মে মাসের মধ্যেই ৩০০০০ ভারতীয়ের মৃত্যুর আশঙ্কা, জুন থেকে মিলবে না হাসপাতালের বেড

Published : Mar 23, 2020, 05:36 PM IST
মে মাসের মধ্যেই ৩০০০০ ভারতীয়ের মৃত্যুর আশঙ্কা, জুন থেকে মিলবে না হাসপাতালের বেড

সংক্ষিপ্ত

রবিবারই একলাফে বেড়েছে ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বিপজ্জলক বাঁকে দাঁড়িয়ে ভারত তথ্য বিশ্লেষণ বলছে মে মাসের মধ্যেই অন্তত ৩০,০০০ মানুষের মৃত্যু হবে জুন মাস থেকে মিলবে না হাসপাতালের বেড

রবিবারই ভারতে মভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতদিন মহামারীটির ভয়াবহতা ভারতবাসী সেভাবে বুঝতে পারেনি। কিন্তু অবস্থা এখন ঘোর সঙ্কটময়। তব্যে তথ্য বিশ্লেষণ বলছে পরের কয়েক সপ্তাহে যে পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে তা কারোর কল্পনারও বাইরে। তথ্য বিশ্লেষকদের দাবি আগামী মে মাসের শেষের মধ্যেই ভারতে অন্তত ৩০,০০০ মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবেন। আর জুন মাসের মধ্যে তৈরি হবে ব্যাপক স্বাস্থ্য সঙ্কট, কারণ তখন আর হাসপাতালে বেড পাওয়া যাবে না।

ভারত দাঁড়িয়ে বিপজ্জনক বাঁকে

ভারতে তাফপর্যপূর্ণ ভাবে বেড়েছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। ৩০ জানুয়ারি ভারতে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছিল। তারপর থেকে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ জনে পৌঁছতে চল্লিশ দিন সময় লেগেছিল, তারপর ১০০ জনে পৌঁছে যায় পরের পাঁচ দিনে, পরের তিন দিনে ১৫০। আর তারপর ২০০ জনে পৌঁছায় পরের মাত্র দু'দিনে। এখান একেবারে চন্দ্রযানের গতিতে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। আশঙ্কার বিষয় হল, ইতালি বা অন্যান্য দেশে-ও দেখা গিয়েছে প্রথম কয়েক সপ্তাহ যাওয়ার পরই ভয়াবহভাবে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কাজেই ভারতে এর পরের কয়েক সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

মৃত্যু মিছিলের জন্য থাকতে হবে তৈরি

ভারতে ও অন্যান্য দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির এই হার এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে মে মাসের শেষদিকে ভারতে প্রায় ৩০,০০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হবে এই রোগে। আর অন্তত ১ কোটি মানুষের দেহে ধরা পড়বে সংক্রমণ। জৈব-পরিসংখ্যানবিদদের একটি দল এর একটি মডেল তৈরি করে এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। তাঁদের অনুমান করেছে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। এমনকী ১৫ মে-র মধ্যে প্রায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটিতে পৌঁছে যেতে পারে।

উপচে পড়বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী ভারতে প্রতি ১০,০০০ জনের জন্য হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা রয়েছে মাত্র ০.৫টি। এর অর্থ এই হারে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো সামনের কয়েক মাসে একেবারে উপচে পড়বে। জুন মাসের প্রথম দিক থেকেই ভারতে আর আতক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বেড মিলবে না। ভারতে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট এবং ভেন্টিলেশন-এর সুবিধা থাকা শয্যার মোট সংখ্যা গণনা করা হয়নি। তবে এই ধরণের বেডের যে তীব্র অভাব রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। একটি হিসাব বলছে ভারতে মোট আইসিইউ বেড সংখ্যা ৭০,০০০। ফলে, মে মাসের শেষে যদি প্রতি ১০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১ জনেরও আইসিইউ বেডের প্রয়োজন হয় তাহলে ভারতে আইসিউ-এর বেডগুলিও ফুরিয়ে যাবে। ইতালি-তে যেমন এখন কারা ভেন্টিলেটর-এর সুবিধা পাবেন, আর কাদের দেওয়া হবে না তা ভেবে বের করতে হচ্ছে ডাক্তারদের।

সবচেয়ে সমস্যায় কয়েকটি রাজ্য

ভারতীয় বৈচিত্র যেন রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও বজায় রয়েছে। তুলনায় দরিদ্র রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যন্ত দুর্বল। ২০১৯ সালের জুন মাসের র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী দেখা গেছে যে কিছু রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষোর মান উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশ এবং উচ্চ-আয়ের দেশগুলির সঙ্গে তুলনীয়। কেরলের নবজাতকের মৃত্যুর হার যেমন চিকিৎসা পরিষেবায় অনেক এগিয়ে থাকা ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার মতোই। আবার বেশ কয়েকটি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলির সঙ্গে তুলনীয়। যেমন ওড়িশায়  নবজাতকের মৃত্যুর হার সিয়েরা লিওন-এর কাছাকাছি। বিহারে প্রতি ১ লক্ষ লোকের জন্য মাত্র একটি করে সরকারি হাসপাতালের শয্যা রয়েছে আবার গোয়ায় সংখ্যাটা ২০। ছত্তিশগড়ে সরকারি হাসপাতালগুলিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ৭১ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে। এতদিনেও যক্ষ্মার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের চিকিত্সা সাফল্যের হার মাত্র ৬৪ শতাংশ। মোদী সরকার এই রাজ্যগুলিকে তাদের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করতে সহায়তা করবেন কি না তারও কোনও স্পষ্ট আভাস এখনও পর্যন্ত নেই। কাজেই, সাধু সাবধান।

PREV
click me!

Recommended Stories

News Round Up: কলকাতায় পা রাখছেন মেসি থেকে শুরু করে শুভেন্দুর নিশানায় মমতা, সারাদিনের খবর এক ক্লিকে
জনগণনা ২০২৭: ৩০ লক্ষ কর্মী, ১১,৭১৮ কোটি টাকা বাজেট, বিশ্বের বৃহত্তম সমীক্ষা