বিজেপি বিরোধিতায় বড় ফাটল, মমতা ছাড়াও সনিয়ার নৌকায় উঠলেন না পাঁচ হেভিওয়েট

  • সবার প্রথম সনিয়া গান্ধীর বিরোধী বৈঠকে যোগ দেবে না বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
  • তার জন্য তাঁর সমালোচনাও কম হয়নি
  • এদিন কিন্তু আরও চার হেভিওয়েট বিরোধী মুখ অনুপস্থিত থাকলেন
  • তাহলে বিরোধীদের এই বিক্ষোভ কী শুধুই নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে?

amartya lahiri | Published : Jan 13, 2020 10:55 AM IST / Updated: Jan 13 2020, 05:24 PM IST

লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীরা বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে চেয়েছিল। পুরোপুরি না হলেও আংশিকভাবে জোট তৈরিও হয়েছিল। কিন্তু, ইভিএম-এ বিজেপির কাছে দুরমুশ হওয়ার পর থেকে সেই মন্ত্র আর শোনা যাচ্ছিল না। কিন্তু লোকসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির সময়টা ভালো যাচ্ছে না। বিশেষ করে নাগরিক আইন বিরোধী আন্দোলনের জেরে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে মোদী-শাহ'এর দল। কিন্তু বিরোধীরা তার সুবিধা নিতে পারছে কি?

সোমবার দিল্লিতে সনিয়া গান্ধীর আহ্বানে জেএনইউ হিংসা এবং সিএএ নিয়ে বিক্ষোভসহ অন্যান্য ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দলগুলির বৈঠক যদি কোনও ইঙ্গিত দেয়, তাহলে বলতে হবে না। তারা তা পারছে না। বিরোধীরা বিজেপির যতই মুখে বলুন তাঁদের আন্দোলন দেশ বাঁচানোর, দিনের শেষে সেই যে যার নিজের স্বার্থটাই বুঝে নিতে চাইছেন।

সনিয়ার এদিনের বৈঠকে মমতা ছাড়াও যোগ দিলেন না বিরোধী মঞ্চের আরও চার হেভিওয়েট মুখ - মায়াবতী, অখিলেশ যাদব, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এমকে স্টালিন ও উদ্ধব ঠাকরে (তাঁকে এই মুহূর্তে বিজেপি বিরোধী মুখ বলা যায়)।
 

শুরুটা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, বাম-কংগ্রেস রাজ্যে সিএএ বিরোধিতা নিয়ে সংকির্ণ রাজনীতি করছে। তার প্রতিবাদে তিনি জোটে থাকবেন না, একা লড়বেন। পাল্টা বাম-কংগ্রেস তাঁকে বিজেপির বি টিম বলে কটাক্ষ করেছে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, ভারত বনধের পর তাঁর আন্দোলন বাম-কংগ্রেস হাইজ্যাক করতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন মমতা।

আরও পড়ুন - 'ভয়ার্ত চোখে দেখছে দেশ, সংবিধান থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি'

মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি কারণ দেখিয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক করলে রাজস্থানে দলীয় কর্মীদের মনে আঘাত লাগবে। সেই রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে বিএসপি বাইরে থেকে সমর্থন দিলেও, কংগ্রেস তাদের দল ভাঙিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ মায়াবতীর। তাই সিএএ, এনআরসির বিপক্ষে থাকলেও কংগ্রেসের সঙ্গে নেই। এমনকী শেষ মুহূর্তে পিসির পথেই পা বাড়িয়েছেন ভাইপো অখিলেশ যাদবও। সমাজাদী পার্টি কী কারণে বৈঠকে যোগ দিল না তা এখনও অজানা।

আরও পড়ুন - বিজেপি বিরোধী জোটে ধাক্কা দিলেন মমতা, ভিত্তি হারাতে পারে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন

আম আদমি পার্টি বৈঠকে যোগ না দেওয়ার কোনও কারণ দেখায়নি। তবে বোঝাই যায় সামনে দিল্লির ভোট আসছে। এই সময় কংগ্রেসের সঙ্গে গা ঘেষাঘেষিটা ভালো দেখায় না। এমকে স্টালিনের ডিএমকে ঠিক কী কারণে শেষ মুহূর্তে বৈঠকে যোগ দেয়নি তা এখনও জানা যায়নি। আর সদ্য শিবিড় বদলানো শিবসেনার দাবি, বিরোধী বৈঠকে তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আসলে তারা এখনও বুঝে উঠতে পারছে না কোন পথে চলবে। সংসদের এক কক্ষে তাঁরা সিএএ সমর্থন করেছিল, আরেক কক্ষে ভোট দেয়নি। আপাতত, ধরি মাছ না ছুঁই পানি নীতি নিয়েই চলতে চাইছে তাঁরা।

আরও পড়ুন - এবার অধীরের মুখে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর, অস্বস্তি বাড়ল সেনাপ্রধানের

ফলে এদিন সংসদের অ্যানেক্স বিল্ডিং-এ দুপুর ২টো থেকে শুরু হওয়া বিরোধী বৈঠকে যোদ দিল, এনসিপি, আইইউএমএল, বামদলগুলি, আরজেডি, এইউডিএফ-সহ আরও কয়েকটি দল। বলাই বাহুল্য বিরোধীদের মঞ্চে যত ভাগ হবে ততই হাসি চওড়া হবে মোদী-শাহ'এর। তা কাগজে কলমে যতই দেশজোড়া বিক্ষোভ চলুক। বিরোধী ঐক্য একেবারে শেষ, তা ববলা যাবে না, তবে এদিনের ঘটনা য়ে বড় ধাক্কা তা বলাই যায়।

Share this article
click me!