মোরাবি ব্রিজ ধ্বসে নিহত রাজকোটের বিজেপি সংসদ মোহনভাই কল্যাণজি কুণ্ডরিয়ার পরিবারের ১২ জন সদস্য

গুজরাটে ব্রিজ ধ্বসে এবার মারা গেলেন রাজকোটের বিজেপি সাংসদ মোহনভাই কল্যানজি কুণ্ডারিয়া পরিবারের ১২ জন সদস্য।

সূত্রের খবর তারা পিকনিক সেরে বাড়ি ফিরছিলেন সেদিন ওই পথ ধরে । সেতুর উপর উঠতেই এমন বিপত্তি ঘনিয়ে এলো তাদের জীবনে।

Bhaswati Mukherjee | Published : Oct 31, 2022 2:07 PM IST

গুজরাটের মোরবি ব্রিজ দুর্ঘটনায় ফের নয়া মোড়। গুজরাটে ব্রিজ ধ্বসে এবার মারা গেলেন রাজকোটের বিজেপি সাংসদ মোহনভাই কল্যানজি কুণ্ডারিয়া পরিবারের ১২ জন সদস্য। রবিবারে গুজরাটের মোরবির ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১৪১ জনের । যেই সময় সেতুটি ভেঙে পড়ছিলো সেই সময় সেতুর ওপর উপস্থিত ছিল আরও ৫০০ জন। দুর্ঘটনার সময় সেতুর উপরে থাকা ৫০০ জনের মধ্যেই আটকা পড়েছিল মোহনভাই কল্যাণজির পরিবারের ওই সদস্যরা। সূত্রের খবর তারা পিকনিক সেরে বাড়ি ফিরছিলেন সেদিন ওই পথ ধরে । সেতুর উপর উঠতেই এমন বিপত্তি ঘনিয়ে এলো তাদের জীবনে।

সম্প্রতি ওই সংসদ এক সংবাদমাধ্যমকে জানান যে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৫ জন ছিল শিশু , ৪ জন মহিলা , ও ৩ জন পুরুষ। তারা সবাই সংসদের বোনের পরিবারের সদস্য ছিলেন। রবিবার এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর সংসদ নিজেই যান ঘটনাস্থলে।তারপর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে উদ্ধারকার্যের তদারকি করেন।তিনি আরও বলেন যে, " যারা মারা গেছে তারা সবাই আমার বড়ো ভাইয়ের নিকটাত্মীয়। এ দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। "

কারা কারা মারা গেছেন সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে কুণ্ডারিয়া জানান , " আমার বড়ো ভাইয়ের ফুফুর চার মেয়ে। তাদের তিনজনের স্বামী ও পাঁচ সন্তান সবাই একসঙ্গে দুর্ঘটনায় নিহত হন। " দুর্ঘটনায় মৃতরা ছিলেন প্রধানত ট্যাংকারা তালুকের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। সম্প্রতি তারা মোরাবিতে একটি বাড়ি কিনেছিলেন। সেই বাড়িতেই ছুটির দিন পিকনিক করতে গেছিলেন তারা। আর পিকনিক থেকে ফেরার পথেই এমন ভয়ানক দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় তাদের । ঘটনাটি ঘটার আধ ঘন্টার মধ্যেই সাংসদ কুন্দরিয়া সেখানে পৌঁছন। গতকাল থেকে তিনি এখনো সেখানেই আছেন। উদ্ধারকার্যে হাত লাগাচ্ছেন।

এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং স্থানীয় প্রশাসন এখনো জলে পরে যাওয়া মানুষের অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। উদ্ধারকার্যও চলছে এখন পুরোদমে । দুর্ঘটনায় যারা বেঁচে গেছে তাদের সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। এবং বাকিদের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য মাচ্ছু নদীতে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং উদ্ধারকারীরা সকলেই এখন নৌকা করে ঘটনাস্থলে টহল দিচ্ছে। "

গুজরাটের মোরবি শহরের মাচ্ছু নদীর উপর শতাব্দী প্রাচীন এই ঝুলন্ত সেতুটি ভেঙে পড়ার সময় স্তুতির উপরে প্রায় ৫০০ জনের মতো মানুষ ছিল যার বেশিরভাগই হলেন মহিলা এবং শিশু । এনডিআরএফ, সেনা, এসডিআরএফ এবং স্থানীয় প্রশাসনের পাঁচটি দল যুদ্ধের ভিত্তিতে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। সেতুটি খোলার কি অনুমতি দেওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে, বিজেপি সাংসদ বলেন, "কীভাবে এই বিয়োগান্ত ঘটনাটি ঘটেছে তা খুঁজে বের করার জন্যই তদন্ত করা হবে। যারা দায়ী তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল মহিলা, শিশু এবং স্থানীয়। উদ্ধারকার্যে হাত লাগাচ্ছেন অনেক বেসরকারি এনজিওরাও।

এখনও পর্যন্ত মোট ৬০ টিরও বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ছিল শিশু, মহিলা এবং বৃদ্ধ। বাকিদেরও উদ্ধার করা হয়েছে। এনডিআরএফ উদ্ধারকার্যে এখনো তৎপর। আমরা বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি, এটা খুবই দুঃখজনক,” রবিবার মন্ত্রী বলেন।

গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি রাজ্যের রাজধানী থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে মোরবিতে সাংবাদিকদের বলেন যে রাজ্য সরকার ধ্বসের তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।

ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। সাংঘভি বলেন, যারা দায়ী তাদের দোষ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারা অনুযায়ী (অপরাধী হত্যাকান্ডের জন্য ), ৩০৮ ধারা অনুযারী (ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যু ঘটানোর জন্য ) এবং ১১৪ ধারা অনুযায়ী (অপরাধের সময় প্ররোচনাকারীদের উপস্থিত) এফআইআর দায়ের করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল মৃত ও আহতদের জন্য অনুগ্রহ ঘোষণা করেছেন।সাংবাদিক সম্মেলনে হর্ষ সাংঘভি বলেন, "এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেতুটি ভেঙে পড়ে। দীপাবলির ছুটির দিন এবং রবিবার হওয়ায় এখানে পর্যটকদের ভিড় ছিল। সেতুটি গুজরাটের একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।সারা রাত ধরে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদিও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন।

 

ফের ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা , তৃতীয়বারের জন্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হলেন তিনি

সোমালিয়ায় জোড়া গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১০০, শিক্ষমন্ত্রক লক্ষ্য করে হামলা আল-শাবাবের

Share this article
click me!