করছে পুলিশের গুলি ছোঁড়াটা একেবারেই গুজব। শান্তি বিঘ্নিত করতেই কিছু মানুষ ওই ঘটনার পরই পুলিশের বিরুদ্ধে ওই গুজব ছড়িয়েছিল। তাতে সাময়িকভাবে এলাকায় হিংসাও ছড়িয়ে পড়ে। তবে মুঙ্গের-এর পুলিশ সুপার লিপি সিং জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।