উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার একটি ছোট্ট গ্রাম
সেখানেই নাকি রামায়ণের জাম্বোবানের পুনর্জন্ম ঘটেছে
এক ব্যক্তি ভগবান জাম্বোবান বলে পুজো পাচ্ছেন
যদিও তার দাবি এটা অভিশাপ
রামায়ণে রামসখা হিসেবে যে তিনজন পরিচিত, তাঁরা হলেন বানররাজ সুগ্রীব, রাজপুত্র অঙ্গদ ও ভালুকরাজ জাম্বোবান। সেই জাম্বোবান-এরই নাকি মানবরুপে পূণর্জন্ম ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার একটি ছোট্ট গ্রামে। অন্তত এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের। হিন্দু দেবতা ভগবান জাম্বোবান হিসাবে তাঁদের কাছ থেকে পুজো-ও পান সেই ব্যক্তি। তবে 'ভগবান'-এর নিজের দাবি, এ তার জীবনের অভিশাপ।
জাম্বোবান-এর পুনর্জন্ম হিসাবে যে ব্যক্তিকে পুজো করে গ্রামবাসীরা, তাঁর নাম ডাবুল মিশ্র। ৩২ বছর বয়সী সাধারণ নিপাট ভালোমানুষ। কিন্তু, গ্রামে তাঁর এমন ঐশ্বরিক খ্যাতির কারণ তাঁর মুখের বিকৃতি। জন্ম থেকেই তাঁর মুখে একটি টিউমার রয়েছে, যার ফলে তার মুখটি ফুলে থাকে। এই অস্বাভাবিক বড় টিউমারটির পিছনে তাঁর সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে গিয়েছে। টিউমারটি অপসারণের জন্য বেশ কয়েকবার তিনি চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, সব চেষ্টাই বিফলে গিয়েছে। স্থানীয় মন্দিরে পূজারি হিসেবে কাজ করে যেটুকু রোজগার তাতেই স্ত্রী-সন্তানদের মুখে অন্ন তুলে দেন। ।
আরও পড়ুন - করোটি কেটে চলছে মস্তিষ্কের অপারেশন, সেই অবস্থায় বেহালায় সুর তুললেন রোগী, দেখুন
সম্প্রতি অবশ্য তাঁর এই বিকৃতির কারমে তিনি রীতিমতো সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছেন। গ্রামবাসীরা তাঁর মুখের বিকৃতিটিকে আশীর্বাদ হিসাবে দেখছেন। অনেকেরই বিশ্বাস তিনি রামায়ণে বর্ণিত রামসখা জাম্বোবানের পুনর্জন্ম। মুখে মুখে বহুদূরের গ্রামেও তা রটে গিয়েছে। তাঁর সাক্ষাত পেতে ভিড়-ও হচ্ছে না মন্দ।
আরও পড়ুন - পেশায় বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার, অদ্ভূত কারণে ৪৫ বছর ধরে মাঠে-ঘাটেই করেন মলত্যাগ
গ্রামবাসীর কাছ থেকে ভগবানের সম্মান পেলেও ডাবুল মিশ্র তাঁর এই বিকৃতিটিকে অভিশাপ হিসাবেই দেখেন। গ্রামবাসীরা তাঁকে পুজো করুক, তাঁর মুখের অবস্থা দেখে তাঁকে অর্থ প্রদান করুক, এটা তাঁর একেবারেই পছন্দ নয়। কারণ তাঁর আত্মসম্মানে লাগে। তিনি সাফ জানিয়েছেন, 'আমি এটাকে অভিশাপ হিসাবেই মনে করি, তবে লোকেরা এখন আমার মধ্যে একজন ভগবানকে খুঁজে পেয়েছে। আমাকে জাম্বোবান-এর অবতার হিসাবে পুজো করছে'।
আরও পড়ুন - ট্রাম্প-ই তাঁর শিব ঠাকুর, স্বপ্নে দেখার পর থেকে চার বছর ধরে চলছে নিত্যপুজো
তাঁর আক্ষেপ, সরকারি আধিকারিকরা তাঁর অবস্থা সম্পর্কে সবকিছুই জানেন। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে কোনওদিন তিনি কোনও সাহায্যের প্রস্তাব পাননি। এই অবস্থায় তিনি গ্রামের মন্দিরে পূজারি হিসাবে কাজ করেন। ভক্তদের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করেন। ধর্মীয় সমাবেশে গান গেয়ে উপার্জন করেন। বিয়ে করেছেন এক অন্ধ মহিলা-কে। তিনি অকপটে জানিয়েছেন, স্বামীকে তিনি দেখতে পান না এটা একদিকে ভালোই, অন্যথায় তাঁর জীবন বেশ কঠিন হত।